২০২০ সালে শুধুমাত্র ব্যবসা ক্ষেত্রেই নয় বরঞ্চ টেকনোলজি খাতেও ক্যারিয়ার গড়ার অনেক সুযোগ থাকবে। আইওটি, ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, ডেটা সায়েন্সের মতো বিষয়গুলোতে ক্যারিয়ার গড়ার জন্য ২০২০ খুবই উপযুক্ত সময়কাল। শুধু তাই নয়, টেকনোলজি ও ব্যবসা খাতের পাশাপাশি অন্যান্য খাতেও ক্যারিয়ার গড়ার অনেক সুযোগ থাকবে। চলুন তাহলে জেনে নিই, এমন কিছু ট্রেন্ডিং খাত সম্পর্কে যেগুলোতে ২০২০ সালে ক্যারিয়ার গড়ার যথেষ্ট সুযোগ থাকবে। দুই পর্বের এই আর্টিকেলের আজকে হচ্ছে দ্বিতীয় পর্ব। প্রথম পর্ব পড়ুন এখান থেকে।
Source: youtube.com
সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার
একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার মূলত যেকোনো কোম্পানির জন্য সফটওয়্যার ডিজাইন, ডেভেলপ ও ম্যানেজমেন্টের কাজ করে থাকেন। একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার জন্য আপনাকে যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, প্রোগ্রামিং, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং, হার্ডওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং অথবা কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের উপর ব্যাচেলরস ডিগ্রি অথবা মাস্টার্স ডিগ্রি গ্রহণ করতে হবে। একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারকে যেসব কাজ করতে হয়, সেগুলো হচ্ছে,
১. বিভিন্ন সিস্টেম, প্রোগ্রাম, হার্ডও্য়্যার এবং নেটওয়ার্কের অ্যাপ তৈরি করা
২. সিস্টেম ও নেটওয়ার্কের অনধিকার প্রবেশ, মডিফিকেশন ও ডেস্ট্রাকশন ফেজ থেকে অ্যাপকে রক্ষা করা।
৩. বিভিন্ন ধরণের সিকিউরিটি অ্যাপ্লিকেশন ও টুলসকে (যেমন, ফায়ারওয়াল, অ্যান্টিভাইরাস, প্যাচ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ইত্যাদি) সাপোর্ট ও কনফিগার করা।
৪. বিভিন্ন সফটওয়্যারের কন্ট্রোল স্ট্রাকচার, রিসোর্স ও এক্সেস প্রিভিলিজেস রক্ষা করা।
৫. সিস্টেম ও অ্যাপের ভালনারেবিলিটি, রিস্ক অ্যানালাইসিস ও সিকিউরিটি অ্যাসেসমেন্ট পরীক্ষা করা।
৬. বিভিন্ন সফটওয়্যার, সিস্টেম ও নেটওয়ার্কের অ্যাবনরমালিটি ও ভায়োলেশনের রিপোর্ট তৈরি করা।
৭. সফটওয়্যারের সিকিউরিটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের রুটিন মনিটরিং করা।
৮. বিজনেস কন্টিনিউটি ও ডিজেস্টার। রিকোভারি প্রোটোকল ডেভেলপ ও আপডেট করা।
৯. বিভিন্ন সিকিউরিটি কনফারেন্স ও ট্রেইনিংয়ে সিকিউরিটি প্রোটোকল, প্রসিডিউর ও নিরাপত্তা সচেতনতা সম্পর্কে আলোচনা করা
১০. অপারেশনাল সিকিউরিটি ও সিকিউরিটি থ্রেডের জন্য সিকিউরিটি অডিট ডিজাইন ও পরিচালনা করা।
১১. বিভিন্ন কম্পিউটার সিকিউরিটি অ্যাটাকের জন্য প্রস্তুত থাকা ও অ্যাটাকের পোস্ট অ্যানালাইসিস করা।
১২. সিকিউরিটি আপগ্রেড সম্পর্কে রিসার্চ করা
১৩. বিভিন্ন সিস্টেম স্পেশালাইজড সিকিউরিটি সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার ডেভেলপ করা
Source: alis.alberta.ca
ওয়েবসাইট ডেভেলপার
একজন ওয়েবসাইট ডেভেলপার মূলত যেকোনো কোম্পানির জন্য ওয়েবসাইটের ইন্টারফস, ডিজাইন, ডেভেলপ, মনিটরিং এবং ম্যানেজমেন্টের কাজ করে থাকেন। একজন ওয়েবসাইট ডেভেলপার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার জন্য আপনাকে যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, প্রোগ্রামিং, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং, হার্ডওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং অথবা কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের উপর ব্যাচেলরস ডিগ্রি অথবা মাস্টার্স ডিগ্রি গ্রহণ করতে হবে। একজন ওয়েবসাইট ডেভেলপার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে, আপনাকে যে সকল বিষয়ে পারদর্শী হতে হবে তা হচ্ছে,
১. টেকনিক্যাল ও নন-টেকনিক্যাল বিষয় সম্পর্কে অভিজ্ঞ হতে হবে।
২. আইটির উপর বেশ ভালো দক্ষতা থাকতে হবে।
৩. মাইক্রোসফট অফিসসহ অন্যান্য অফিস অ্যাপ্লিকেশনের উপর যথেষ্ট অভিজ্ঞ হতে হবে।
৪. বিভিন্ন ধরণের সফটওয়্যার ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ্লিকেশন ও হার্ডওয়্যারের উপর দক্ষ হতে হবে।
