প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়াশোনা করে কিংবা প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্টের উপর সার্টিফিকেট অর্জন করে অনেকেই এই খাতে ক্যারিয়ার গড়তে চায়। কিন্তু বেশিরভাগ সময়েই শিক্ষার্থীরা এই খাতে ক্যারিয়ার গড়তে ভয় পায়। কারণ অনেকেরই ধারণা এই খাতে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ অনেক কম। আসলে প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট খাতে ক্যারিয়ার গড়ার অনেক সুযোগ রয়েছে। প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্টের সেরা কিছু ক্যারিয়ার ট্রেন্ড নিয়েই আজকের এই আর্টিকেল।
Source: youthincmag.com
প্রজেক্ট রিসার্চার
একজন প্রজেক্ট রিসার্চার মূলত যেকোনো কোম্পানির মার্কেটিং, ম্যানেজমেন্ট ও সেলসের উপর গবেষণা করে থাকেন। একজন প্রজেক্ট রিসার্চার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে, আপনার যে সকল দক্ষতা থাকা লাগবে,
১. অরগানাইজেশনাল অপারেশন, প্র্যাকটিক্যাল অপারেশন, ফিল্ড অপারেশন এবং ম্যানেজমেন্ট অপারেশনের উপর কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
২. মার্কেট রিসার্চ, মার্কেট অ্যানালাইসিস, ম্যানেজমেন্ট প্ল্যানিং ও রিসার্চিংয়ের উপর যথেষ্ট দক্ষতা থাকতে হবে।
৩. বিভিন্ন অরগানাইজেশনাল সিস্টেম থেকে ডেটা সংগ্রহ ও সংরক্ষন করার দক্ষতা থাকতে হবে।
৪. বিভিন্ন প্রজেক্ট মডেল ও সিস্টেম মডেল রিসার্চ করে ডেটা অ্যানালাইসিস ও ডেভেলপ করার দক্ষতা থাকতে হবে।
৫. স্প্রেডশিট, ডেটাবেজ ও সফটওয়্যার প্রোগ্রামিংয়ের উপর দক্ষতা থাকতে হবে।
৬. নিউমেরিক্যাল ও আলফা নিউমেরিক্যাল প্রোগ্রামিংয়ে দক্ষ হতে হবে।
৭. থ্রেডেড সিমুলেশন, নেটওয়ার্ক অ্যানালাইসিস, ডিসিশন অ্যানালাইসিস, মাল্টি ক্রাইটেরিয়া অ্যানালাইসিস, সিনেরিও অ্যানালাইসিসের উপর যথেষ্ট জ্ঞান থাকতে হবে।
৮. সফট সিস্টেম মডেলিং, অপটিমাইজেশন, গেইম ও কোয়ারি থিওরি ডেভেলপমেন্টের উপর যথেষ্ট দক্ষ হতে হবে।
Source: liquidplanner.com
মার্কেট ডেভেলপমেন্ট এন্ড ইনসাইটস অ্যানালিস্ট
একজন মার্কেট ডেভেলপমেন্ট এন্ড ইনসাইটস অ্যানালিস্ট মূলত একটি কোম্পানির মার্কেটিং বিভাগের দায়িত্বে থাকেন। একজন মার্কেট ডেভেলপমেন্ট এন্ড ইনসাইটস অ্যানালিস্ট হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে আপনাকে যেসকল বিষয়গুলোতে দক্ষ হতে হবে, সেগুলো হচ্ছে,
১. ট্র্যাফিক এনগেজমেন্ট ও ট্যাফিক জেনারেশন সম্পর্কে পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
২. মার্কেট ডেটা অ্যানালাইসিস, তথ্য ও ইনসাইটসের উপর গবেষণা করার পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
৩. কম্পিটেটিভ, প্রায়র ও অপরচুনিটি অ্যানালাইসিস সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে।
৪. মার্কেট ডিজাইন, স্ট্রাকচার ও প্র্যাকটিক্যাল সিচুয়েশন হ্যান্ডলিং করায় দক্ষ হতে হবে।
৫. প্রব্লেম সল্ভিং ও অ্যানালিটিক্যাল থিংকিং করার ক্ষমতা থাকতে হবে।
৬. লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমের সাথে পরিচিতি থাকতে হবে।
৭. বেসিক কম্পিউটার দক্ষতা (যেমন, মাইক্রোসফট অফিস স্যুইট, অ্যাডোবি সফটওয়্যার ইত্যাদি) থাকতে হবে।
৮. মার্কেট ডেভেলপমেন্ট ও মার্কেট রিসার্চের জন্য যেসব সফটওয়্যার ব্যবহৃত হয়, সেগুলো সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান থাকতে হবে।
Source: bhabuelectricals.com
বিজনেস অ্যানালিস্ট
স্বাস্থ্য খাতে একজন বিজনেস অ্যানালিস্ট মূলত বিভিন্ন ক্লিনিক্যাল সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার, ক্রয় ও বিক্রয়ে সাহায্য করে থাকেন। তিনি স্বাস্থ্য খাতের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ডিজিটাল মার্কেটিং ও অ্যাডভার্টাইজিং স্ট্র্যাটেজি ও প্ল্যানিং করেও থাকেন। একজন বিজনেস অ্যানালিস্ট হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার জন্য যেসকল দক্ষতা থাকতে হবে,
১. বিভিন্ন ক্লিনিক্যাল ডিপার্টমেন্ট ও এর কাজ সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকতে হবে।
২. এসইও, এসইএম, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, কনটেন্ট মার্কেটিং এবং বিটুবি মার্কেটিং সম্পর্কে জানতে হবে।
৩. অন্যান্য ক্লিনিক্যাল প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ইটুই টেস্ট করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
