বিলনিয়ার! যার সম্পদের পরিমাণ ১ বিলিয়ন ডলার বা ১০০০ মিলিয়ন ডলার। এবার টাকার হিসাবে চলে আসি। ১ বিলিয়ন ডলার = ৭৯১৩,৬০,০০,০০০(+/-) টাকা। ভেবেই দেখুন একজন মানুষের কত টাকা! সারা পৃথিবীতে মাত্র ১৮১০ জন এমন সম্পদের অধিকারী মানুষ রয়েছেন। আমার মতো আপনারো হয়তো কখনো ইচ্ছে হয়েছে বিলনিয়ার হতে, কল্পনা করতে ইচ্ছে করেছে কেমন হতো বিলনিয়ারের জীবনযাপন!
আমি চেয়েছি -আপনিও হয়তো চেয়েছেন! মানুষ চাইলে কল্পনাকে বাস্তবে পরিণত করতে পারে। আপনিও চাইলে বিলিয়নিয়ার হতে পারবেন। হাসবেন না, নিচে দেওয়া সমস্যাগুলোর যে কোনো একটি সমাধান করে ফেলুন। এই সমস্যাগুলো আমাদের বর্তমান পৃথিবীর মিলিয়ন মানুষের সমস্যা। যদি সমাধান করতে পারেন তাহলে মিলনিয়ারের তালিকায় আপনি থাকবেন নিশ্চিত থাকুন। জেনে নিন কোন কোন সমস্যার সমাধান আপনাকে করতে হবে।
ওয়ারলেস পাওয়ার প্রযুক্তি আবিষ্কার
প্রযুক্তি এখন হাতে হাতে। বুড়ো থেকে শুরু করে ৪ মাসের শিশুর হাতে হাতে স্মার্টফোন, ট্যাবলেট। অফিস বাসা ঘর বাহির সবখানে আমাদের হাতে বিভিন্ন ধরনের যন্ত্র। ই-বুক রিডার, স্মার্টফোন, ট্যাবলেট,স্মার্ট ওয়াচ কিংবা স্মার্ট বাইসাইকেল। এত সব যন্ত্রের দরকার চার্জ। এখনো লিথিয়াম আয়ন বিশিষ্ট ব্যাটারিগুলো খুব কাজের নয়। আর যন্ত্রপাতি এতটাই ছোট হয়ে যাচ্ছে যে, সেখানে বড় ব্যাটারি থাকছে না। তাই এখন বিজ্ঞানীরা খুঁজছেন দ্রুত এবং সহজলভ্য চার্জিং প্রযুক্তি। ইতোমধ্যে বেশ কিছু প্রযুক্তি আসতে শুরু করেছে।
এখন বিজ্ঞানীরা ব্যাটারির শক্তি বাড়ানোর পাশাপাশি বহনযোগ্য চার্জিং শক্তির উৎস (চার্জিং পয়েন্ট) হিসাবে। ইতিমধ্যে ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটন এর বিজ্ঞানীরা টেলিভিশন কিংবা আশের পাশের লাইটের সকেট বা বাল্ব দিয়ে চার্জ করার প্রযুক্তি নিয়ে এসেছে। এই পদ্ধতিতে তরঙ্গের মাধ্যমে চার্জ দেওয়া যাবে এবং ওয়াইফাই এর মতো তথ্য আদান প্রদান করা যাবে। আপনি সামনে বিলনিয়ার হতে চান। এই সমস্যার সহজ এবং লাভজনক সমাধান বের করুন।
প্রত্যন্ত অঞ্চলে সস্তায় ইন্টারনেট সুবিধা প্রদান
এখন ব্যবসা বাণিজ্য সেবা প্রদান সব হয়ে যাচ্ছে ইন্টারনেট ভিত্তিক। শহরে ইন্টারনেট সুবিধা ঠিক থাকলেও মফস্বলে কিংবা প্রত্যন্ত অঞ্চলে মানুষ এখনো ঠিকভাবে ইন্টারনেট সুবিধা পাচ্ছে না। ফলে বেশ বড় সংখ্যক মানুষ ব্যবসা বাণিজ্য এবং সেবার বাইরে থেকেই যাচ্ছে। তাই সকলের কাছে ইন্টারনেট সুবিধা প্রদান করা খুব গুরুত্বপূর্ণ এখন। মোবাইল অপারেটরগুলো বেশ চড়া দাম ইন্টারনেট প্যাকেজ সুবিধা দিলেও প্রত্যন্ত অঞ্চলে এই সুবিধা পাওয়া যায় না। যেখানে সেখানে চাইলেই ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক এর জন্য যন্ত্রপাতি বসানো যায় না।
