প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে যোগাযোগ সহজ হয়েছে। যোগাযোগ সহজ হওয়ার কারণে, মানুষের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। পরিবর্তন হচ্ছে মানুষের চাহিদা, আচার আচরণ, রীতি নীতি। মানুষের এই ক্রমবর্ধমান চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ব্যবসায়ীদের পরিবর্তন করতে হচ্ছে পণ্য থেকে শুরু করে পণ্যের বাজারজাত করনের ধরন।
Source: garnish.com.au
ব্যবসায়ের সফলতা নির্ভর করে, পণ্য উৎপাদন থেকে পণ্যের বাজারজাত করনের সঙ্গে যুক্ত প্রতিটি বিষয়ের সফল বাস্তবায়নের ওপর। দীর্ঘ মেয়াদী ক্রেতা পাওয়ার জন্য, মানসম্পন্ন পণ্য জরুরী। আবার গুণগত মান সম্পন্ন পণ্যটি ক্রেতার কাছে পৌঁছে দেওয়াও জরুরী। এজন্য প্রয়োজন, একটি সঠিক বাজারজাত করন ব্যবস্থা।
Source: Lynda.com
বাজারজাতকরন বা মার্কেটিং ব্যবস্থার মধ্য রয়েছে, পণ্যের বিজ্ঞাপন, ক্রেতার নিকট পণ্য সরবরাহের মাধ্যম এবং ক্রেতার সঙ্গে সম্পর্ক। এই বিষগুলোর ওপর নির্ভর করে একটি ব্যবসায়ের সফলতা। কারণ, এই বিষয়গুলোর পূর্ণ বাস্তবায়ন ছাড়া সঠিক বাজারজাতকরন ব্যবস্থা গড়ে উঠতে পারে না। আর বাজারজাতকরন হচ্ছে, একটি ব্যবসায়ের মেরুদণ্ড। বাজারজাতকরন ছাড়া একটি ব্যবসায় মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে না। তাই ব্যবসায় শুরু করার পূর্বেই বাজারজাতকরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। এখন প্রতিটি ব্যবসায়ের বাজারজাতকরন হয়ে উঠেছে অনলাইন নির্ভর। অনলাইন ভিত্তিক বাজারজাত করনের পরিকল্পনায়, যে সকল বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকা উচিৎ, সেগুলো আজকে আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো।
দীর্ঘ মেয়াদী সাফল্যের পরিকল্পনা
আমরা অধিকাংশ মানুষ মনে করি, একদিন একটি সুইচ পাবো যেটি চাপার সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের ভাগ্য বদলে যাবে। বিখ্যাত বডি বিল্ডার আর্নল্ড শোয়ার্জনেগার বলেছেন ‘সাফল্যের কোনো শর্টকাট নেই। সাফল্যের জন্য চাই সঠিক পরিকল্পনার বাস্তবায়ন’।
Source: lynda.com
পণ্য বাজারজাত করনের জন্য প্রয়োজন, একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা। এমন একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করুন, যা পৌঁছে দেবে একটি শক্ত অবস্থানে। যেমন: অনলাইনে পণ্যের বাজারজাত করনের জন্য এসইও। এটি আপনাকে খুব দ্রুত ফল দেবে না। কিন্তু এসইও আপনাকে দেবে, দীর্ঘমেয়াদী ক্রমবর্ধমান ক্রেতা। যা আপনার ব্যবসায়ে একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলবে। এরকম আরও অনেক কৌশল রয়েছে, যেগুলো গ্রহণের মাধ্যমে গড়ে তুলতে পারেন একটি সঠিক বাজারজাতকরন ব্যবস্থা।
গ্রাহক যুক্ত করন
আপনি আপনার সাইটে গ্রাহক আকৃষ্ট করতে পেরেছেন। এরপর সবচেয়ে জটিল কাজ হচ্ছে, এই গ্রাহকদের সাইটে সাইন আপ করানো। গ্রাহকের সাথে যোগাযোগের জন্য সাইন আপ করানো খুবই জরুরী। ধরুন, আপনি মাছ ধরতে চান। এজন্য আপনি ফাঁদ পেতেছেন। মাছগুলো ফাঁদের মুখে এসে স্থির হয়ে আছে। এখন আপনি যদি মাছগুলোকে ফাঁদের মধ্যে প্রবেশ না করাতে পারেন, তাহলে আপনি মাছ ধরতে পারবেন না।
Source: lynda.com
তেমনি এসইও করে আপনার সাইটে গ্রাহক আনতে পেরেছে। এবার গ্রাহকদের সাইন আপের মাধ্যমে আপনার সাইটে যুক্ত রাখতে হবে। সাইন আপের মাধ্যমে গ্রাহকের সাথে যোগাযোগের মাধ্যম এবং প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়া সম্ভব হবে। যোগাযোগের এই মাধ্যম ব্যবহার করে আপনার সকল পণ্যের প্রোমোশন সহ সকল তথ্য গ্রাহকের সঙ্গে শেয়ার করতে পারবেন।
আপনার সাইটে গ্রাহকদের যুক্ত করানোর জন্য কিছু সহায়ক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন। যেমন: ওয়েবনারস নামে একটি টুলস রয়েছে। এটি আপনার সাইটে গ্রাহক যুক্ত করনে সহায়ক হতে পারে।
নিষ্ক্রিয় গ্রাহকদের সক্রিয়করন
আপনি আপনার সাইটে গ্রাহক আনতে পেরেছেন। গ্রাহকদের সাইন আপের মাধ্যমে আপনার সাইটে যুক্ত করেছেন। সাবাস, সবচেয়ে কঠিন কাজগুলো আপনি সম্পন্ন করে ফেলেছেন। এখন যে কাজটি করতে হবে, এটি খুবই সহজ একটি কাজ।
Source: lynda.com
আপনার সাইটে প্রতিদিন অনেক গ্রাহক আসে এবং যুক্ত হয়। এদের মাঝে অনেকে নিয়মিত সাইটে প্রবেশ করে আবার অনেকে অনিয়মিত। এখন যারা অনিয়মিত গ্রাহক এদের আবারও সাইটে ফিরিয়ে আনতে হবে। এজন্য আপনাকে কিছু এ্যানালাইটিক্যাল টুলস ব্যবহার করতে হবে। এই টুলসগুলো অনিয়মিত গ্রাহকদের চিহ্নিত করবে। এই চিহ্নিত অনিয়মিত গ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে তাদের চাহিদা, তাদের সমস্যার কথা বুঝতে পারবে। পরবর্তীতে আপনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন।
গ্রাহক সম্পর্ক ব্যবস্থাপনা সফটওয়্যার ব্যবহার
গ্রাহকের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক গড়ে তুলতে অতুলনীয় একটি মাধ্যম হচ্ছে গ্রাহক সম্পর্ক ব্যবস্থাপনা সফটওয়্যার। এই সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে গ্রাহকের সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন। গ্রাহককে ইমেইল করতে পারবেন। ইমেইল টেম্পলেটের মাধ্যমে পণ্যের সকল তথ্য সরবরাহ করতে পারবেন। গ্রাহকের চাহিদা সম্পর্কে জানতে পারবেন। গ্রাহকের সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে আস্থা তৈরি করতে সক্ষম হবেন।
Source: businesswire.com
এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে গ্রাহক সম্পর্ক বিভাগে কর্মরত কর্মীদের দক্ষতা সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারবেন। তাই এই সফটওয়্যারটি ব্যবহারের মাধ্যমে বাজারজাত করণ ব্যবস্থা নিয়ে যেতে পারেন এক অন্য উচ্চতায়।
লভ্যাংশ নির্ণায়ক টুলস ব্যবহার
একটি ব্যবসায়ের মূল চালিকা শক্তি হচ্ছে অর্থ। কারণ, অর্থের মাধ্যমেই পরিচালিত হয় ব্যবসায়ের সকল কর্মকাণ্ড। পণ্যের উৎপাদন থেকে পণ্যে বিপণন সবই চালিত হয় অর্থের মাধ্যমে। এই অর্থ জোগানের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে লভ্যাংশ। কিন্তু ব্যবসায়ের লভ্যাংশ নির্ণয় একটি জটিল বিষয়। কারণ, অতিরিক্ত লভ্যাংশ নির্ধারণের ফলে ক্রেতা চাহিদা কমে যায়। আবার খুব কম লভ্যাংশ নির্ধারণ করলে ব্যবসায় পরিচালনা হুমকির মুখে পড়ে! এজন্য খুব সূক্ষ্মতার সঙ্গে পণ্যের লভ্যাংশ নির্ধারণ করতে হবে।
Source: insurancewholesaler.net
আবার যারা অনলাইনে মার্কেটিং করে থাকেন। তাদের সাইটে ট্রাফিক এবং পণ্য বিক্রয়ের ওপর তাদের লভ্যাংশ নির্ভর করে। এক্ষেত্রে আপনারা কিছু রেভ্যুনিউ ট্র্যাকার টুলস ব্যবহার করতে পারেন। রেভ্যুনিউ টুলসগুলো আপনাকে কিছু বিশ্লেষণধর্মী তথ্য সরবরাহ করবে। এই তথ্য দ্বারা আপনি আপনার লভ্যাংশ নিরূপণ করতে পারবেন।
আজকাল অনলাইনে মার্কেটিং খাত বিশাল আকার ধারণ করে চলেছে। এখানে প্রতিদিন শত শত নতুন প্রযুক্তি যুক্ত হয়। এখন পর্যন্ত বাজারে প্রায় চার হাজার মার্কেটিং সল্যুশন রয়েছে। কিন্তু এগুলোর মাঝে অধিকাংশই মানহীন। তাই ভালো মানের টুলস খুঁজে বের করুন। প্রতারকের ফাঁদের পা দেবেন না। এক্ষেত্রে অভিজ্ঞদের সহায়তা নিতে পারেন। বাজার যাচাই করুন। এরপর প্রয়োজনীয় টুলস কিনুন। সততার সঙ্গে পরিশ্রম করুন। সামনের দিকে এগিয়ে চলুন। সাফল্য আসবেই।
Feature Image Source: garnish.com.au