৪. বিভিন্ন অপারেটিং সিস্টেমের মার্কেটিং ও অ্যাডভার্টাইজিং অ্যাপ্লিকেশন এবং ক্লিনিক্যাল অ্যাপ্লিকেশন সম্পর্কে দক্ষ হতে হবে।
৫. বিভিন্ন ধরণের ক্লিনিক্যাল হার্ডওয়্যারের ব্যবহার ও এর মার্কেটিং ক্যাটাগরি সম্পর্কে জানতে হবে।
৬. বিজনেস অ্যানালাইসিস ও রিসার্চের জন্য আর প্রোগ্রামিং ভাষার উপর দক্ষ হতে হবে।
৭. বিজনেস কনফিগারেশন ও এর ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কে অভিজ্ঞ হতে হবে।
৮. বিজনেস সিস্টেম প্রসেসের ডিজাইন, ডকুমেন্টেশন ও মেইন্টেইন করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
Source: 123rf.com
আইটি অডিটর
একজন আইটি অডিটর মূলত কম্পিউটার বিভাগে সকল ধরনের টেকনোলজি দ্বারা ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে সম্পর্ক বৃদ্ধির কাজ করে থাকেন। একজন আইটি অডিটর হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে আপনার যেসকল দক্ষতা থাকতে হবে সেগুলো হচ্ছে,
১. আইটি প্রফেশনাল এনভায়রনমেন্টে কাজ করার পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
২. আইটি অ্যাসেসমেন্ট ও কন্ট্রোল অ্যাসেসমেন্টের উপর যথেষ্ট জ্ঞান থাকতে হবে।
৩. আপগ্রেডেড টেকনোলজি সম্পর্কে জ্ঞান, অডিটিং ম্যানেজমেন্টের উপর দক্ষ হতে হবে।
৪. টেকনিক্যাল ও নন-টেকনিক্যাল ভাষার উপর দক্ষতা থাকতে হবে।
৫. ইন্টারপ্রেট রিস্ক, ইনভেন্টিভ টেস্টিং মেথড ও প্রজেক্ট অ্যাসেসমেন্টের উপর যথেষ্ট জ্ঞান থাকতে হবে।
৬. বিভিন্ন কোম্পানির ইন্টারনাল সিস্টেম ডেভেলপমেন্ট ও রিসার্চ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
Source: rashcoursemba.com
ম্যানেজমেন্ট কনসালটেন্ট
একজন ম্যানেজমেন্ট কনসালটেন্ট মূলত যেকোনো কোম্পানির অনলাইন অবস্থান, ব্যবসা, দলীয় অবস্থান এবং এর ব্যবস্থাপনায় পরামর্শ দান করেন। একজন ম্যানেজমেন্ট কনসালটেন্ট হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে, আপনার যে সকল দক্ষতা থাকা লাগবে সেগুলো হচ্ছে,
১. ব্যবসার কৌশন, ফিন্যান্সিয়াল এবং ম্যানেজমেন্ট নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালন করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
২. মানবসম্পদ অথবা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগে কাজ করার পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
৩. মার্কেটিং ও সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্টের উপর দক্ষ হতে হবে।
৪. ই-কমার্স ব্যবসা ও এর ডেভেলপমেন্ট, প্ল্যানিং, টেকনিক তৈরিতে দক্ষ হতে হবে।
৫. কন্ডাক্ট, প্রোডাক্ট ও ম্যানেজমেন্ট অ্যানালাইসিসের উপর দক্ষতা থাকতে হবে।
৬. ম্যানেজমেন্ট, মার্কেটিং ও ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত সকল ধরনের সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যারের সাথে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
৭. কম্পিউটারে ব্যবহৃত সকল ধরনের বেসিক অ্যাপ্লিকেশন ও সিস্টেম প্রসেসিংয়ের উপর দক্ষ হতে হবে।
৮. স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যানিং, প্রব্লেম সলভিং ও ক্রিটিক্যাল থিংকিং করার দক্ষতা থাকতে হবে।
Source: rashcoursemba.com
ফিন্যান্স অ্যাডমিনিস্ট্রেটর
একজন ফিন্যান্স অ্যাডমিনিস্ট্রেটর মূলত একটি প্রতিষ্ঠানের ফান্ডিং, সিড মানি ও সকল ধরনের অর্থ সম্পৃক্ত কাজের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকেন। একজন ফিন্যান্স অ্যাডমিনিস্ট্রেটর হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার জন্যে যেসকল দক্ষতার প্রয়োজন হবে সেগুলো হচ্ছে,
১. অর্থনীতি ও মার্কেটিংয়ে কাজ করার পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
২. ফিন্যান্স ও আইনি কাজের সাথে যুক্ত থাকার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
৩. ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং সিস্টেম, ডেটাবেজ ও অ্যাগিসো প্রোগ্রামের উপর যথেষ্ট জ্ঞান থাকতে হবে।
৪. বিভিন্ন ব্যাংক ও অলভাজনক প্রতিষ্ঠানে, একই পদে কাজ করার পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
৫. উচ্চমাত্রার ডেটা অ্যানালাইসিস ও এক্সেল ফর্মুলা আপগ্রেডিংয়ে দক্ষ হতে হবে।
৬. পিভট টেবিল, সাম-ইফ অ্যানালাইসিস ও ভি লুকআপের উপর সম্যক ধারণা থাকতে হবে।
৭. আর প্রোগ্রামিং, নেটওয়ার্ক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ও অ্যানালিটিক্যাল রিসার্চের দক্ষতা থাকতে হবে।
Featured Image: northeastern.edu