চাইনিজ সরকারের স্কলারশিপ ২০২০-২১

0

Jilin-Provincial-Government-Scholarship-in-CHINA

Chinese Govt. Scholarship এবং China Bangladesh Exchange Scholarship ২০১৭-১৮ এর জন্য Under-graduate, Masters, Ph.D, General/Senior Scholar কোর্সের জন্য বাংলাদেশি নাগরিকদের নিকট হতে দরখাস্ত আহ্বান করা হচ্ছে।
স্কলারশিপের পরিমানঃ
রেজিস্টেশন ফি, টিউশন ফি এবং আবাসন ফি স্কলারশিপের আওতায় থাকবে।
মাস্টার্স ও ডক্টরেল লেভেলে ছাত্র/ছাত্রীদের জন্য মাসিক খরচ হিসেবে যথাক্রমে ৩০০০ ইউয়ান ও ৩৫০০ ইউয়ান প্রদান করা হবে।
তবে, ল্যাবরেটরি ও ইন্টার্নশিপ ফি এবং যাতায়াত খরচ নিজেদের বহন করতে হবে।

শর্তাবলি

১) গণপ্রজাতন্ত্রী চীন ব্যতিত অন্য যেকোনো দেশের নাগরিক হতে হবে। অবশ্যই সু-স্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হবে।

২) অন্য কোনো স্কলারশিপ বা ফান্ডিং এর জন্য মনোনীত হওয়া যাবে না।

২) স্নাতক প্রোগ্রামে আবেদনের জন্য উচ্চ মাধ্যমিক পাশ এবং বয়স অবশ্যই ২৫ এর চেয়ে কম হতে হবে।

৩) মাস্টার্স প্রোগ্রামে আবেদনের জন্য স্নাতক ডিগ্রিধারী এবং বয়স অবশ্যই ৩৫ এর চেয়ে কম হতে হবে।

৪) ডক্টরেল প্রোগ্রামে আবেদনের জন্য উচ্চ মাস্টার্স ডিগ্রিধারী এবং বয়স অবশ্যই ৪০ এর চেয়ে কম হতে হবে।

৫) General Scholar প্রোগ্রামে আবেদনের জন্য ন্যূনতম ২ বছরের স্নাতক ডিগ্রিধারী এবং বয়স অবশ্যই ৪৫ এর চেয়ে কম হতে হবে।  Senior Scholar প্রোগ্রামে আবেদনের জন্য মাস্টার্স ডিগ্রিধারী অথবা সহযোগী অধ্যাপক(অথবা তার উপরে) এবং বয়স অবশ্যই ৫০ এর চেয়ে কম হতে হবে।