এইসব যন্ত্রপাতি যথেষ্ট ব্যয়বহুল এবং এসব যন্ত্র নিয়মিত মনিটর করতে হয়। তাই চাইলেও প্রত্যন্ত অঞ্চলে অনেক ইন্টারনেট স্টেশন বসানো যায় না। তবে ফেসবুক এবং গুগল এই সমস্যা সমাধানে ইতোমধ্যে লেগে পড়েছে। ফেসবুক বহনযোগ্য ড্রোন দিয়ে ইন্টারন্ট সুবিধা দিতে চেষ্টা করছে। আবার গুগল তাদের নিজেদের নতুন প্রজেক্ট ‘প্রজেক্ট লুন’ চালু করেছে।
এই পদ্ধতিতে নবায়নযোগ্য শক্তি (যেমন বায়ু এবং সূর্যের আলো) ব্যবহার করে বেলুন দিয়ে উড়ন্ত ইন্টারনেট স্টেশন তৈরির চেষ্টা করছে। তবে এই পদ্ধতি এখনো ব্যয়বহুল। তাই আপনি যদি নিজেকে বিলিয়নিয়ার হিসাবে দেখতে চান তাহলে চেষ্টা করুন বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কিভাবে ইন্টারনেট সুবিধা কম খরচে পৌঁছান যায়। সাড়া পৃথিবী তো আপনার সামনে !
সস্তা সোলার প্যানেল আবিষ্কার
নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের সবচেয়ে বড় উৎস সূর্য। তাই তো বছরের পর বছর চলছে নতুন নতুন উপায়ে সূর্য থেকে বিদ্যুৎ আহরণের। সূর্য থেকে সরাসরি শক্তি সরবরাহ করে যায় দুই ভাবে। প্রথম উপায় সস্তা ফটোভোল্টিক সেল, সমস্যা নিম্ন মানের বিদ্যুৎ এবং পরিমাণেও অল্প। দ্বিতীয় উপায় এখনো খোঁজা হচ্ছে।
এখন কাজ হচ্ছে উন্নত মানের সেল তৈরি করা। ইতিমধ্যে অস্ট্রেলিয়ান এক গবেষক দল ইতিমধ্যে বলছেন তারা নাকি ব্যবসায়িক পরিমাপের বিদ্যুৎ তৈরি ফটোভোল্টিক সেল আবিষ্কার করে ফেলেছে। তাদের আবিষ্কৃত এই সেলে নাকি ৭৫ শতাংশ পরিমাণে বিদ্যুৎ আহরণ করা সম্ভব। তাই আপনিও লেগে পড়ুন।
পরিষ্কার কয়লা প্রযুক্তি
পরিষ্কার কয়লা– এই প্রযুক্তি কিংবা ধারণা একদম নতুন। মিডিয়ায় প্রকাশ না হওয়ায় এই প্রযুক্তি অতটা সামনেও আসেনি। তবে খুব শীঘ্রই নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস হিসাবে পরিষ্কার কয়লার নাম উঠে আসবে। পরিষ্কার কয়লা প্রযুক্তি হচ্ছে সাধারণ কয়লা থেকে প্রাপ্ত অবশিষ্ট থেকে নতুন শক্তির উৎস হিসাবে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে এই প্রযুক্তি সানে আসার না কারণ এর প্রচণ্ড ব্যয়বহুল যন্ত্রপাতি।
