বন্যপ্রাণীদের কল্যাণে নিয়োজিত ১০টি সংস্থা

পৃথিবীতে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন ধরণের সংস্থা ও সংগঠন। সাধারণত এই সব সংস্থাগুলোর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হয়ে থাকে উন্নয়ন ও কল্যাণ সাধন। বন্যপ্রাণী ও পশুদের জন্য রয়েছে অনেক সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান। এসব সংস্থা প্রাণীদের উন্নয়ন, বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীদের বিলুপ্তি রোধ, মানুষ ও প্রাণীদের মধ্যে সমঝোতা পূর্ণ সম্পর্ক সৃষ্টি, পশুদের আবাসস্থল রক্ষা, বিপন্ন প্রাণীদের চিকিৎসা সেবা প্রদানসহ বিভিন্ন কল্যাণমুখী কার্যক্রম পরিচালনা করছে। অনেক সময়ই এই সব সংস্থা সম্পর্কে আমাদের ধারণা না থাকার কারণে এদের থেকে আমরা উপকার লাভ করতে পারি না। তাই আমাদের বন্যপ্রাণীদের জন্য গড়ে ওঠা বিভিন্ন সংগঠন সম্পর্কে জানতে হবে। একেবারে না জানলেই নয় এমন ১০টি সংস্থা হলো।

{ "slotId": "2452885053", "unitType": "in-article" }

১. ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন সোসাইটি

ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন সোসাইটি সংস্থাটি ১৮৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বন্যপ্রাণীদের আবাসস্থল গুলো সংরক্ষণের জন্য বিশ্বব্যাপী এই সংস্থাটি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেল, বন্য প্রাণীর বিলুপ্তি রোধ, মানুষ ও বন্য প্রাণীদের মধ্যে যুগপৎ ভাবে অবস্থান এবং বন্য প্রাণীদের জন্য টেকসই উন্নয়নসহ বিভিন্ন ধরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন সোসাইটি। গরিলা, বাঘ ও মহাসাগরীয় বিভিন্ন প্রাণীদের রক্ষায় এই সংস্থা বেশ সুনাম অর্জন করেছে।

Source: www.myewa.org

২. গোরিলা ডক্টর্স

গোরিলা ডক্টর্স সংগঠনটি পাহাড়ি গরিলাদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকে। গোরিলা ডক্টর্স হলো পশু ডাক্তারদের একটি দল। এরা বিপন্ন ও অসুস্থ গরিলাদের স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে সুস্থ করে এবং বিলুপ্তমান প্রজাতি টিকিয়ে রাখতে ভূমিকা পালন করে। গোরিলা ডক্টর্স রুয়ান্ডা, উগান্ডা এবং কঙ্গো প্রজাতন্ত্র এই দেশগুলোতে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

Source: www.nytimes.com

৩. ওয়াইল্ড লাইফ এলায়েন্স

কম্বোডিয়ায় বন্যপ্রাণীর বাণিজ্য রোধে কাজ করে যাচ্ছে ওয়াইল্ড লাইফ এলায়েন্স সংস্থাটি। কেউ যেনো অবৈধভাবে বন্য প্রাণী বিক্রি করে প্রাণীদের বিলুপ্ত করতে না পারে সেটা খেয়াল রাখে এবং দুর্যোগে যদি কোনো পশু বিপদাপন্ন হয় তবে তাদেরকে উদ্ধার করে। এভাবেই এই সংস্থা বন্যপ্রাণীদের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে।

{ "slotId": "", "unitType": "in-article", "pubId": "pub-6767816662210766" }
Source: Conservation. org

৪. ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ড

ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ডের মূল লক্ষ্য হলো মানুষ ও প্রাণীদের মধ্যে সহাবস্থান নিশ্চিত করা ও জীববৈচিত্র টিকিয়ে রাখা। এই সংস্থাটি মূলত বাঘ, সামুদ্রিক কচ্ছপ, শিম্পাঞ্জি, হাতি, চিতাবাঘ, ডলফিন, গরিলা, তিমি এইসব প্রাণীর উন্নয়নে কাজ করে। তবে অন্য প্রাণীদেরও সহায়তা করতে আপ্রাণ চেষ্টা করে। বিশ্বব্যাপী এই সংস্থার কার্যক্রম রয়েছে তবে তাদের বেশী কর্মতৎপরতা দেখা যায়, আমাজন, হিমালয়, ভূমধ্যসাগরীয়, বোর্নিও, কোরাল ট্রায়াঙ্গল এবং মাদাগাস্কার এই সব অঞ্চলে।

