তথ্য প্রযুক্তির যুগে, ক্যারিয়ারের জন্য ওয়েব ডেভেলপমেন্ট অনেক এগিয়ে রয়েছে। ঘরে বসেই টাকা উপার্জন করা যায়। ওয়েব ডেভেলপার হিসেবে খুব সহজে চাকরি পাওয়া যায়। এখন আসল কথা হলো, কীভাবে ওয়েব ডেভেলপার হওয়া যায়?
ওয়েব ও সফটওয়্যার ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্ট এর জন্য প্রথমত আমাদের যে দুটি ভাষা জানা প্রয়োজন তা হলো,
১. এইচটিএমএল এবং
২. সিএসএস
এই দুটোই মার্কআপ ল্যাংগুয়েজ(HTML), কোনো প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ নয়। এ দুটো ল্যাংগুয়েজ দিয়ে আপনি একটি স্ট্যাটিক ওয়েব সাইট বা সফটওয়্যার তৈরি করতে পারবেন। পরবর্তিতে আপনার জানতে হবে নিম্নের ভাষা দুটি সম্পর্কে।
৩. পিএইচপি এবং
৪. এসকিউএল
এখানে পিএইচপি একটি প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ এবং এসকিউএল ডাটাবেস ল্যাংগুয়েজ। এই দুটো ভাষা শিখলে আপনি একটি ডায়নামিক ওয়েব সাইট অথবা সফটওয়্যার তৈরি করতে পারবেন।
source: Udemy
কোথায় শিখবেন?
এখন অনলাইনে এত রিসোর্স যে খুব সহজেই আপনি শিখতে পারবেন। এখানে আপনি সব টিউটোরিয়াল রিসোর্স পাবেন। আর টুলস্ পেজে পাবেন সব রকম টুলস্ । অথবা বিভিন্ন প্রকার ট্রেনিং সেন্টার থেকেও শিখতে পারেন। একটা ব্যাপারে লক্ষ রাখবেন আপনাকে অবশ্যই সময় দিতে হবে। ইউটিউবেও বিভিন্ন বাংলা এবং ইংরেজি টিউটোরিয়াল রয়েছে। এই সাইট থেকেও আপনি অনেকে শিখতে পারবেন।
কোথায় থেকে শিখব এটা তো পেলাম, কিন্তু কীভাবে শুরু করবো, কীভাবে একটা ওয়েব ডেভেলপমেন্ট করবো, সে সম্পর্কে নানান প্রশ্ন মাথায় আসছে, তাই তো? প্রথমে যে কাজটি করতে হবে তা হলো, প্রত্যেক টিঊটোরিয়াল দেখার সাথে সাথে ওই কাজ নিজে একবার করে দেখবেন। মনে রাখবেন দেখতে যতটুকু সহজ মনে হয়, নিজে নিজে করতে গেলে অনেক কঠিন মনে হয়। নিজের হাতে লিখলে খুব তাড়াতাড়ি মনে থাকে।
source: Graphic Art Design
স্ট্যাটিক এবং ডায়নামিক কী?
আমরা আমাদের ওয়েব সাইট বা সফটওয়্যার দুই ভাবে তৈরি করতে পারি। একটি হলো স্ট্যাটিক(Static) এবং অপরটি হলো ডায়নামিক(Dynamic)। স্ট্যাটিক পেইজ ছাড়া ওয়েব বা সফটওয়্যার পেইজের কোনো কিছু সংযুক্ত করা, সম্পাদনা বা বাতিল করা মূল কোডে যাওয়া ব্যতীত পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। আর যেসব ওয়েব বা সফটওয়্যার পেইজর কোনো কিছু সংযুক্ত, সম্পাদনা বা বাতিল করতে মূল কোডে যাওয়া ছাড়া পরিবর্তন করা সম্ভব, সেগুলো হলো ডায়নামিক পেইজ। যেমন: ফেসবুক। আমরা চাইলে ফেসবুকে আমাদের প্রোফাইল, যেকোনো পোস্ট, বন্ধু যেকোনো সময় অ্যাড, এডিট এবং ডিলিট করতে পারছি। মূলত ওই ওয়েব সাইটটি ডায়নামিক হওয়াতে আমাদের জন্য তা করা সম্ভব হয়েছে। তাই আমাদের কোনো ওয়েব সাইট বা সফটওয়্যার তৈরির করার সময় সব কিছু ডায়নামিক হচ্ছে কিনা, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
source: Web Posting
কীভাবে তৈরি হয় ওয়েবসাইট ?
