কীভাবে বাংলাদেশ থেকে সুইডেনের স্টুডেন্ট ভিসা পাবেন

আন্তর্জাতিক মানে শিক্ষার জন্য সুইডেন অসাধারণ একটি দেশ, যেখানে আপনাকে শুধু ক্লাস করলেই হবে না। ক্লাসের পাশপাশি গ্রুপ ডিসকাশন ও ইন্ডিপেন্ডেন্ট স্টাডির উপর অনেক জোর দেয়া লাগবে। সুইডেনের উচ্চ শিক্ষা ব্যবস্থা, বিভিন্ন খাতে শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সুইডেনে ১৫টির বেশি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। যার মধ্যে উচ্চশিক্ষা প্রদানকারী বিশ্ববিদ্যালয় ৫টি, আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় ২টি ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ১টি।

কীভাবে বাংলাদেশ থেকে সুইডেনের স্টুডেন্ট ভিসা পাবেন

সুইডেনে স্কলারশিপ, খুঁজে নিন আপনারটি

স্টুডেন্ট ভিসায় সুইডেন যাত্রা

Source: thelocal.se

সুইডেনে কেন পড়াশোনা করবেন?

আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য সেরা কয়েকটি স্থানের মধ্যে একটি হচ্ছে সুইডেন। এছাড়াও,

১. এখানে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত ডিগ্রি প্রদানকারী অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে।

২. তুলনামূলকভাবে স্বল্প টিউশন ফি দিয়ে পড়াশোনা করতে পারবেন।

৩. স্বল্প খরচে বাস করতে পারবেন।

৪. শিক্ষা খাতে নিত্যনতুন বৈচিত্র্য দেখতে পাবেন।

৫. পড়ালেখার পাশাপাশি কাজ করার সুযোগ পাবেন।

৬. আইইএলটিএস নাম্বার দিয়ে সুইডেনে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করা যায়।

৭. অনেক ধরনের কোর্স থেকে নিজের পছন্দমতো কোর্স বাছাই করে পড়তে পারবেন।

৮. থিওরি ও প্র্যাকটিসের উপর অনেক গুরুত্ব সহকারে পড়াশোনা করতে পারবেন।

৯. স্কিল ডেভেলপমেন্ট ও এক্সপেরিয়েন্সড লার্নিংয়ের উপর গুরুত্ব দিতে পারবেন।

১০. পড়ালেখার পাশাপাশি ভ্রমণেও মনোযোগী হতে পারবেন।

Source: immigrationworld.com

সুইডেনের অ্যাকাডেমিক স্ট্রাকচার

সুইডেনের শিক্ষা ব্যবস্থা কলেজ ও ইউনিভার্সিটি লেভেল বিভক্ত। সুইডেনের বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোই উচ্চ শিক্ষা প্রদান করে। ইউনিভার্সিটিগুলোতে অ্যাকাডেমিক উচ্চ শিক্ষা প্রোগ্রামগুলো মূলত স্বাধীন গবেষণার সাথে সম্পৃক্ত বিষয়গুলোতে আলোকপাত করে এবং আপনি চাইলে স্বাধীন গবেষণার সাথে সম্পৃক্ত যেকোনো বিষয় নিয়ে এখান থেকে গ্র্যাজুয়েট করতে পারবেন। এছাড়াও এখানে প্রফেশনাল অ্যাক্টিভিটিসের জন্য তারা আপনাকে থিওরিটিক্যাল ব্যাকগ্রাউন্ড প্রদান করবে। তাদের অ্যাকাডেমিক শিক্ষা ব্যবস্থা মূলত ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড অফ অ্যাকাডেমিক এডুকেশনের অন্তর্ভুক্ত।

Source: immigrationexperts.pk

প্রফেশনাল উচ্চ শিক্ষা প্রোগ্রামগুলো মূলত বিভিন্ন বিষয়াদির গভীরে আলোকপাত করে এবং আপনি চাইলে যেকোনো বিষয় নিয়ে এখান থেকে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করতে পারবেন। তারা বর্তমানে যেসব বিষয় নিয়ে প্রফেশনাল উচ্চ শিক্ষা প্রদান করছে সেগুলোর মধ্যে কয়েকটি হচ্ছে বিজ্ঞান, টেকনোলজি, রিসার্চ, ম্যাথ, মার্কেটিং, সফটওয়্যার ইত্যাদি। শিক্ষার্থীরা মূলত এক্ষেত্রে যেকোনো একটি বিষয় বাছাই করে সেটার উপর যথেষ্ট গুরুত্বের সাথে বিষয়টির গভীরে গিয়ে শিক্ষা গ্রহণ করবে। প্রফেশনাল এডুকেশনের সময়সীমা চার বছর। আপনি চাইলে ব্যাচেলর অফ সায়েন্সের পাশাপাশিও প্রফেশনাল উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবেন।

Source: studyinsweden.se

সুইডেনের ভিসা সম্পর্কিত তথ্যাবলি

সুইডেনে ভ্রমণের উদ্দেশ্যের উপর নির্ভর করে বিভিন্ন ধরণের ভিসা রয়েছে। আপনি যদি সুইডেনে পড়াশোনা করার জন্য যেতে চান কিংবা শুধুমাত্র ট্র্যাভেলিংয়ের জন্য যেতে চান অথবা সুইডেনে বসবাসের জন্য যেতে চাইলে আপনাকে বিভিন্ন ধরণের ভিসা গ্রহণ করতে হবে। এই আর্টিকেলে আমরা শুধুমাত্র স্টুডেন্ট ভিসা সম্পর্কিত তথ্যবলি নিয়ে আলোচনা করবো। উল্লেখ্য যে, সুইডেনে স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে চাইলে, শুরুতেই আপনাকে বিশ্ববিদ্যালয় বাছাই করে তারপরে আবেদন করতে হবে।

Source: youtube.com

সুইডেনের স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে হলে যেসব ডকুমেন্টের প্রয়োজন পড়বে সেগুলো হচ্ছে,

১. সুইডেনের ভিসা আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হবে।

২. দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি। ছবিগুলো অবশ্যই সত্যায়িত করতে হবে।

৩. আপনার অরিজিনাল পাসপোর্টের কপি।

৪. ব্যাংক ব্যালেন্সের সাথে ট্র্যাভেল কনফার্মেশন লেটারের কপি।

৫. ‘কেন আপনি সুইডেনে যেতে চাইছেন’ এই বিষয়ের উপর একটি কাভার লেটার।

৬. আপনার ফ্লাইট সম্পর্কিত সব ধরণের তথ্য ও টিকেটের কপি।

৭. কিংডম অফ সুইডেনের অন্তর্ভুক্ত যেকোনো একটি হোটেল রিসার্ভেশনের কপি।

৮. আপনার সিভিল স্ট্যাটাস বোঝানোর জন্য বিয়ের সার্টিফিকেট অথবা জন্ম নিবন্ধন পত্রের কপি।

৯. এনরোলমেন্টের সত্যায়িত কপি।

১০. সুইডেনের যে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চাইছেন সেখান থেকে লিভ অ্যাপ্রুভাল লেটারের কপি সংগ্রহ করতে হবে।

১১. সুইডেনের যে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চাইছেন সেখান থেকে অ্যাকাডেমিক ডকুমেন্ট, ট্রান্সক্রিপ্ট, ডিপ্লোমা বা ডিগ্রি সার্টিফিকেট, টেস্টিমোনিয়াল ইত্যাদির কপি।

১২. টিউশন ফিসহ পেমেন্ট রিসিট।

১৩. আইইএলটিএস (IELTS) স্কোর / ইংরেজি ভাষার দক্ষতা পরীক্ষার স্কোর।

Source: sahlgrenska.gu.se

যেভাবে ভিসার জন্য আবেদন করবেন

স্টুডেন্ট ভিসার ধরন নির্বাচন করে, ভিসার আবেদন ফর্ম ডাউনলোড করুন। তারপর সেটা পূরণ করে অনলাইনেই আবেদন করুন। উল্লেখ্য যে, আপনি যেকোনো ট্র্যাভেল এজেন্সি অথবা সুইডিশ ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার থেকেও ভিসার আবেদন ফর্ম সংগ্রহ করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে আলাদা সার্ভিস ফি প্রযোজ্য। আবেদন করার পর, বিভিন্ন সাপোর্টিং ডকুমেন্টেশন ভিসার আবেদন ফর্মের সাথে সংযুক্ত করতে হবে। সাপোর্টিং ডকুমেন্ট ওয়েবসাইট থেকে স্ক্যান করাতে হবে। সুইডিশ ভিসা সাপোর্টেড অফিসে সকল ধরনের সাপোর্টিং ডকুমেন্টের কপি জমা দিতে হবে।

Source: efdinitiative.org

যদিও এই ধাপটি সবার জন্য প্রযোজ্য নয়। আপনার ভিসা আবেদন ফর্মের সাথে সাপোর্টিং ডকুমেন্টে যদি কোনো সমস্যা থাকে, তাহলে সে সমস্যার সমাধান করার জন্যই আপনাকে ভিসা অফিসে যেতে হবে।

Source: goteborg.se

ভিসা আবেদন করার পরে কী করতে হবে?

সুইডেনের স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করার পর, আপনার জন্মদিন ও ভিএলএন নাম্বার দিয়ে ভিসার অবস্থান ট্র্যাকিং করতে পারবেন। ভিসার অবস্থান ট্র্যাকিং করার জন্য এখানে ক্লিক করুন।  ভিসা ও ভর্তির প্রসেসিং হওয়ার জন্য কমপক্ষে ৯০ থেকে ১২০ দিন লাগতে পারে। অনলাইনে ভিসার আবেদন করার জন্য সর্বোচ্চ ২০০০০ টাকা থেকে ৩০০০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। অনলাইন ভিসা অ্যাসিস্ট অ্যাকাউন্ট করার জন্য ১০০০ টাকা থেকে ১৩০০ টাকা খরচ হবে। বায়োমেট্রিক এনরোলমেন্টের জন্য ২৫০০ টাকা থেকে ২৮০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।

Source: greenofficemovement.org

সুইডেনের বসবাসের অবস্থা কেমন?

সুইডেনের আবহাওয়া ও পরিবেশ অসাধারণ। পড়ালেখার পাশাপাশি আপনি চাইলে ভ্রমণেও মনোযোগ দিতে পারবেন। সুইডেন মূলত স্ক্যান্ডিনেভিয়ান নর্ডিক দেশগুলোর অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় সম্পূর্ণ সুইডেনের প্রকৃতির অসাধারন রূপ দেখতে পাবেন। সুইডেনের প্রায় প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়েই বিভিন্ন সাংস্কৃতিক দলের সাথে কাজ করতে পারবেন। বিভিন্ন অ্যাক্টিভিটির সাথে জড়িত থাকার সুযোগ পাবেন। প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়েই বিভিন্ন ধরণের ক্লাব রয়েছে। বসবাসের অবস্থানের উপর ভিত্তি করে আপনি চাইলে প্রত্যেক সপ্তাহে ৭০০০ টাকা থেকে ১৫০০০ টাকা খরচ করে ভালোমানের স্টুডেন্ট হোস্টেলে থাকতে পারবেন।

One Comment

Leave a Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *