সঠিক সমাধান গ্রহণ করুন
বিষয়টি উদাহরণের মাধ্যমে বোঝার চেষ্টা করুন। মনে করুন, আপনি কোনো রকম পূর্বপরিকল্পনা ছাড়া বাংলাদেশের শিক্ষব্যবস্থার উন্নতির জন্য একটি ব্যতিক্রমধর্মী ই-লার্নিং তথা অনলাইন স্কুল খুললেন এবং সিন্ধান্ত নিলেন এখান থেকে বিভিন্নভাবে কিছু আয়ের মাধ্যমে আপনার সংগঠন বা প্রতিষ্ঠান চালাবেন। লক্ষ করুন আপনার এই উদ্যোগ নিঃস্বন্দেহে অসাধারণ কারণ আপনি নিদির্ষ্ট একটি সমস্যার সমাধান করছেন যা আপনাকে প্রতিনিয়ত ভাবায়। কিন্তু আপনি এটাও জানেন সংগঠনকে টিকিয়ে রাখতে আপনাকে অবশ্যই কিছু আয় করতে হবে কেননা লাইফটাইম ফ্রি সার্ভিস তো কেউ দিবেন না।
একটু ভাবুন, এর সমাধান কী হতে পারে? তাহলে চলুন, প্রথমেই আপনাকে দেখতে হবে আপনার এই সমস্যার সমাধান অন্য কেউ করেছেন কিনা? ধরুন ইতিমধ্যে এই সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে, সেক্ষত্রে আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনি ঐ সমাধানের বিপরীতে আরও কত উত্তম কনটেন্ট বা বিষয়বস্তু মানুষকে দিবেন। এক্ষেত্রে আপনার অনু্প্রেরণার জন্য বলে রাখি গুগল প্রতিষ্ঠার আগে ইয়াহু (Yahoo) প্রতিষ্ঠিত হয় কিন্তু আজ গুগল এবং ইয়াহু এর মধ্যে ব্যাপক ব্যবধান!
আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে আপনার এই উত্তম বা ইউনিক কনটেন্টগুলো থেকে কিভাবে এবং কত উপায়ে অর্থ উপার্জন করবেন যা আপনার সংগঠনকে টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করবে। মূলত এই কয়েকটি বিষয়ের উপর নির্ভরযোগ্য উত্তর বা সমাধান থাকলেই কেবল আপনি একজন সফল উদ্যোক্তা হওয়ার পরবর্তী ধাপে যেতে পারবেন।
উপযুক্ত পার্টনার নির্বাচন করুন
একট স্টার্টআপ বা প্রতিষ্ঠানের সফলতার গতি তথা ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য উপযুক্ত বিজনেস পার্টনারের ভূমিকা অপরিসীম। কেননা একজন বিশ্বস্ত পার্টনার আপনার সংগঠনের সকল সদস্যদের পারস্পরিক যোগাযোগ রক্ষার পাশাপাশি কোনো বিষয়ের উপর সিদ্ধান্ত নেওয়া, আপনার ভুলগুলো ধরিয়ে দেওয়ায় বড় ভূমিকা পালন করে। এছাড়া সাংগঠনিক কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে পারস্পরিক যৌক্তিক দ্বন্দ্ব বা তর্ক আপনাকে সাহায্য করবে আউট অব দ্য বক্স (Out Of The Box) বা বৃত্তের বাইরে চিন্তা করতে।
মনে রাখবেন, একটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা পৃথিবী বিখ্যাত মাউন্ট এভারেস্টে আরোহন করার মতো। যেখানে থাকে পদে পদে বিপদ। একটু ভুল হলেই আপনি শেষ। আর এজন্যই আপনার উদ্যোক্তাময় জটিল ও কঠিন পথটুকুকে সহজ করার জন্য উপযুক্ত এবং দক্ষ পার্টনার খুবই প্রয়োজন।
ভারসাম্য রক্ষা করুন
খুব সাধারণভাবে চিন্তা করলে দেখবেন আমরা খুব কম সংখ্যকই আছি যারা পেশাদার এবং ব্যক্তিগত জীবনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি। উদ্যোক্তাদের ক্ষেত্রে এটি আরো প্রকট আকার ধারণ করে। কেননা নানাবিধ কাজের চাপে উদ্যোক্তাদের ব্যক্তিগত জীবন তথা পরিবার সহ সামাজিক কাজগুলোতে খুব একটা সময় দেওয়া হয় না। পরিবারের সাথে দূরত্ব হওয়ায় শুরু হয় নানাবিধ মানসিক চাপ। ফলে গোছালো কাজগুলো হয় এলোমেলো। এজন্য একজন উদ্যোক্তার ব্যক্তিগত এবং ব্যবসায়িক কাজের মধ্যে ভারসাম্য রাখা অতীব জরুরী।
একজন উদ্যোক্তাকে সপ্তাহে কমপক্ষে প্রায় ৮০ ঘন্টা কাজ করার মানসিকতা থাকার পাশাপাশি প্রচুর সংরক্ষণ করার মানসিকতা থাকতে হবে। এছাড়াও নেটওয়ার্কিং দক্ষতা থাকা একজন সফল উদ্যোক্তার সবচেয়ে বড় গুণগুলোর একটি। কেননা এই দক্ষতা আপনাকে নিয়ে যাবে বড় বিনিয়োগকারীদের তথা ইনভেস্টটরদের কাছে। যা আপনার স্টার্টআপকে নির্দিষ্ট লেভেল পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট।
পূর্বে উল্লেখ করেছিলাম, উদ্যোক্তা হিসেবে নিজের নামটি পৃথিবীতে লিখে রাখা কি এত সহজ? আসলে সহজ কিংবা কঠিন এটি এককথায় বলা একটু কঠিন তবে এটি বলা যায়, আপনি কেন উদ্যোক্তা হবেন বা হতে চান বা একটু পরিষ্কার করে বললে কোন নির্দিষ্ট সমস্যাটি আপনাকে প্রতিনিয়ত ভাবায় যা আপনি জাতীয়ভাবে বা বিশ্বব্যাপী সমাধান করতে চান।
মূলত সাধারণ কিছু প্রশ্নের উত্তম এবং উদ্ভাবনী কিছু সমাধান যদি আপনার থাকে, তাহলে আপনি একজন উদ্যোক্তা হিসেবে যাত্রা শুরু করতে পারেন। আর যারা এখনো সমস্যা খুঁজে পাচ্ছেন না তাহলে এখনেই আপনার চারপাশে একটু গভীরভাবে তাকান দেখবেন আপনাকে সমস্যা খুঁজতে হবে না সমস্যা উল্টো আপনাকে খুঁজবে যদি আপনি মানসিক দিক থেকে সুস্থ থাকেন।
সবশেষে একটি মজার কথা বলে শেষ করি। মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসকে বলা হয়েছিল, আপনাকে সুপার পাওয়ার একটি ক্ষমতা দেওয়া হলে আপনি কোন জিনিসটা চাইবেন। তিনি বলেছিলেন — “আমি তাড়াতাড়ি বই পড়ার ক্ষমতা চাই।” তাই একজন সফল উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য বইকে করুন সবসময়ের সঙ্গী।