এই স্কলারশিপে আবেদন করার উপায় হচ্ছে,
(১) বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে (টাইপ – এ)।
(২) চাইনিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে (টাইপ – বি)।
আবেদনের সময়:
বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আবেদন করতে হলে নিচের ওয়েবসাইট থেকে করতে হবে।
আবেদনের বিজ্ঞপ্তি প্রতি বছরই প্রকাশ করা হয়। বাংলাদেশ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি বের হয়।
মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আবেদন করার ক্ষেত্রে জিনিসটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো ভালো অ্যাকাডেমিক রেজাল্ট। এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়, কেননা স্কলারশিপটি পেতে হলে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকতেই হবে।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, অনলাইনে আবেদনের সময় সিএসসি- এ টাইপে এ আপনি দুইটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিষয় পছন্দের তালিকায় রাখতে পারবেন। A Category তে দুইটি বিশ্ববিদ্যালয় বাছাই করবেন আর তৃতীয় অপশনে None বসাবেন।
ব্যাচেলরদের HSC পরীক্ষার ভাল ফলাফল, কো-কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিস ,ভাল একজন শিক্ষকের প্রশংসাপত্র, HSK অথবা IELTS সার্টিফিকেট থাকলে অবশ্যই বেশ এগিয়ে থাকা যাবে। প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ের পরে অধিকাংশ শিক্ষার্থীকে প্রথম ধাপে বাতিল করা হয়, আর বাকি টিকে থাকা প্রার্থীরা থাকে বাংলাদেশ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার অপেক্ষায়। নিশ্চিত বার্তা পেলে নির্ধারিত স্থানে গিয়ে সাক্ষাৎকার দিতে হয়।
আমার নিজ অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি CSC-A type এ ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদেরকে খুব কম নেওয়া হয়। বলতে পারেন প্রতি বছর ২-১ জন সুযোগ পায়। আপনি ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারী হয়ে থাকলে ভাল CGPA এর সাথে IELTS/HSK সার্টিফিকেটও আপনার থাকতে হবে।
আমি ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারীদেরকে পরামর্শ দেব CSC-B ক্যাটাগরিতে আবেদন করার জন্য।
মাস্টার্সের জন্যে রেজাল্টের তেমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তবে যত ভালো সিজিপিএ, রিসার্চ প্ল্যান, পাবলিকেশন এবং চাকরির অভিজ্ঞতা থাকবে, সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা ততই বেড়ে যাবে, সাথে যদি আরও থাকে IELTS এ ৬.৫-৭ ব্যান্ড স্কোর।
চীনে সিএসসি অনেক মর্যাদাপূর্ণ একটি স্কলারশিপ, যেখানে ব্যাচেলর শিক্ষার্থীদেরকে চাইনিজ মাধ্যমে অধ্যয়ন করতে হয়। ব্যাচেলরে CSC/CGS Scholarship মানেই চাইনিজ মাধ্যম, ইংরেজিতে পড়ার কোনো সুযোগ নেই।
আর মাস্টার্সে ইংলিশ এবং চাইনিজ দুই মাধ্যমেই পড়ার সুযোগ আছে। তবে মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা ইংরেজি মাধ্যমকেই বেশি প্রাধান্য দেয়।
ব্যাচেলরদের জন্যে সর্বমোট ৫ বছরের কোর্স, প্রথমে ১ বছর আপনাকে চাইনিজ ভাষা শিখতে হবে, তারপর ৪ বছর আপনার মেজর কোর্স আপনাকে চাইনিজ ভাষাতেই পড়তে হবে।
আর যদি কারো HSK লেভেল ৪ কিংবা ৫ করা থাকে, তবে তাকে আর ১ বছর চাইনিজ ভাষা পড়তে হবে না। সরাসরি সে মেজর কোর্সের ক্লাস শুরু করতে পারবে, অর্থাৎ তখন তার কোর্স হবে ৪ বছর।
সুবিধাদি:
এই  ফুল ফ্রি স্কলারশিপের অধীনে আপনি মাসিক বৃত্তি হিসেবে (ব্যাচেলর) ২৫০০ ইউয়েন করে পাবেন, দেশি টাকায় যা প্রায় ৩৩ হাজার। টিউশন খরচ ফ্রি, হোস্টেলে থাকা ফ্রি, এমনকি চিকিৎসা বীমাও বিনামূল্যে পাবেন।
মাস্টার্সেও একই সুবিধাদিই থাকবে শুধু বৃত্তি হিসেবে পাবেন ৩০০০ ইউয়েন, দেশি টাকায় যা প্রায় ৩৬ হাজার এবং পিএইচডিতে পাবেন ৩৫০০ ইউয়েন, যা দেশি টাকায় প্রায় ৪২ হাজারের মত। সেই সাথে বিমান ভাড়াও স্কলারশিপ কর্তৃপক্ষই প্রদান করবেন!
এখন কথা বলবো CSC-B ক্যাটাগরিতে চাইনিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আবেদন করার বিষয়ে।
সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আবেদন: এই প্রক্রিয়াটি বেশ সহজ এবং ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে কম, সেইসাথে সুযোগের সম্ভাবনাও অনেক বেশি। আবেদন শুরু হয় সাধারণত জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাস থেকে আর শেষ হয় জুন-জুলাইয়ের দিকে। CSC-B ক্যাটাগরিতে আপনি সর্বোচ্চ ৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে পারবেন । প্রথমেই যে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আবেদন করবেন, সেটি নির্বাচন করে নেবেন, তাদের আবেদনের প্রক্রিয়া এবং সময়সীমা ভালো করে দেখে নেবেন ওয়েবসাইট থেকে। তাদের কিছু বিষয় নির্দিষ্ট করা থাকে, ওই সমস্ত বিষয়গুলো মধ্যেই একটি মাত্র বিষয়ে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে CSC-B টাইপে আবেদন করতে পারবেন ব্যাচেলর, মাস্টার্স এবং পিএইচডি প্রোগ্রামে।
CSC-B এর সুবিধাদিও মন্ত্রণালয় -এ টাইপের মতোই থাকবে। শুধু চীনে আসার সময় বিমান ভাড়া দেয়া হবে না, অর্থাৎ বিমান ভাড়া নিজ খরচেই  ব্যবস্থা করতে হবে। আর মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যারা আবেদন করে আসবে, তারা পাবে বিনামূল্যে বিমানের টিকেট। আবার যখন ব্যাচেলর/মাস্টার্স কোর্স শেষ করে দেশে ঘুরতে যাবে, তারা তখনও আবার একটি বিনামূল্যের টিকেট পাবে। এ এবং বি ক্যাটাগরির মধ্যে কেবল এটুকুই পার্থক্য।
এখান থেকে প্রথমে আপনার পছন্দের বিষয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় খুঁজে নিন। সিএসসি বি-টাইপের জন্য (http://www.campuschina.org/universities/categories.html)
আর নিচের এই লিংকের মাধ্যমে পাওয়া যাবে পূর্ণাঙ্গ অনলাইন আবেদন।
সরাসরি চাইনিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আবেদন করতে পারবেন। আর মেইলের মাধ্যমে ভার্সিটির সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন। অ্যাকাডেমিক সার্টিফিকেট আর মার্কশিটের নোটারাইজড্ কপি ও অন্যান্য ডকুমেন্টসের হার্ড কপি চাইলে তা কুরিয়ার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক অফিসের ঠিকানায় পাঠাবেন। সেক্ষেত্রে আপনি ফাস্ট কুরিয়ার সার্ভিস কিংবা মাস্টার কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ডকুমেন্টস চাইনিজ বিশ্ববিদ্যালয়েগুলোতে পাঠাতে পারেন। এরা কম খরচে ডেলিভারি নিশ্চিত করে থাকে।
CSC-B ক্যাটাগরি তে ফলাফল আগস্ট এর মাঝামাঝি থেকে শেষের মধ্যে প্রকাশিত হয়ে থাকে, আপনি যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শর্ত পূরণ করে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হন, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় আপনাকে মেইল করে ফলাফল জানিয়ে দেবে এবং কুরিয়ার বা ডাকযোগে আপনার সব কাগজপত্র (অ্যাডমিশান নোটিস) পাঠিয়ে দিবে আপনার দেওয়া ঠিকানায়। এই কাগজগুলো নিয়ে ভিসার জন্য এম্ব্যাসিতে আবেদন করবেন এবং ভিসা হয়ে গেলে সেপ্টেম্বর এর প্রথম সপ্তাহে নিজ খরচে বিমান টিকিট সংগ্রহ করে চীনে চলে আসবেন।
