বিশ্বকাপে জার্মানির কাছে যে মাঠে লজ্জায় ডুবেছিল ব্রাজিল, সে মাঠেই আর্জেন্টিনাকে উড়িয়ে দিয়েছে স্বাগতিকরা। দুর্দান্ত এই জয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপের দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইপর্বে শীর্ষেই থাকলো তিতের দল
বেলো হরিজন্তেতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বিদের বিপক্ষে ৩-০ গোলের এই জয়ে প্রথমার্ধে লক্ষ্যভেদ করেন ফিলিপে কৌতিনিয়ো ও নেইমার। দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধান বাড়ান পাওলিনিয়ো। বিরতির পর একতরফা খেলা স্বাগতিকদের বেশ কয়েকটি সুযোগ নষ্ট না করলে জিততে পারতো আরও বড় ব্যবধানে।
‘সুপার ক্লাসিকোর’ উত্তাপ অবশ্য বাংলাদেশ সময় শুক্রবার ভোর পৌনে ছয়টায় শুরু হওয়া এই ম্যাচের প্রথম ২০ মিনিটে পাওয়া যায়নি। এ সময় বল দখলে এগিয়ে ছিল আর্জেন্টিনাই।
২৩তম লিওনেল মেসির পাস থেকে লুকাস বিগলিয়ার জোরালো শট ডানে ঝাঁপিয়ে ঠেকান ব্রাজিল গোলরক্ষক আলিসন।
আর্জেন্টিনা প্রথম সুযোগটা কাজে লাগাতে না পারলে কি হবে, দুই মিনিট পর নিজেদের প্রথম সুযোগেই কৌতিনিয়োর দুর্দান্ত গোলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। নেইমারের পাস পাওয়ার পর আড়াআড়ি দৌড়ে দুই খেলোয়াড়কে এড়িয়ে ডি-বক্সের একটু বাইরে থেকে বুলেট গতির শট নেন লিভারপুলের এই তারকা। বল জালে জড়ায় ওপরের ডান কোণা দিয়ে; ঝাঁপিয়েও বলের নাগাল পাননি গোলরক্ষক সের্হিও রোমেরো।
৩৭তম মিনিটে মেসির ফ্রি-কিক রক্ষণ দেয়ালে প্রতিহত হয়। পরের মিনিটে পাল্টা আক্রমণে বল নিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়া নেইমার দুরূহ কোণ থেকে শট নিয়েছিলেন; তবে বল লাগে পোস্টের বাইরের দিকে।
৪২তম মিনিটে সমতা ফেরানোর সুযোগ পেয়েছিল অতিথিরা। তবে আনহেল দি মারিয়ার বাড়ানো বলে ডি-বক্সের ভেতর থেকে ডিফেন্ডার এমানুয়েল মাসের নীচু শট দূরের পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়।
বিরতির ঠিক আগে দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ে ব্যবধান বাড়ান নেইমার। গাব্রিয়েল জেসুসের বাড়ানো বল ডি-বক্সে নিয়ন্ত্রণে নিতে একেবারে ঠিক সময়ে দৌড় দিয়েছিলেন বার্সেলোনা ফরোয়ার্ড। গোলরক্ষক রোমেরোর পাশ দিয়ে ঠাণ্ডা মাথায় বল জালে পাঠিয়ে তুলে নেন জাতীয় দলের হয়ে তার ৫০তম গোলটি।
৫৫তম মিনিটে ডিফেন্ডারদের ভুলে বল নিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে গোলরক্ষকে কাটিয়ে প্লেসিং শট নিয়েছিলেন পাওলিনিয়ো। গোললাইন থেকে বল বিপদমুক্ত করে সে যাত্রা ব্যবধান বাড়াতে দেননি পাবলো সাবালেতা। পাল্টা আক্রমণে দি-মারিয়ার শট সাইড নেটে জড়ায়।
তবে তিন মিনিট পর ডিফেন্ডারদের বোঝাপড়ার ঘাটতিতে ঠিকই গোল পেয়ে যান পাওলিনিয়ো। মার্সেলোর ক্রস বিপদমুক্ত করতে পারেননি মাস। রেনাতো আগুস্তোর কাটব্যাকে পাওলিনিয়োর শট ফুনেস মোরির পায়ে লেগে জালে জড়ায়।
৬৮তম মিনিটে নেইমার ডি-বক্সে বিপজ্জনক জায়গায় বল পেয়েছিলেন। সাবালেতা কর্নারের বিনিময়ে সে যাত্রা বিপদমুক্ত করেন।
৭৯তম মিনিটে পাওলিনিয়োর বাড়ানো বলে আবার ডি-বক্সে ফাঁকায় বল পেয়েছিলেন নেইমার। এবার গোলরক্ষক এগিয়ে এসে বলে কোনোরকমে হাত ছুঁইয়ে কর্নারের বিনিময়ে বিপদমুক্ত করেন।
৮৫তম মিনিটে ডান দিক থেকে রেনাতোর ক্রসে খুব কাছ থেকেও বদলি হিসেবে নামা ফিরমিনো পা ছোঁয়াতে না পারায় ব্যবধান আর বাড়েনি।
দুর্দান্ত এই জয়ে ১১ ম্যাচে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষেই থাকল ব্রাজিল। ১৬ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে থাকা আর্জেন্টিনা আছে বিশ্বকাপের মূল পর্বে না যেতে পারার শঙ্কায়।
দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চল থেকে শীর্ষ চার দল সরাসরি খেলবে রাশিয়া বিশ্বকাপে। পঞ্চম দলটিকে প্লে-অফ খেলতে হবে ওশিয়ানিয়া অঞ্চলের সেরা দলের সঙ্গে।