হুটহাট নতুন মোবাইল, ল্যাপটপ অথবা ট্যাবলেটই হোক, বাজারে কিনতে গেলে আমাদের অবস্থা হয় করুন। কোন পণ্যের থেকে কোনটা ভালো, কোয়ালিটি কোন কোম্পানি সবথেকে ভালো দেয় সেটা নিয়ে আমাদের মাথাব্যথার শেষ নেই। শখের জিনিসগুলো কিনতে টাকা খরচের ব্যাপারে আমরা একহু বেশিই উদার বটে। তবে সেই পণ্য যখন মনমতো না হয় তখন আফসোসের সীমা থাকেনা। তাই আমাদের এই ফিচারটি হচ্ছে বাজারের সেরা পণ্যগুলো নিয়ে। যেসব পণ্য আপনার চাহিদা মিটাতে সক্ষম আর দামে একটু বেশি হলেও সাধ্যের বাহিরে নয়।
১. সেরা মোবাইল: স্যামসাং গ্যালাক্সি এস ৯ প্লাস
মোবাইলের ক্ষেত্রে চাহিদা আর গুনমান নিয়ে আমরা বেশিই সচেতন। অনেকে এ্যাপেলের পণ্য পছন্দ করলেও বর্তমানে অধিকাংশের কাছে স্যামসাংয়ের এই মডেলটি সেরা।
৬.২ ইঞ্চি আর ১৪৪০ x ২৯৬০ রেজ্যুলেশনের ডিসপ্লের এই মোবাইলটির ওজন মাত্র ১৮৯ গ্রাম। ব্যবহার করা হয়েছে স্নাপড্রাগন ৮৪৫ মডেলের প্রসেসর, ছয় জিবি র্যাম আর ১২৮ জিবি স্টোরেজ। সাড়ে তিনহাজার মিলি এম্পায়ার ব্যাটারি ব্যবহার করার পাশাপাশি রয়েছে ১২ মেগাপিক্সেল ডুয়েল ক্যামেরা। যেটা ১.৫ ফোকাস লেন্থের পাশাপাশি অসাধারণ লো লাইট ফটোগ্রাফি করতে পারে।
২. সেরা ল্যাপটপ: হুয়াওয়ে মেটবুক এক্স প্রো
৮ম জেনারেশনের কোর আই সেভেন প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে এই ল্যাপটপে। রয়েছে ইনটেলের ইউএইচডি ৬২০ গ্রাফিক্স এবং এনভিডিয়ার জিফোর্স এমএক্স ১৫০ মডেলের ২ জিবি ডিডিআর ফাইভ গ্রাফিক্স কার্ড।
১৬ জিবি র্যামের এই কম্পিউটারে স্টোরেজ রয়েছে ৫১২ জিবি এসএসডি। আর ডিসপ্লে নিয়েই তো কোন কথাই নেই! ৩০০০ x ২০৮০ রেজ্যুলেশন ১৩.৯ ইঞ্চির অসাধারণ ডিসপ্লে পাবেন এই ল্যাপটপে। দামে একটু বেশি হলেও এই দামে এই ধরনের কনফিগারেশনের ল্যাপটপ আপনি কোথাও পাবেন না।
৩. গেম কন্সোল: সনি পিএস ৪ প্রো
গেম খেলতে আমরা কে না পছন্দ করি! আর সেই গেম কন্সোল যদি ভালো না হয় তাহলে আনন্দটাই মাটি। আপনি যদি সেরা কন্সোল খুঁজে থাকেন তাহলে নিশ্চিন্তে সনির পিএস ফোর প্রো কিনতে পারেন। এএমডি রেডনের ৪.২ টিফলপস গ্রাফিক্স কার্ড ব্যবহার করা এই কন্সোলে আপনি পাবেন আট জিবি জিডিডিআর ফাইভ আর ১ জিবি ডিডিআর ৩ র্যাম।
ক্যামেরা আর অপটিক্যাল অডিও সিস্টেম ছাড়াও এখানে রয়েছে এইচডিএমআই ২.০এ পোর্ট, ডুয়েল ব্যান্ড ওয়াইফাই, ব্লুটুথ, ইথারনেট এবং ১ টেরাবাইট স্টোরেজ। এই গেম কন্সোলটি ৩৮৪০ x ২১৬০ রেজ্যুলেশনের গেম প্লে করতে পারে। এছাড়া সর্বোচ্চ চারজনের গেম কন্ট্রোলার ব্যবহার করার ব্যবস্থা রয়েছে।
৪. সেরা ক্যামেরা: নিকন ডি ৮৫০
ডিএসএলআরের জগতে বলা চলে রাজত্ব করে চলছে নিকনের এই ক্যামেরাটি। ৪৫.৪ মেগাপিক্সেল এই ক্যামেরায় ব্যবহার করা হয়েছে সি-মস ফুল ফ্রেম সেন্সর।
এফ মাউন্ট লেন্সের পাশাপাশি এখানে রয়েছে ২৩ লাখ ৫৯ হাজার ডটের ৩.২ ইঞ্চি টার্চস্কিন ডিসপ্লে। এর অসাধারণ ছবির কোয়ালিটির জন্য প্রফেশনাল থেকে ইন্টারমিডিয়েট ফটোগ্রাফারদের এই ক্যামেরা বিকল্প নেই বললেই চলে।