বাংলাদেশের এখনো প্রাকৃতিক সম্পদের এবং শক্তির উৎস হিসাবে ধরা হয় কয়লা এবং গ্যাসকে। আমাদের দেশের প্রাকৃতিক সম্পদের এই উৎস এখনো থাকতেই আপনি যদি সস্তা পরিষ্কার কয়লা প্রযুক্তি বের করে ফেলতে পারেন তাহলে আপনি ও পারবেন বিলিয়নিয়ার হতে।
সস্তায় ইন্টারনেটের মাধ্যমে টাকা পয়সার আদান প্রদান প্রযুক্তি
আপনি যদি খুব সাধারণ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী হন তাহলে এই সমস্যা সম্পর্কে আপনার ধারণা নাও থাকতে পারে। কিন্তু আপনি যদি বিদেশ থেকে দেশে টাকা পাঠান কিংবা অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করেন অথবা অনলাইনে কেনাকাটা করেন তাহলে আপনি বুঝবেন সমস্যাটি। ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন সহ ব্যাঙ্কের মাধ্যমে টাকা আনা নেওয়ার খরচ এখনো অনেক বেশি।
একইভাবে ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে অর্জিত আয় বাংলাদেশে পেতে খুব ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। এছাড়া এই ধরনের টাকা আদান প্রদান পদ্ধতিতে ভ্যাট– ট্যাক্স এবং অন্যান্য খরচ বাবদ অতিরিক্ত খরচ করতে হচ্ছে। এর সমাধান হিসাবে আসছে বিটকয়েন এবং আরো অনেক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান। তাই আপনি চাইলে তৈরি করে ফেলতে পারেন নিজের টাকা পয়সা এবং পাল্টে দিতে পারেন দুনিয়ার টাকা পয়সার হিসাব।
ওজন কমানোর পিল
ওজন পৃথিবীর মানুষের এখন বড় এক সমস্যা। মানুষ এখন আর কায়িক শ্রম না করে মাথার জোরে কাজ করছে তাই শরীরের অন্যান্য অঙ্গ আগের মতো আর ব্যবহার করা হচ্ছে না। ফলে ধীরে ধীরে মানুষের ওজন বাড়ছে, বাড়ছে রোগ বালাই। মানুষ তাই জিমে যাচ্ছে এবং তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের হার্বাল ওষুধ। ২০১২ সালে বিজ্ঞানীরা বলেছিলেন তারা গবেষণার মাধ্যমে ইঁদুরের মস্তিষ্ক থেকে বিশেষ অংশ সরিয়ে দিয়েছিলেন এতে ইঁদুরের শরীর থেকে চর্বি দ্রুত ক্ষরিত হচ্ছিল।
একই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা মানুষের শরীর থেকে চর্বি ঝরিয়ে ফেলার চেষ্টা করছেন। এই পিল আবিষ্কৃত হলে মানুষের উচ্চ মেদের কারণে রোগ ডায়বেটিকস কিংবা উচ্চ রক্তচাপ সমস্যার সমাধান হবে। আপনি যদি মেডিসিন কিংবা মেডিকেল নিয়ে থাকেন তাহলে আপনিও দেখতে পারেন।
পানি পরিশোধনের প্রযুক্তি
পানির সমস্যা সাড়া পৃথিবী জুড়ে। পৃথিবীর তিন ভাগের ২ ভাগ পানি লবণাক্ত তাই পানির সমস্যা আরো ঘনীভূত হচ্ছে গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর কারণে। এছাড়া অনেক দেশে খরা দেখা দিচ্ছে নতুন করে। তাই পান যোগ্য পানির উৎস খুঁজতে কিংবা পানি পরিশোধনের প্রযুক্তি খুব জরুরি। পানি পরিশোধনের প্রযুক্তি এবং যন্ত্র খুবই ব্যয়বহুল।
বেশ কিছু দেশ সৌর শক্তি ব্যবহার করে পানি পরিশোধনের চেষ্টা চালাচ্ছে। তারপরেও তা খুবই ব্যয়বহুল। তাই আপনি যদি উচ্চাকাঙ্ক্ষী হন তাহলে লেগে পড়ুন পানি পরিশোধনের উপায় খুঁজতে। যদি পেয়ে যান নিশ্চিত জানবেন বিলিনিয়ার আপনি হবেনই।
সঠিক আবহাওয়া পূর্বাভাস দেওয়ার প্রযুক্তি
পরিবেশ দূষণ কিংবা গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর কারণে আবহাওয়া এখন অপ্রতিরোধ্য হয়ে পড়েছে। সুনামি, সাইক্লোন, ভূমিকম্প, এসিড বৃষ্টি সহ অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ হচ্ছে আরো বেশি। আমাদের বর্তমান যে প্রযুক্তি রয়েছে তাতে খুব বেশি সমাধান করতে পারছি না
তাই প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে প্রাকৃতিক দুর্যোগে। এখন আমাদের দরকার উন্নত মডেল এবং নতুন ধরনের প্রযুক্তি। যাতে আমরা আগেই ভূমিকম্প, সুনামী সম্পর্কে জানতে পারি আগেই। এই প্রযুক্তি আবিষ্কৃত হলে বাংলাদেশের আমরাই সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবো।
যে পাসওয়ার্ড হ্যাক করা যায় না
সাইবার অপরাধ এখন আরেকটি বড় সমস্যা। গুগল, ফেসবুক সহ সব টেক জায়ান্ট কোম্পানিগুলো মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার ব্যয় করছে শুধু ডাটা নিরাপত্তার জন্য, ব্যবহারকারীর তথ্য চুরি যাতে না হয় সে জন্য। হ্যাকাররাও আরো শক্তিশালী ব্রুট ফোর্স পদ্ধতিতে আরো দ্রুত গতিতে হ্যাক করছে এখন। টেক জায়ান্টগুলো তাই চেষ্টা করছে আপনার ইমেইল থেকে শুরু ব্যাঙ্ক কার্ড সব কিছুর নিরাপত্তার চেষ্টা করছে, তাই তারা খুঁজছে নতুন নতুন পদ্ধতি এবং এমন পাসওয়ার্ড যা ভাঙ্গা অসম্ভব।
মৃত্যু বা বয়স ধরে রাখা
আমরা সবাই জানি মৃত্যু আমাদের সবার জন্য সত্য। আবার অনেকে আমাদের বয়স নিয়েও ভাবি। বৃদ্ধ জীবন কেমন তা আমরা সবাই জানি। বিজ্ঞানীরা তাই খুঁজে চলেছেন নতুন প্রযুক্তি। ইতোমধ্যে এন্টী এজিং ক্রিম বাজারে এসেছে। গুগলও পিছিয়ে নেই। তাদের নতুন প্রজেক্টের মাঝে রয়েছে মৃত্যু জয় নিয়ে কাজ। গুগলের এন্টি এজিং প্রজেক্ট ‘ প্রজেক্ট ক্যালিসো’।
এই প্রজেক্টে যুক্ত হয়েছেন স্বনামধন্য বায়োফিজিশিস্ট সিন্থিয়া কেইনন। তার এই কাজে এতোটাই অগ্রগতি যে ইতোমধ্যে ৮০ বছরের মানুষ কাজ করছে ৪০ বছরের মানুষের মতোন। তবে এই প্রযুক্তি এখনো নতুন এবং ব্যয়বহুল। তাই আয় করতে চান বিলিয়ন ডলার,চেষ্টা করে দেখুন। `