Source: Conservation.org

৫. ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর এ্যানিমাল ওয়েলফেয়ার

এই সংস্থাটি প্রাণী ও তাদের আবাসস্থল রক্ষার জন্য বিশ্বব্যাপী তাদের বিভিন্ন প্রজেক্ট বাস্তবায়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। সামুদ্রিক প্রাণীদের নিরাপত্তা, তিমির বিলুপ্তি প্রতিরোধ, হাতি রক্ষা এবং বাঘ রক্ষা এগুলো হলো ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর এ্যানিমাল ওয়েলফেয়ার সংস্থাটির বাস্তবায়িত কিছু প্রকল্প। প্রাণীদের কল্যাণে এখন পর্যন্ত ৪০টির বেশী প্রজেক্ট তারা হাতে নিয়েছে।

Source: www.spot.ph

৬. ওয়ার্ল্ড সোসাইটি ফর দ্য প্রোটেকশন অব এ্যানিমালস

প্রাণীদের সম্মান করতে হবে তাদের সাথে অসম্মানমূলক আচরণ করা যাবে না এমন নীতিকে বাস্তবায়নের জন্য এই সংস্থাটি পৃথিবী জুড়ে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এছাড়াও এই প্রতিষ্ঠানটি প্রাণীদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকে এবং পশুদের কল্যাণে বিভিন্ন কর্মপন্থা অবলম্বন করে থাকে। ওরাংওটাং, তিমি, ভাল্লুকসহ আরও কিছু প্রজাতির প্রাণীদের কল্যাণে তাদের ভূমিকা অনস্বীকার্য।

Source: Nationalgeograph.com

৭. আফ্রিকান ওয়াইল্ডলাইফ ফাউন্ডেশন

আফ্রিকায় বন্য প্রাণীদের নিরাপত্তা ও প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষার জন্য আপ্রাণ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আফ্রিকান ওয়াইল্ডলাইফ ফাউন্ডেশন। মানুষ ও বন্যপ্রাণীদের মধ্যে সংঘাত দূরীকরণ করে, মানুষ ও প্রাণীদের মধ্যে এক ধরণের সহাবস্থান সৃষ্টিতে তাদের সাফল্য অবাক করে দেওয়ার মতো। তারা শুধু প্রাণীদেরই সুরক্ষা নিশ্চিত করে না বরং প্রাকৃতিক দৃশ্য ও পরিবেশের ভারসাম্য যেনো বিনষ্ট না হয় সে দিকেও কড়া নজর রাখে।

Source: WordPress.com

৮. পিপলস ফর দ্যা ইথিক্যাল ট্রিটমেন্ট অব এ্যানিমাল

প্রাণীদের অধিকার রক্ষায় বিশ্বের সবচেয়ে বড় সংস্থা হলো ‘পিপলস ফর দ্য এথিক্যাল ট্রিটমেন্ট অব এ্যানিমাল’। এই সংস্থাটির কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে মানুষকে শিক্ষা দেওয়া, গবেষণা পরিচালনা করা, আইন প্রণয়ন করা, সেমিনারের আয়োজন করা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপন্ন প্রাণীদের উদ্ধার করা এগুলো ছাড়াও বন্যপ্রাণীদের কল্যাণে বিশ্বব্যাপী বহুমুখী কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।

Source: Gobankingrates.com

৯. এ্যানিমাল ওয়েলফার ইনস্টিটিউট

১৯৬১ সালে এ্যানিমাল ওয়েলফার ইনস্টিটিউট সংস্থাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এই সংস্থা প্রাণীদের উন্নয়ন ও কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীদের উপরে মানুষ সৃষ্ট ক্ষতিকর দিকগুলোর প্রভাবরোধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে। এ্যানিমাল ওয়েলফার ইনস্টিটিউট বিশ্বব্যাপী তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে তবে তারা মূলত আমেরিকার আইন ব্যবস্থার আলোকে প্রাণীদের আইনি সহায়তা প্রদান করে।

১০. ডিফেন্ডার্স অব ওয়াইল্ডলাইফ

বন্যপ্রাণীদের আইনি সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে এই সংস্থাটি ৬০ বছরেরও অধিক সময় ধরে কাজ করে যাচ্ছে। আলাস্কার ধূসর নেকড়ে, কালো ভাল্লুক, আমেরিকার বন্য ষাঁড়সহ আরও কিছু বিপন্ন প্রজাতির প্রাণীদের কল্যাণে আইনি সহায়তা প্রদান চোখে পড়ার মতো। মূলত আলাস্কায় এই সংস্থাটির কার্যক্রমগুলো পরিচালিত হয়।

Source: www.goodhousekeeping.com

পৃথিবী জুড়ে এইসব সংস্থাদের ধারাবাহিক কার্যক্রমের ফলে বন্য প্রাণীদের নিরাপদ আবাসস্থলের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রজাতির বিলুপ্তি রোধ করা সম্ভব হচ্ছে। আবার মানুষ ও প্রাণীদের মধ্যে সহাবস্থান গড়ে উঠেছে যা আমাদের প্রাকৃতিক দৃশ্য ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করছে। আমাদেরও উচিত নিজেদের অবস্থান থেকে এইসব সংস্থার সাথে সম্পৃক্ত হয়ে এদের কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *