কে হচ্ছেন জাতিসংঘের পরবর্তী মহাসচিব ?

0

blue_un_logo_0

নয়জন প্রার্থী জাতিসংঘের পরবর্তী মহাসচিব হওয়ার জন্য লড়ছেন। ১২ থেকে ১৪ এপ্রিল তাঁরা টানা ১৮ ঘণ্টা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সামনে এক প্রকাশ্য সাক্ষাৎকার পর্বে অংশ নেন। সদস্যরাষ্ট্র ছাড়াও সুশীল সমাজভুক্ত বিভিন্ন সংগঠন ও তথ্যমাধ্যমের প্রতিনিধিরা এতে ছিলেন। তাঁদের পাঠানো প্রায় এক হাজারটি প্রশ্ন ছাড়াও বিভিন্ন সম্পূরক প্রশ্নের সম্মুখীন হন প্রার্থীরা।

একাধিক কূটনীতিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখনো প্রার্থিতা চূড়ান্ত হয়নি। তবে এই নয়জনের মধ্যে তিনজন নির্বাচনের দৌড়ে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে আছেন। তাঁরা হলেন পর্তুগালের আন্তোনিও গুতিয়েরেস, নিউজিল্যান্ডের হেলেন ক্লার্ক ও বুলগেরিয়ার ইরিনা বোকোভা। গুতিয়েরেস ও ক্লার্ক দুজনেই নিজ নিজ দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী।

মধ্যপ্রাচ্যের একজন রাষ্ট্রদূত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় এই তিনজনকেই ‘ফ্রন্ট রানার’ হিসেবে চিহ্নিত করেন। সাক্ষাৎকার পর্ব শুরুর আগে অনেকে বোকোভাকে এক নম্বর প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করেছিলেন। কিন্তু তাঁর দুই ঘণ্টা স্থায়ী সাক্ষাৎকারে বোকোভা সবাইকে খুশি করতে পারেননি। অন্যদিকে বিশ্ব সংস্থার সাবেক উদ্বাস্তু হাইকমিশনার গুতিয়েরেস অত্যন্ত খোলামেলা ভাষায় এই সংস্থার আমলাতান্ত্রিক সংকটের ছবিটি তুলে ধরে সুনির্দিষ্ট সংস্কার প্রস্তাব রাখেন। বর্তমানে ইউএনডিপির প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালনরত হেলেন ক্লার্ক সংস্থার উন্নয়ন-বিষয়ক অগ্রাধিকার নিয়ে তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা যেভাবে উপস্থাপন করেন তাতে অনেকেই চমৎকৃত হন।

বোকোভার ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি আগ্রহ প্রকাশ করেছিল রাশিয়া। কিন্তু তাঁর দুর্বল সাক্ষাৎকারের পর মস্কো বলেছে, সবচেয়ে যোগ্য প্রার্থীর মনোনয়ন নিশ্চিত করতেই তারা আগ্রহী। সংস্থার অনানুষ্ঠানিক নিয়ম অনুসারে পরবর্তী মহাসচিব পূর্ব ইউরোপ থেকে আসার কথা। জাতিসংঘে রাশিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত চুরকিন সাংবাদিকদের বলেছেন, এই আঞ্চলিক আবর্তনব্যবস্থা ধরে রাখার ব্যাপারে তিনি অনড় নন। পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, রাশিয়ার এই পরিবর্তিত মনোভাবের ফলে সবচেয়ে লাভবান হবেন পর্তুগালের গুতিয়েরেস ও নিউজিল্যান্ডের ক্লার্ক।

জানা গেছে, যে নয়জন তাঁদের প্রার্থিতা ঘোষণা করেছেন, এর বাইরে আরও চার-পাঁচজন প্রার্থী খুব শিগগির তাঁদের সরকারের মাধ্যমে নিজের প্রার্থিতা ঘোষণা করবেন। তাঁরা হলেন আর্জেন্টিনার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুসানামালকোরা, কলম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিয়া আঙ্গেলাহলগুইন, অস্ট্রেলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেভিন রাড ও স্লোভাকিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিরোস্লাভলাজাক।

সংস্থার প্রায় ৬০টি দেশ চায়, একজন নারী পরবর্তী মহাসচিব হোক। সুশীল সমাজের পক্ষ থেকেও সে দাবির সমর্থনে বহুমুখী প্রচার চলছে। কিন্তু সাক্ষাৎকার পর্বের শেষে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কূটনীতিক জানান, নারী বা পুরুষের চেয়ে একজন যোগ্য মহাসচিব খুঁজে পাওয়াই আসল চ্যালেঞ্জ।

এ বছরের ৩১ ডিসেম্বর জাতিসংঘের চলতি মহাসচিব বান কি মুন তাঁর মেয়াদ শেষে নতুন মহাসচিবকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেবেন।

 

Collected

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *