যে দশটি জিনিস আমাদের জীবদ্দশায় অদৃশ্য হয়ে যাবে (পর্বঃ ২)

আমাদের জীবদ্দশায় অদৃশ্য হওয়া বিষয়গুলির আলোচনার দ্বিতীয় পর্বে সবাইকে স্বাগতম।

৬) সঙ্গীত-  এই পরিবর্তনের গল্পে সবচেয়ে খারাপ অংশ এটি। সঙ্গীত শিল্প ধীরে ধীরে নিঃশেষ হওয়ার পর্যায়ে। কেবল অবৈধ ডাউনলোডের কারণে নয়, উদ্ভাবনী নতুন সঙ্গীতের অভাবে যারা গান শুনতে চায় তারা আগের মত আর গান শুনার সুযোগ পাচ্ছেন না। সেই সাথে আছে লোভ ও দুর্নীতির সমস্যা। রেকর্ড লেবেল এবং রেডিও শক্তিগুলো আস্তে আস্তে শেষ হয়ে যাচ্ছে।

আজ ৪০% সঙ্গীতই “ক্যাটালগ আইটেম” হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুরোনো প্রতিষ্ঠিত শিল্পীদের গান, ঐতিহ্যগত সঙ্গীত আর তেমন নেই। লাইভ কনসার্টের ক্ষেত্রেও এটি বাস্তব সত্য।স্টিভ ক্যোনপারের ”Appetite for Self-Destruction” ও “Before the Music Dies” ভিডিও তথ্যচিত্র দেখতে পারেন সঙ্গীত নিঃশেষ এর বিষয়ে অন্বেষণ করতে চাইলে।

৭) টেলিভিশন-  নেটওয়ার্কের আয় নাটকীয়ভাবে নিচে নেমে গেছে। শুধুমাত্র অর্থনীতিই এর প্রধান কারণ নয়। মানুষ টিভি এবং সিনেমা দেখছেন তাদের কম্পিউটার থেকে স্ট্রিম করে এবং সেই সাথে তারা গেম ও অন্যান্য কাজ সম্পন্ন করছেন আজকাল এই কম্পিউটারের সাহায্যে।

তাছাড়া ক্যাবল বিল এর বেশি যে সেই খরচের অর্ধেক দিয়ে অনলাইনে টিভি দেখা সম্ভব। সত্যিকার অর্থে এটি অনেকটাই ভাল প্রয়াস।

৮) নিজস্ব জিনিসপত্রাদি সংরক্ষণ-  যা কিছু আছে আমাদের এখন তা ভবিষ্যতে আমাদের জীবন থেকে হারিয়ে যেতে পারে। বিভিন্ন তথ্য থেকে শুরু করে অনলাইন থেকে সংরক্ষিত নানা নথিপত্র, সঙ্গীত, চলচ্চিত্র সব কিছু এক নিমিষে মুছে যেতে পারে। এখন আমরা সিডি কিংবা ডিভিডি এর মাধ্যমে সফটওয়্যার নিয়ে পুনরায় ইনস্টল করতে পারি।

কিন্তু অ্যাপল, মাইক্রোসফট এবং গুগল এর সেবা প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে। তাদের সর্বশেষ সংযোজন হচ্ছে ক্লাউড সেবা। কম্পিউটার চালু করার সঙ্গে সঙ্গে উইন্ডোজ, গুগল, ম্যাক ওএস ইন্টারনেটে অপারেটিং সিস্টেমের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাবে। আপনি একটি আইকনে ক্লিক করলেই এটি ইন্টারনেটে ক্লউড সেবাকে খুলে দিবে। আপনি একে ক্লউড সংরক্ষণও বলতে পারেন। এই সেবা পেতে হলে আপনাকে সাবস্ক্রিপশন ফি দিতে হবে। এই ভার্চুয়াল জগতে, আপনি বই,সঙ্গীত ডাউনলোড করুন অথবা আপনার ল্যাপটপ বা হ্যান্ড হেল্ড ডিভাইস থেকে অ্যাক্সেস করতে পারেন।

৯) টানা হাতের লেখা-  আচ্ছা, আমাদের স্কুলে টানা হাতের লেখা কেন শিখানো হয়েছে? সম্ভবত এটা এই দেশ এমনকি সংস্কৃতিতে আমাদের জন্মাবার আগে বদ্ধমূল হয়েছে। কারণ, এখন প্রায় সবকিছুই কম্পিউটার বা কীবোর্ডে সম্পন্ন করা হয়।

এটি ইতিমধ্যে কিছু স্কুলে আর শিখানো হচ্ছে না। পুরুনো নথির কাজে এটি ব্যবহার যোগ্য কিন্তু এর ব্যবহার আসলে বিশেষ কোনো কাজে আসে কি? এটিকে বিদায় জানিয়ে দেওয়াই ভাল, কেবল স্বাক্ষরের জন্য এই টানা হাতের লেখা ব্যবহার করা যেতে পারে।

১০) গোপনীয়তা-  কখনো যদি কোনো কিছুর সন্ধান করে ফিরে আনার কথা উল্লেখ করা হয় তবে তার মাঝে অবশই গোপনীয়তার ব্যাপারটা চলে আসবে। গোপনীয়তা আমাদের জীবন থেকে সেই দীর্ঘ সময় আগেই বিদায় নিয়েছে।

আজকাল বেশিরভাগ রাস্তায়, ভবনে আছে ক্যামেরা, এমনকি কম্পিউটার এবং মোবাইল ফোনেও। আপনি ২৪ ঘন্টা ৭ দিন জিপিএস ও স্ট্রিট ভিউ এর মাধ্যমে নিজেকে আড়াল রাখতে পারছেন না।

আজ না হয় এটুকুতেই ইতি টানি। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

মোবাইল চার্জ নিয়ে যত চিন্তা

বর্তমান বিশ্বে মোবাইল ফোন একটি অতিপ্রয়োজনীয় জিনিস। বর্তমানে বিশ্বে প্রায় ৯০ ভাগ মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করে থাকে। ১৯৭৯ সালে মোবাইল ফোন আবিষ্কার এর পর থেকে দ্রুত এর প্রসার হতে থাকে। এরপর আসে স্মার্ট ফোন। স্মার্ট ফোন আসার পরে মানুষ এর জীবন যাত্রা অনেক বদলে যায়। কারন স্মার্ট ফোন এর মাধ্যমে সহজেই অনেক কাজ করা সম্ভব। যার ফলে মানুষ এর জীবন যাত্রা হয়ে উঠেছে অনেক স্বাচ্ছন্দ্য কর।

আমরা জানি যে, মোবাইল ফোন একটি পোর্টেবল যন্ত্র এবং এটি চার্জের মাধ্যমে চলে। কিন্ত এই মোবাইল ফোন চার্জ করা নিয়ে অনেক ভ্রান্ত ধারনা আমাদের মাঝে বিদ্যমান। দিন দিন পৃথিবী অনেক আধুনিক হচ্ছে। কিন্ত এখনো সেসব ভ্রান্ত ধারনা আমাদের মাঝ থেকে দূর হয়নি। আমরা আজও সেসকল কুসংস্কার এ বিশ্বাস করি এবং শুধু শুধু দুশ্চিন্তা গ্রস্ত হই। আজ আমি আপনাদের কাছে এরকমই কয়েকটি ভ্রান্ত ধারনা তুলে ধরবঃ

স্মার্ট ফোনের ব্যাটারি ব্যাকআপ ভালোনাঃ

কথাটা আংশিক হলেও পুরোটা সত্য নয়। কারন প্রথমত স্মার্ট ফোন একটি সাধারন ফোন থেকে অনেক উন্নত এবং এর দ্বারা অনেক বেশি কাজ করা সম্ভব। এজন্য এতে শক্তিও বেশি খরচ হয়। অর্থাৎ বেশি শক্তির ব্যাটারির প্রয়োজন হয়।

ব্যাটারির ক্ষমতা যদি প্রয়োজন এর তুলনায় কম হয় তবে ব্যাকআপ তো খারাপ হবেই। এজন্য স্মার্ট ফোন কেনার পূর্বে সেটার ব্যাটারি সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিন।

বেশি চার্জ দেয়া ভালো নাঃ

মোবাইল চারজিং নিয়ে যেসকল কুসস্কার রয়েছে তাদের মাঝে এটা অন্যতম। বেশিরভাগ মোবাইল ব্যবহারকারীই মনে করেন যে মোবাইল একবার ফুল চার্জ হয়ে গেলে সাথে সাথে চার্জার থেকে ডিস্কানেক্ট করতে হবে। নতুবা অতিরিক্ত চার্জের দরুন মোবাইল এর ক্ষতি হতে পারে।

কিন্তু একথা অনেকেরই অজানা যে, মোবাইল ফোনের ভেতরে যে সার্কিট বিদ্যমান তা কখনো ব্যাটারিকে অতিরিক্ত চার্জ হতে দেয়না। মোবাইল এর ব্যাটারি সম্পূর্ণ চার্জ হয়ে গেলে এটা স্বয়ংক্রিয় ভাবে চারজিং বন্ধ করে দেয়। তাই মোবাইল চার্জ দিয়ে আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন। চাইলে ঘুমিয়ে নিতেও পারেন।

চার্জ শেষ করে তারপর চার্জে দিতে হবেঃ

অনেকে বিশ্বাস করেন যে মোবাইল এর চার্জ পুরো শেষ হওয়ার পূর্বে মোবাইল চার্জ করা উচিত না। এটি একটি সম্পূর্ণ ভ্রান্ত ধারণা।

কারন প্রতিটা ব্যাটারির ই একটি নির্দিষ্ট চারজিং সাইকল (cycle) থাকে। এটি পূর্ণ হয়ে গেলে ব্যাটারি নষ্ট হয়ে যায়। তাই ব্যাটারি সম্পূর্ণ ডিসচার্জ করা উচিত নয়।

যেকোনো মোবাইল চার্জার হলেই হলোঃ

মোবাইল চার্জার মোবাইল এর ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্ব পূর্ণ একটি বিষয়। আমরা অনেকসময় অন্য মোবাইল চারজার দিয়ে মোবাইল চার্জ দিই। কিন্ত এটা অনেকেই খেয়াল করি না যে সব মোবাইল চারজার এর সাপ্লাই কারেন্ট প্রবাহ এক নয়।

এটা মোবাইল এর জন্য অনেক ক্ষতিকারক হতে পারে। এজন্য চার্জ করার জন্য মোবাইল এর অরিজিনাল চারজার ব্যবহার করাই উত্তম।

এছারাও আরো নানা কুসস্কার রয়েছে এই চারজার কে ঘিরে। আপনি যদি এসব কুসস্কারে এতদিন বিশ্বাস করে থাকেন তবে তারাতারি মাথা থেকে এসব ঝেড়ে ফেলুন। আর নিশ্চিন্ত ভাবে আপনার মোবাইল ফোনকে চার্জ দিন।