৫. সেরা ট্যাবলেট: আইপ্যাড ২০১৭
ডিসপ্লে কোয়ালিটির জন্য ট্যাবলেটের জগতে এখনো রাজত্ব ধরে রেখেছে এ্যাপেল কোম্পানির তৈরি এই আইপ্যাড। ১৫৩৬ x ২০৪৮ পিক্সেলের ৯.৭ ইঞ্চির এই ট্যাবলেটটি আপনি হাতে নিলেই অন্যরকমের একটা অনুভূতি পাবেন। র্যাম দুই জিবি হলেও আপনি এর ১২৮ জিবি স্টোরেজ উপভোগ করতে পারবেন।
ক্যামেরা পিছনে পাবেন ৮ মেগাপিক্সেল আর সামনে ১.২ মেগাপিক্সেল। তবে এর সবথেকে অসাধারণ হচ্ছে এর ব্যাটারীর ধারন ক্ষমতা। ৮৮০০ মিলি এম্পায়ারের ব্যাটারী একে সেরা ট্যাবলেটের কাতারে নিয়ে আসতে অন্যতম ভূমিকা রেখেছে।
৬. সেরা স্মার্ট ওয়াচ: এ্যাপেল ওয়াচ ৩
ট্যাবলেট ছাড়া ঘড়িতেও এখনো সেরাদের কাতারে নাম রেখেছে এ্যাপেল কোম্পানি। দেড় ইঞ্চির থেকে সামান্য বড় ওএলইডি ডিসপ্লে আর এস ২ ডুয়েল কোর প্রসেসর এই স্মাট ওয়াচে ব্যবহার করা হয়েছে।
সর্বোচ্চ ১৬ জিবি র্যাম এই ঘড়িতে আপনি পাবেন। টানা ১৮ ঘন্টা সার্ভিস দিতে সক্ষম এই ওয়াটারপ্রুফ ঘড়িতে ব্যবহার করা হয়েছে ওয়্যারলেস চার্জিং পদ্ধতি। এছাড়া ওয়াইফাই, ব্লুটুথ আর জিপিএস তো আছেই।
৭. সেরা ভিআর হেডসেট: এইচটিসি ভাইভ
বিশ্বের অসংখ্য কোম্পানির ভিআর হেডসেটের মধ্যে সেরাদের যুদ্ধে এগিয়ে রয়েছে এইচটিসির ভাইভ। প্রায় আধা কেজি ওজনের এই ভিআর হেডসেটির রয়েছে স্পেশাল কন্ট্রোলার।
ব্যবহার করা হয়েছে ২১৬০ x ১২০০ রেজ্যুলেশন ডিসপ্লে যেটার ১১০ ডিগ্রী কোন পর্যন্ত দেখা যায়।
৮. সেরা হেডসেট: স্যানিইজার মোমেন্টাম ওয়্যারলেস হেডসেট
সেরা হেডফোন বাছাই করা একটু দুঃসাধ্য কাজ বটে। কারন একেক জনের চাহিদা একেকরকম। কেউ জিমে গান শুনতে পছন্দ করে কেউবা মর্নিং ওয়াকে। সবদিক বিবেচনা করে সেরাদের কাতারে শুরুতে রাখা যায় স্যানিইজার মোমেন্টাম ওয়্যারলেস হেডসেট। কারন এই হেডসেটটি ১৬ থেকে ২২ হাজার হার্জে অপারেশন করতে সক্ষম।
আর টানা ২৫ ঘন্টার বেশি এই সার্ভিস দিতে পারে। এছাড়া নয়েজ ক্যান্সেলেশন ডিভাইস হিসাবেও এর কার্যকারিতা অসাধারণ। মনমাতানো অসাধারণ শব্দ, সেরা নয়েজ ক্যান্সেলেটর হিসাবে এই ওয়্যারলেস হেডসেটকে কেউ টেক্কা দিতে পারবেনা।
৯. সেরা ফিটনেস ট্রাকার: মুভ নাউ
বাজারে এর থেকেও কম মূল্যে আরো অনেক ফিটনেস ট্রাকার থাকতেও এটা কেন সেরা সেই বিষয়ে যে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারে। কারন এই ডিভাইসে নেই কোন ডিসপ্লে অথবা হার্ট রেট ট্রাকার। তারপরও কেন সেরা ?
এন্ড্রয়েড এবং আইওএস উভয় ওপারেটিং সিস্টেমের সাথে এই ডিভাইস কাজ করে। ডায়েট কন্ট্রোল, ঘুম, হাটাহাটির ট্রাকিংয়ের পাশাপাশি রয়েছে জিপিএ সিস্টেম। সবথেকে বড় বিষয় হচ্ছে, একবার ফুল চার্জ দেওয়া হলে এই ডিভাইসটি টানা ছয়মাস সার্ভিস দেয়। জ্বি ঠিকই পড়ছেন, ছয় মাস। একবার চার্জ দিয়ে ছয় মাসের জন্য ভুলে যেতে কেই বা না পছন্দ করে!