৫. কম্পিউটার ও আইটি ইথিকসের উপর পারদর্শী হতে হবে।
৬. ক্রিয়েটিভ থিংকিং করার দক্ষতা থাকতে থাকবে।
৭. নিত্যনতুন টেকনোলজির সাথে আপডেটেড থাকতে হবে।
৮. যেকোনো প্রোগ্রামিং ভাষার সাথে সম্পৃক্ত অ্যালগরিদম ও ফ্লো চার্ট সম্পর্কে জানতে হবে।
৯. কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের এম্বেডেড সিস্টেমস সম্পর্কে অভিজ্ঞ হতে হবে।
১০. ডিএলপি, অ্যান্টিভাইরাস ও অ্যান্টি ম্যালওয়্যারের উপর দক্ষ হতে হবে।
১১. ফায়ারওয়াল, ইনট্রুশাল ডিটেকশন সিস্টেম ও প্রিভেন্টিং প্রোটোকল সম্পর্কে জানতে হবে।
১২. সিকিউর কোডিং, ইথিক্যাল হ্যাকিং ও থ্রেট মডেলিং সম্পর্কে সম্পূর্নভাবে দক্ষ হতে হবে।
১৩. উইন্ডোজ, ইউনিক্স, লিনাক্স (বিভিন্ন ডিস্ট্রো) এবং ম্যাক অপারেটিং সিস্টেমের উপর গভীর দক্ষতা থাকতে হবে।
১৪. পিএইচপি, পাইথন, জাভাস্ক্রিপ্ট, ওয়েব প্রোগ্রামিং ভাষা (যেমন, এইচটিএমএল, সিএসএস ইত্যাদি), স্ক্রিপ্টিং ভাষা ও শেল প্রোগ্রামিং ভাষায় গভীর দক্ষতা থাকতে হবে।
Source: analyticsindiamag.co
মার্কেট ডেভেলপমেন্ট এন্ড ইনসাইটস অ্যানালিস্ট
ব্যবসা খাতে একজন মার্কেট ডেভেলপমেন্ট এন্ড ইনসাইটস অ্যানালিস্ট মূলত একটি কোম্পানির মার্কেটিং বিভাগের দায়িত্বে থাকেন। একজন মার্কেট ডেভেলপমেন্ট এন্ড ইনসাইটস অ্যানালিস্ট হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে আপনাকে যেসকল বিষয়গুলোতে দক্ষ হতে হবে, সেগুলো হচ্ছে,
১. ট্র্যাফিক এনগেজমেন্ট ও ট্যাফিক জেনারেশন সম্পর্কে পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
২. মার্কেট ডেটা অ্যানালাইসিস, তথ্য ও ইনসাইটসের উপর গবেষণা করার পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
৩. কম্পিটেটিভ, প্রায়র ও অপরচুনিটি অ্যানালাইসিস সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে।
৪. মার্কেট ডিজাইন, স্ট্রাকচার ও প্র্যাকটিক্যাল সিচুয়েশন হ্যান্ডলিং করায় দক্ষ হতে হবে।
৫. প্রব্লেম সল্ভিং ও অ্যানালিটিক্যাল থিংকিং করার ক্ষমতা থাকতে হবে।
৬. লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমের সাথে পরিচিতি থাকতে হবে।
৭. বেসিক কম্পিউটার দক্ষতা (যেমন, মাইক্রোসফট অফিস স্যুইট, অ্যাডোবি সফটওয়্যার ইত্যাদি) থাকতে হবে।
৮. মার্কেট ডেভেলপমেন্ট ও মার্কেট রিসার্চের জন্য যেসব সফটওয়্যার ব্যবহৃত হয়, সেগুলো সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান থাকতে হবে।
Source: questionpro.co
বিজনেস অ্যানালিস্ট
স্বাস্থ্য খাতে একজন বিজনেস অ্যানালিস্ট মূলত বিভিন্ন ক্লিনিক্যাল সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার, ক্রয় ও বিক্রয়ে সাহায্য করে থাকেন। তিনি স্বাস্থ্য খাতের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ডিজিটাল মার্কেটিং ও অ্যাডভার্টাইজিং স্ট্র্যাটেজি ও প্ল্যানিং করেও থাকেন। একজন বিজনেস অ্যানালিস্ট হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার জন্য যেসকল দক্ষতা থাকতে হবে,
১. বিভিন্ন ক্লিনিক্যাল ডিপার্টমেন্ট ও এর কাজ সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকতে হবে।
২. এসইও, এসইএম, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, কনটেন্ট মার্কেটিং এবং বিটুবি মার্কেটিং সম্পর্কে জানতে হবে।
৩. অন্যান্য ক্লিনিক্যাল প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ইটুই টেস্ট করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
৪. বিভিন্ন অপারেটিং সিস্টেমের মার্কেটিং ও অ্যাডভার্টাইজিং অ্যাপ্লিকেশন এবং ক্লিনিক্যাল অ্যাপ্লিকেশন সম্পর্কে দক্ষ হতে হবে।
৫. বিভিন্ন ধরণের ক্লিনিক্যাল হার্ডওয়্যারের ব্যবহার ও এর মার্কেটিং ক্যাটাগরি সম্পর্কে জানতে হবে।
৬. বিজনেস অ্যানালাইসিস ও রিসার্চের জন্য আর প্রোগ্রামিং ভাষার উপর দক্ষ হতে হবে।
৭. বিজনেস কনফিগারেশন ও এর ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কে অভিজ্ঞ হতে হবে।
৮. বিজনেস সিস্টেম প্রসেসের ডিজাইন, ডকুমেন্টেশন ও মেইন্টেইন করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
Featured Image: umanitoba.ca