আর CSC-A টাইপে আপনাকে বিনামূল্যে বিমান টিকিট দেওয়া হবে মন্ত্রণালয় থেকে, B-Type এ নিজে খরচে টিকিট করতে হবে।
কেউ যদি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আবেদন করতে চায়, আবার সেইসাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনেও B Category তে আবেদন করতে চায়, তাও করা যাবে। তবে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সর্বোচ্চ দুইটি এবং B category চাইনিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সর্বোচ্চ তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে করা যাবে।
মন্ত্রণালয়ের  মাধ্যমে CSC স্কলারশিপে আবেদন করলে কোনো প্রকার অ্যাপ্লিকেশান ফি দিতে হয় না৷
CSC-B টাইপে চাইনিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আবেদন করলে বেশিরভাগ চাইনিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাপ্লিকেশান ফি দেয়া বাধ্যতামূলক।
ব্যাচেলরে CSC স্কলারশিপ মানেই চাইনিজ মাধ্যমে পড়তে হবে, হোক সেটা Type-A অথবা Type-B। ইংরেজিতে পড়ার কোনো সুযোগ নেই।
CSC স্কলারশিপ নিয়ে কিছু কথা:
এ স্কলারশিপের অধীনে দুইটি ধারা রয়েছে বলা চলে,
১.Type -A (সবোর্চ্চ ২টি বিশ্ববিদ্যালয় নির্ধারণ)
২.Type -B (সবোর্চ্চ ৩ টি বিশ্ববিদ্যালয় নির্ধারণ)
Type A তে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আবেদন করতে হয় এবং Type B তে সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে হয়।
Type A এবং Type B এর বৃত্তি প্রক্রিয়া একইরকম হলেও সুক্ষ্ম কিছু পাথর্ক্য বিদ্যমান। বড় কোন পার্থক্য না থাকলেও জানা খুবই জরুরি, কারণ আপনি কঠিন একটি ভাষায় পড়াশোনা করতে আসবেন, বিষয়টি একদমই হেলাফেলা করার মতো নয় কিন্তু!
এবার মূল কথায় আসি(শুধু ব্যাচেলর)।
যারা Type A তে পড়াশোনা করতে আসবেন, তারা  নিধার্রিত পরীক্ষায় (চাইনিজ, গণিত, পদার্থবিদ্যা/রসায়ন) চাইনিজ বাদে বাকি বিষয়সমূহে অকৃতকার্য হলে মেজর সাবজেক্ট পরিবর্তনের সুযোগ পাবেন। সেক্ষেত্রে আপনি ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়তে আসলেও তা পরিবর্তন করে চাইনিজ বিজনেস  কিংবা চাইনিজ রাজনীতি – এ ধরনের মেজর  নিয়ে পড়ার সুযোগ পাবেন। কিন্তু আপিনি যদি Type B এ শিক্ষার্থী হন, তাহলে এ সুযোগটি পাবেন না। আপনাকে সবগুলো বিষয়েই করতে। তবেই আপনি  মেজর সাবজেক্ট নিয়ে পড়াশোনা করতে পারবেন নতুবা ১৫ কার্যদিবস এর মধ্যে দেশে ফেরত চলে আসতে হবে।
CSC ফাইনাল পরীক্ষায় ১৩৫ নাম্বারের মধ্যে আপনাকে ৯০ পেতে হবে, তবেই আপনি মেজরে যেতে পারবেন। CSC এর একটি নিয়ম হল, যদি কেউ ৭৫ এর বেশি মার্ক পায়, তাহলে তাকে আরো একটি বছর পড়াশোনা করার সুযোগ দেয়া হয়। টাইপ B তে এ সুযোগটি ভবিষ্যতে নাও থাকতে পারে।
সুতরাং টাইপ-বি সিএসসি স্কলারশিপ একটি অশনি সংকেত। যারা আসবেন, ভেবেচিন্তে প্রচুর পড়াশোনার মত মনমানসিকতা তৈরি করে তবেই আসবেন। আপনাকে অবশ্যই সপ্তাহে ৫ দিন সকাল ৮:৩০ থেকে রাত ৮:০০ টা পর্যন্ত ক্লাস করার মানসিকতা রাখতে হবে।

Source: https://www.bcysa.org/

One Comment

Leave a Reply

Leave a Reply to rana sarkar Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *