জার্মানির ড্যাড/DAAD ফুলফ্রি স্কলারশিপ, মাসে ৯৩৪ ইউরো সহ বিমান-বাড়িভাড়া ভাতা

বিদেশি শিক্ষার্থীদের সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামে পড়াশোনার সুযোগ দিচ্ছে জার্মানির সরকার। ডাড হেলমুট-শ্মিট মাস্টার্স স্কলারশিপের আওতায় নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের এই স্কলারশিপ দেওয়া হবে। বাংলাদেশসহ যেকোনো দেশের উচ্চশিক্ষাপ্রত্যাশী শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।

ডাড হলো জার্মানির অন্যতম একটি স্কলারশিপ। দ্য জার্মানি একাডেমিক এক্সচেঞ্জ সার্ভিস, যাকে সংক্ষেপে বলা হয় ডাড স্কলারশিপ। এটি প্রথম চালু হয় ১৯২৫ সালে। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাও এ স্কলারশিপে আবেদন করতে পারেন। এ স্কলারশিপে প্রতিবছর প্রায় দেড় লাখ শিক্ষার্থীকে অর্থায়ন করা হয়ে থাকে। ডিএএডি জার্মানির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৃত্তি। জার্মান একাডেমিক এক্সচেঞ্জ সার্ভিসের অর্থায়নে এ বৃত্তি দেওয়া হয়। উন্নয়নশীল দেশের স্নাতকোত্তর বা পিএইচডি শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারেন। যদিও সব বিষয়ে এ বৃত্তি পাওয়া যায় না।

ইউরোপের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ জার্মানিতে স্কলারশিপ ও স্টুডেন্ট ভিসা পাবার উপায়

সুযোগ-সুবিধা

জার্মানিতে অন্যান্য স্কলারশিপের তুলনায় ডাডের সুযোগ-সুবিধা অনেক বেশি। এ স্কলারশিপের জন্য নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা যে যে সুযোগ-সুবিধা পাবেন, তা হলো—

* টিউশন ফি ও পরীক্ষার ফি।

* মাসিক ভাতা (৯৩৪ ইউরো)।

* উড়োজাহাজের জন্য টিকিট।

* স্বাস্থ্যবিমা।

* বাড়িভাড়া ও পরিবারের সদস্যদের জন্য মাসিক ভাতার ব্যবস্থা।

* অধ্যয়ন ও গবেষণাকাজের জন্য ভর্তুকি।

* ৬ মাস মেয়াদি জার্মান ভাষা কোর্স।

আবেদনের যোগ্যতা

The required application documents are:

  • a ticked off checklist and list of criteria, signed by hand (print it out,
    sign it by hand, scan it and include it in your documents), indicating
    place and date of issue
  • the DAAD application form “Application for a research/study scholarship”
    (please type your answers or make sure they are clearly legible)
  • a single letter of motivation (even when applying for two master’s
    courses) including the date of issue and a precise account of your academic,
    professional and personal reasons for wishing to participate in
    the Helmut-Schmidt-Programme, as well as a detailed explanation of
    your choice of master’s course(s), indicating why your first choice of
    master’s course is your first choice, why your second choice is your
    second choice and how they will advance you academically and professionally,
    max. two pages long. You must provide the same letter of
    motivation to both courses you are applying for.
  • a curriculum vitae in reverse chronological order including the date
    of issue (format: Europass, please note: the Europass template does
    not include a date, please add it yourself) with exact information
    about your studies and practical experience; gaps of three months or
    more must be explained
  • copies of your higher education degree certificates. Please provide a
    certified translation if the original is not in German or English and
    make sure these are clearly legible.
  • a copy of your full set of transcript of records including an explanation
    of the grading system. Please provide a certified translation if the
    original is not in German or English and make sure these are clearly
    legible.
  • confirmations of relevant professional experience or internships
    and/or proof of relevant political activities or service to your community,
    such as volunteering or work for charities or NGOs, on
    headed paper, including an original (not scanned) or code certified
    digital signature, the date of issue and a stamp. If necessary, please
    provide a certified translation
  • proof of English language skills
  • a current written reference from your current employer or from a
    university lecturer only if you are a student at present, on headed paper,
    including an original (not scanned) or code certified digital signature, the date of issue and a stamp. If necessary, please provide a certified translation

* আবেদনের যোগ্যতা হিসেবে অবশ্যই স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হবে।

* সবশেষ ডিগ্রি প্রাপ্তির ৬ বছরের মধ্যে আবেদন করতে হবে।

* প্রার্থীকে উন্নয়নশীল দেশের হতে হবে।

* আবেদন ইংরেজি অথবা জার্মান ভাষায় করতে হবে।

* আবেদনপত্রের সঙ্গে সার্টিফিকেটসহ অন্যান্য ডকুমেন্ট পাঠাতে হবে।

The DAAD Helmut-Schmidt-Programme (known as Public Policy and Good Governance) supports future leaders from developing countries (see list of countries), who want to promote democracy and social justice in their home countries. The programme, which is funded by the German Federal Foreign Office, offers the chance to acquire a Master’s degree in Master programmes of particular relevance for the social, political and economic development in the students’ countries of origin. In the light of the principles of Good Governance, highly qualified graduates with a first academic degree are being educated in political science, law, economics and administration and prepared for future leading positions in their home countries.

আবেদন শেষ কবে

আবেদন করা যাবে আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত।

আবেদন কীভাবে

অনলাইনে আবেদন করা যাবে। আবেদন করতে এখানে

ভাষাগত যোগ্যতা হিসেবে কী লাগবে?

জার্মানিতে সাধারনত দুই ভাষাতে পাঠদান করা হয়ে থাকে, জার্মান ও ইংরেজি ভাষা। যদি কেউ জার্মান ভাষায় মাস্টার্স করতে চান, সেক্ষেত্রে বেসিক১ পর্যন্ত ভাষা কোর্স সম্পন্ন করা বাধ্যতামূলক। এই কোর্সটি ধানমণ্ডির গোয়েথে ইন্সটিটিউট থেকে করা যায়। তবে কেউ ইংরেজিতে মাস্টার্স করতে চান, সেক্ষেত্রে একেক বিশ্ববিদ্যালয়  একেক রকম সনদপত্র চেয়ে থাকে।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় যদি দেখে শিক্ষার্থী ইংরেজি মাধ্যমে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন,  তখন অনেক সময় আইএলটিএস চায় না। আবার কোন বিশ্ববিদ্যালয় আইএলটিএস বা টোফেলে ভালো স্কোরের সাথে সাথে জিআরইর স্কোরও চায়। এক্ষেত্রে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকেই নির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ঢুকে ভর্তির জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা  যাচাই বাছাই করে নিতে হবে।

এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, যে বিষয়ে মাস্টার্স করার জন্য আবেদন করছেন, তা যেন আপনার ব্যাচেলরে অধীত বিষয়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। এজন্য  আবেদন করার পূর্বে কোর্স কোঅর্ডিনেটরকে ইমেইল করে আপনার স্নাতক পর্যায়ে অধীত বিষয় নিয়ে একটু ধারণা দিতে পারেন। যেমন, আপনি ব্যাচেলরে কী কী বিষয় পড়েছেন। সাথে আপনার অর্জিত সিজিপিএ উল্লেখ করবেন।

এছাড়া আরো জানতে চাইবেন, উক্ত বিভাগে আপনি মাস্টার্স করার জন্য উপযুক্ত কিনা। হয়তো দুই এক কর্মদিবসের মধ্যেই আপনার ইমেইলের যথাযথ রিপ্লাই চলে আসবে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে জার্মান শিক্ষার্থীদের আড্ডা; source: DAAD Bangladesh

 যেভাবে আবেদন করবেন

  • প্রথমেই ইউনি এসিস্ট ওয়েবসাইটে ঢুকে নিজের নামে একটি আইডি খুলুন। তারপর যে বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করবেন, সেই বিশ্ববিদ্যালয় ও সাবজেক্ট সেকশনে ঢুকে তথ্যগুলো নির্ভুলভাবে লিপিবদ্ধ করবেন।  তারপর এখানকার আপলোড সেকশনে নিজের যাবতীয় সনদপত্র, ভাষার সনদপত্র, মোটিভেশন লেটার সংযুক্ত করুন। ফরমটি অনলাইনে সাবমিট করলে অটো পিডিএফ কপি জেনারেট হবে। সেই ফর্মটি প্রিন্ট করে নির্ধারিত জায়গাতে স্বাক্ষর করতে হবে।
  • বিশ্ববিদ্যালয় ওয়েবসাইটে ক্লিক করে পছন্দের সাবজেক্টের পেজে ঢুকে আবেদনপত্র ডাউনলোড করে প্রিন্ট করুন। এরপর সেটি নিজহাতে পূরণ করুন অথবা অনলাইনে পূরণ করার পর অটোজেনারেটেড পিডিএফ কপি প্রিন্ট করে নির্ধারিত স্থানে স্বাক্ষর করুন।
  • যে প্রতিষ্ঠানে স্নাতক  সম্পন্ন করেছেন, সেখানকার দুই বা তিনজন  প্রফেসরের (সহযোগী বা সহকারী প্রফেসর হলেও হবে) কাছ থেকে রিকমেন্ডেশন লেটার নিন। এক্ষেত্রে শিক্ষকদের অফিসিয়াল প্যাড ব্যবহার করবেন।  রিকমেন্ডেশন লেটারে অবশ্যই নির্বাচিত বিষয়ের নাম ও কোথায় পড়তে যাবেন, তার উল্লেখ থাকতে হবে।
  •  ব্যাচেলর সার্টিফিকেট, ট্রান্সক্রিপ্ট, আইএলটিএস সার্টিফিকেট ও এসএসসির সার্টিফিকেট কোন সরকারি উকিলের কাছ থেকে নোটারি করিয়ে নিন। অথবা জার্মান এমব্যাসি থেকে সত্যায়িত করিয়ে নিলেও চলবে।
  •  একটি মোটিভেশনাল লেটার লিখতে হবে ৷ এর স্যাম্পল কপি গুগলে সার্চ দিলেই পাওয়া যায়। এখানে যে বিষয়ে পড়তে যাবেন, সেই বিষয়ের প্রতি নিজের ভালোবাসার কথাগুলো গুছিয়ে লিখতে হবে। লেখা যেন অতিরিক্ত তৈলাক্ত না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
  •   টাকা পাঠানোর জন্য  ব্যাংক একাউন্টের ডিটেইলস ইউনি এসিস্ট ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা আছে৷ আবেদন পত্রসহ পাসপোর্ট নিয়ে যে কোন ব্যাংকের বৈদেশিক বিনিময় শাখায় যেতে হবে। সেখান থেকে পচাঁত্তর ইউরোর সমপরিমাণ টাকা ইউনিএসিস্টের ব্যাংক একাউন্টে ট্রান্সফার করুন। টাকা পাঠানোর একটা প্রুফ কপিও সেখান থেকে সংগ্রহ করুন। এখানে টাকা পাঠানোর দিকনির্দেশনা ব্যাংক কর্তৃপক্ষই দিয়ে দেবেন। অবশ্য ইন্টারন্যাশনাল ক্রেডিট কার্ড (মাস্টার কার্ড, ভিসাকার্ড, পেপ্যাল) থাকলে সহজেই এই টাকা ট্রান্সফারের জটিলতা এড়ানো যায়।

সবকিছু সংগ্রহ করার পর কাগজগুলো নিচের সিরিয়াল অনুযায়ী সাজাতে হবে।

  • ইউনিএসিস্টের আবেদন পত্র
  • বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদন পত্র
  • ব্যাচেলর ডিগ্রির সনদপত্র, ট্রান্সক্রিপ্ট ও এসএসসির সনদপত্রের নোটারাইজড বা সত্যায়িত কপি
  • মোটিভেশন লেটার
  •  দুই বা তিনটি রিকমেন্ডেশন লেটার
  •   বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যয়নকপি (যদি থাকে)
  • আইইএলটিএসের নোটারাইজড বা সত্যায়িত কপি

কাগজগুলো স্ট্যাপল বা জেন্টসক্লিপে আটকে একটি এফোর (A4) সাইজের মোটা এনভেলপে ইউনিএসিস্টের নির্ধারিত ঠিকানায় পাঠিয়ে দিন। তবে সরকারী পোস্ট ব্যবহার না করে ডিএইচএল বা ফেডএক্সে কুরিয়ার করলে আবেদনপত্র কখন পৌঁছালো, তা ট্র্যাক করে জেনে নিতে পারবেন।  আপনার চিঠিপত্র ও টাকা ইউনিএসিস্টে পৌঁছানো মাত্রই তারা আপনাকে কনফার্মেশন মেইল পাঠিয়ে জানিয়ে দেবেন।

এছাড়া তিন থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে ইউনিএসিস্ট আপনাকে দুইটি মেইলের মাধ্যমে আবেদনের ব্যাপারে আপডেট জানাবে। প্রথম ইমেইলটিতে আপনার ব্যাচেলর ডিগ্রির ইভ্যালুয়েশন রিপোর্ট অর্থাৎ জার্মান গ্রেডে আপনার রেজাল্ট কেমন, সে সম্পর্কে জানানো হবে। দ্বিতীয় ইমেইলটিতে আপনার কাগজপত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তের জন্য পাঠিয়ে দেয়ার বিষয়টি জানানো হবে। এরপর সব ঠিক থাকলে দুই একমাসের মধ্যেই আপনি এডমিশন লেটারটি হাতে পেয়ে যাবেন।

জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অ্যাডমিশন লেটার হাতে পেয়েই ভেবে বসবেন না, আপনি জার্মানি চলে যাচ্ছেন। এখনো আপনার আসল কাজ বাকি রয়ে গেছে। কারণ আপনি যতই অ্যাডমিশন লেটার পান না কেন, জার্মান এমব্যাসি আপনাকে ভিসা না দিলে আপনি কখনোই যেতে পারবেন না।  তাহলে চলুন আজ জেনে নেয়া যাক, জার্মান ভিসাপ্রাপ্তির নিয়মকানুন ও পদ্ধতি সম্পর্কে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *