“ঢাকা লিগে আমার একটি-দুটি ফিফটি ধরাবাঁধা। এবার এখনও হয়নি, তবে করব তো বটেই। কোন দলের কপালে যে আছে আমার ঝড়!’ সংবাদকর্মীদের সঙ্গে আড্ডায় গত কয়েক দিনে বেশ কয়েক বার এই কথা বলেছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। ঠিকই তুললেন ঝড়। সেই ঝড়ে ছাড়িয়ে গেলেন নিজেকে। ছাড়িয়ে গেলেন আসলে বাংলাদেশের ক্রিকেটের সবাইকেই!
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে শনিবার শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের বিপক্ষে ৫০ বলে শতক করেছেন মাশরাফি, লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে যেটি বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে দ্রুততম।
খুনে ইনিংসটিতে কলাবাগান ক্রীড়া চক্রের অধিনায়ক মেরেছেন ১১টি ছক্কা। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে এটিও বাংলাদেশের রেকর্ড।
২০০৯ সালে জিস্বাবুয়ের বিপক্ষে বুলাওয়াওয়েতে ৬৩ বলে শতক করেছিলেন সাকিব আল হাসান। আর গত বছরের জানুয়ারিতে কলাবাগান ক্রিকেট একাডেমির হয়ে লেজেন্ডস অফ রূপগঞ্জের বিপক্ষে ১৪৬ বলে ১৫০ রানের ইনিংসে এনামুল হক মেরেছিলেন ১০টি ছক্কা।
মাশরাফির ইনিংসটি বাংলাদেশের মাটিতে তৃতীয় দ্রুততম লিস্ট ‘এ’ শতক। ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডেতে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ৪৫ বলে শতক করেছিলেন ব্রায়ান লারা। ২০১৩ সালে ঢাকা লিগেই প্রাইম ব্যাংকের হয়ে কলাবাগান ক্রিকেট একাডেমির বিপক্ষে ৪৬ বলে তিন অঙ্কে পৌঁছেছিলেন জিম্বাবুয়ের ব্রেন্ডন টেলর।
এবারের লিগে তার দল ভালো করতে না পারলেও বল হাতে দারুণ ফর্মে মাশরাফি। তবে প্রত্যাশামতো কথা বলছিল না তার ব্যাট। শনিবার এক ইনিংসেই যেন পুষিয়ে দিলেন সব।
ফতুল্লায় মাশরাফি ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন ছয় নম্বরে। ব্যাটিংয়ে যখন নামলেন, ইনিংসের তখন ৩৬তম ওভার। কলাবাগানের রান ৪ উইকেটে ১৬৯। রানের গতি বাড়াতেই মূলত নেমেছিলেন মাশরাফি।
তা পেরেছেনও বেশ। ৪৯তম ওভারে আউট হয়েছে, মাঝের সময়টায় চালিয়েছেন তাণ্ডব। ৩৫ বলে স্পর্শ করেছিলেন অর্ধশতক, ১টি চার ও ৪ ছক্কায়। পরের পঞ্চাশ ছুঁতে লেগেছে মাত্র ১৫ বল, তাতে ছক্কা আরও ৭টি!
৭৯ রান থেকে বাঁহাতি স্পিনার ওয়াহিদুল আলমের এক ওভারেই চার ছক্কা মেরে স্পর্শ করেছেন মাইলফলক।
শেষ পর্যন্ত পেসার শফিউল ইসলামের বলে মার্শাল আইয়ুবের হাতে ধরা পড়ে যখন ফিরছেন, মাশরাফির নামের পাশে ৫১ বলে ১০৪!
লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে এর আগে সাত বার অর্ধশতক স্পর্শ করেছিলেন মাশরাফি। সর্বোচ্চ ছিল ৬৯, গত বছরের এপ্রিলে বিসিএলে দক্ষিণাঞ্চলের হয়ে উত্তরাঞ্চলের বিপক্ষে এই ফতুল্লাতেই।
মাশরাফির তাণ্ডবে ৫০ ওভারে কলাবাগান তুলেছে ৭ উইকেটে ৩১৬
Courtesy: bdnews24