১৯০৭ সালের ৬ জুন আলবার্ট আইন্সটাইনের কাছে ইউনিভার্সিটি অফ বার্ন থেকে একটা চিঠি আসে। চিঠিতে সায়েন্সের ডিন প্রফেসার হেনরিক বলেন, ‘জনাব আইন্সটাইন আমরা আপনার পিএইচডির এপ্লেকিশন গ্রহণ করতে পারছি না কারন স্পেস আর টাইম নিয়ে আপনি যা লিখেছেন তা ভিত্তিহীন। এখানে পদার্থ বিজ্ঞানের চেয়ে অবাস্তব কল্পনাই বেশী।’
শেষ লাইনটা খেয়াল করেন, আইন্সটাইনের থিসিসে নাকি পদার্থ বিজ্ঞানই নাই…
ঘটনাটা বলার কারন হল, গত কয়েকদিনে আসিফ নামে এক ছেলের গল্প ভাইরাল হয়ে গেছে, যেখানে সে পরীক্ষায় ফেল করে এবং শেষে হাসপাতালের ক্লিনার হয়। গল্পে আসিফের ব্যর্থতা দেখানো হয়, বলা হয় এটাই স্বাভাবিক। এটা আসলেই স্বাভাবিক, বেশীর ভাগ মানুষই তার চারপাশের বাঁধা ভাংতে পারেনা, কিন্তু কেন?
চারপাশে এত বেশি নেতিবাচক মানসিকতা যে আপনি কিছু করতে গেলেই বলা হবে সম্ভব না, পারবেননা, আপনাকে দিয়ে হবেনা। এসব শুনতে শুনতে নিজের মধ্যেই ধারনা তৈরি হয় আমাকে দিয়ে হবেনা। তাই শেষ ঠিকানা হয় ক্লিনারের কাজ।
কিন্ত এর বিপরীত সিনার্যিও কিন্ত কম না, ড্রপ আউট হয়ে বিল গেটস বা স্টিভ জবস হওয়ার কাহিনি বাদ দেই, মুদির ব্যবসা করে জীবন বদলে ফেলার কাহিনি আপনার পাশেই আছে। এলাকার ছয়তলা বাড়ীর মালিকটা হয়ত কোনদিন স্কুলেই যায়নি, রুটির দোকানে কাজ শুরু করে আজ নিজেই সে ওইরকম দোকানের মালিক। কাল দুপুরে যেই মানুষটার সাথে আড্ডা দিলাম তাকে তার ভার্সিটির শিক্ষক বলে দিয়েছিলেন যে তার ভবিষৎ অন্ধকার, আজ পাচ বছর পর তার স্যালারী শুনলে অনেকের চোখ কপালে উঠে যাবে। ভার্সিটির প্রথমদিকে যে ছেলেকে শুধু উপহাসের স্বীকার হতে দেখতাম আজ সে হাজার হাজার মানুষকে স্বপ্ন দেখতে শেখায়।
দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক ব্যর্থতা। ব্যর্থতাই শেখায় আপনার ভুল কোথায়, উন্নতি করার জায়গা কোথায়। ব্যর্থতা গনগনে আগুন, পোড়ায়-যন্ত্রনা দেয় কিন্তু শেষে খাদ পুড়িয়ে বের করে আনে খাঁটি সোনা।
কিছু মানুষ সবসময়ই থাকবে যারা নিজের নেগেটিভিটি অন্যের ভেতর ছড়িয়ে দিবে, বলবে এটাই বাস্তব। এতে আসলে লাভ কি জানিনা। তবে ৪.৭ পাওয়া যে ছেলেটা দেড় মাস পরের ভার্সিটি ভর্তি পরীক্ষার জন্য কোমর বেধে পড়ছে সে এসব দেখে পড়ার উতসাহ হারিয়ে ফেললে সেই দায় কে নিবে?
আজ আপনি কি আর কাল আপনি কি হতে পারেন তার মধ্যে বাঁধা শুধু আপনি।
আপনার ব্যর্থতার ভাগ কেউ কোনদিন নেবে না, ফেইলিওর ইজ আলওয়েজ অরফান।
জীবন আপনার, তাই ব্যর্থতার হাজার উদাহরণ দেখে হতাশ হবেন, নাকি সফলতার গুটিকয় ঘটনায় উদ্যমী হয়ে জীবন বদলে ফেলবেন সেই সিদ্ধান্ত আপনার।
Write up : Ritun Mubtasin Kabir