প্রথমে ডিজাইনার ওয়েবসাইটির ডিজাইন করে।ডিজাইনার ওয়েব সাইটি ডিজাইন করার জন্য আলাদা কিছু ভাষা ব্যবহার করে থাকে। যেমন-
১. এইচটিএমএল
২. সিএসএস
৩. জাভাস্ক্রিপ্ট
প্রথমে এইচটিএমএল দিয়ে ডিজাইন করে একটি কাঠামো তৈরি করা হয়। তারপর সিএসএস দিয়ে সেই রকম ডিজাইন করা হয়। জাভাস্ক্রিপ্ট এবং জেকুয়েরি দিয়ে ডিজাইনে বিভিন্ন রকম এডভান্স ফিচার যেমন যোগ করা যায়। এরপর পিএইচপি মাইএসকউএল ইত্যাদি দিয়ে ওয়েব সাইটটি ব্যবহার উপযোগী করা হয়।
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শুরু করার জন্য ল্যাপটপ অথবা ডেস্কটপে নোটপ্যাড/সাবলাইম টেক্সট ডাউনলোড করে নিতে হবে। এরপর প্রত্যেকটি কোড আপনি লিখে লিখে প্র্যাকটিস করতে পারবেন। এই সাইট থেকে আপনি ডাউনলোড করতে পারেন। সফটওয়্যার ডাউনলোড হয়ে গেলে, তা ইন্সটল করে নিলেই আপনি শুরু করতে পারবেন ওয়েব ডেভেলপার হওয়ার যাত্রা।
source: Wiki Band
অন্যান্য সুবিধা
ওয়েব ডিজাইনিং শিখতে পারলে আপনি ঘরে বসেই টাকা ইনকাম করতে পারেন। চাকরির ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা রয়েছে। ফ্রিলান্সিং করে আজকাল সহজেই তরুনরা টাকা আয় করতে পারছে।
গ্রাফিক্স ডিজাইনারের প্রথমেই ভাবতে হবে সাইটটির আউটলুক, অর্থাৎ সাইটের ডিজাইন কেমন হবে? তখনই ছুটতে হয় কোনো গ্রাফিক্স ডিজাইনারের কাছে। বর্তমান যুগে যেকোনো ব্যবসার সাফল্য অনেকাংশে নির্ভর করে ওয়েবসাইটের উপর। কারণ বিশ্ব এখন সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে চলছে।
অবশ্যই এই সব কাজ শিখতে হলে আরো অনেক ভাষা জানতে হবে। যেমন: পিএইচপি, পিএইচপি এর বিভিন্ন ফ্রেমওয়ার্ক (লারাভেল,এঙ্গুলার ইত্যাদি)
লারাভেলের জন্য এখানে প্রয়োজনীয় সব টিউটোরিয়াল দেওয়া আছে। ডাটাবেজের জন্য এসকিউএল এর ব্যবহার জানতে হবে।
কেমন আয় হতে পারে?
আয় নির্ভর করবে আপনার দক্ষতার উপর। আপনি যত দক্ষ হবেন আপনার আয় তত বেশি হবে। একজন দক্ষ ওয়েব ডিজাইনারের পারিশ্রমিক বিভিন্ন জনপ্রিয় মার্কেটে ঘন্টা প্রতি ২০ ডলার হতে ৫০ ডলার পর্যন্ত হয়ে থাকে। অর্থাৎ, আপনি যদি ঘন্টায় সর্বনিম্ন ২০ ডলার আয় করেন তাহলে, প্রতিদিন ৫ ঘন্টা কাজ করলে আয় হবে ১০০ ডলার। এখন বুঝতেই পারছেন আপনি দক্ষ হলে আপনার আয় কত হতে পারে।
source: FrontNet
শেখার ক্ষেত্রে অবশ্যই ধৈর্য সহকারে শিখতে হবে। আস্তে আস্তে সামনে এগোতে হবে। মাঝপথে বা অর্ধেক শিখে বাকি টুকু বাদ রাখবেন না। একটার পর একটা ধীরে ধীরে আয়ত্বে আনার চেষ্টা করবেন। কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে গুগলের সাহায্য নিবেন। আর প্রথম দিকে শেখার সময় প্রচুর সময় দেবেন।
এক সাথে সব শেখার চেষ্টা করবেন না। একটি একটি করে ধীরে ধীরে শিখবেন। শেখার পাশাপাশি নিয়মিত চর্চা করবেন।
Feature Image Source: Youse De