সফলভাবে মার্কেটিং করতে সার্চ ইঞ্জিনে কনটেন্ট দৃশ্যমান করবেন যেভাবে

photo: centrinity

ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন করা অপরিহার্য একটি বিষয়। যদি আপনি ভালো এসইও করতে পারেন তবে বিপুল সংখ্যক দর্শকের কাছে পৌঁছাতে পারবেন এবং স্বভাবতই তাতে আপনার ক্রেতা বা গ্রাহক সংখ্যাও বাড়বে বিপুল পরিমাণ। তবে এসইও একদিনে করার মতো কোনো বিষয় নয়। এটি সবসময় করে যেতে হয়।

একটি ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে বিপুলসংখ্যক মানুষের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে ক্রমাগত এই প্রচেষ্টা আপনাকে চালিয়ে যেতে হবে। আপনার সাইটের যেকোনো পরিবর্তন, পরিবর্ধন এবং সংযোজন সবসময়ই এসইওর মাধ্যমে আপডেট করতে হবে, যেন সামগ্রিকভাবে আপনার ওয়েবসাইটটি সর্বসাধারণের কাছে সবার আগে দৃশ্যমান হয়।

photo: centrinity

এসইওর ক্ষেত্রে বিভিন্ন জন বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তবে এ প্রসঙ্গে যত কথাই বলা হোক না কেন, কনটেন্ট বা বিষয়বস্তু এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যদি আপনার ওয়েবসাইটের কনটেন্ট বা বিষয়বস্তু প্রাসঙ্গিক এবং উচ্চমান সম্পন্ন হয় তবে অবশ্যই আপনি আশানুরূপ ভিউ পাবেন। আর কনটেন্টের মান যদি ভালো না হয় তবে খুব ভালো এসইও করেও আশানুরূপ ফল পাওয়া যায় না। কেননা এসইওর কল্যাণে হয়তো আপনার কনটেন্ট বিপুলসংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছায়, কিন্তু সেই কনটেন্টে প্রবেশ করে দর্শক যখন বিশ্বাসযোগ্যতা পায় না বা সন্তুষ্ট হতে পারে না তখন খুব দ্রুতই তারা সাইট থেকে বের হয়ে যায়। এই কারণে ভাল এসইও করা সত্বেও আপনার সাইট ভালো র‌্যাংক করে না।

এই নিবন্ধে ব্যবসা ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ওয়েবসাইট সার্চ ইঞ্জিনে কিভাবে র‌্যাংক করানো যায় তা নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। আশা করি এই নিবন্ধ আপনার ব্যবসায় সমৃদ্ধ আনতে সহায়তা করবে।

নতুনভাবে এসইও করতে মনস্থির করুন

আগেই বলেছি, এসইও একদিনে করে ফেলার মতো কোনো বিষয় নয়। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। সাথে সাথে এই চলমান প্রক্রিয়ায় সময়ের প্রয়োজনে নানান ধরনের পরিবর্তন, পরিবর্ধন আসবে, এই পরিবর্তনকে আলিঙ্গন করতে হবে। ওয়েবসাইটের দৃশ্যমানতা বাড়ানোর প্রচেষ্টা চালানোর পূর্বে এটা নিশ্চিত করা দরকার যে, আপনি ভালো ফল পেতে ওয়েবসাইটে সম্পর্কিত সকল ধরনের পরিবর্তন আনতে প্রস্তুত; যেসব পরিবর্তন আপনার ওয়েবসাইটের ম্যাট্রিক্স এবং অ্যালগরিদমকে নতুনভাবে সার্চ ইঞ্জিনের সাথে পরিচয় করিয়ে দিবে। ওয়েবসাইটের কনটেন্টের র‌্যাংকিং নির্ধারিত হয় কনটেন্টের ম্যাট্রিক্স এবং অ্যালগরিদমের ভিত্তিতে।

photo: mark lovett design

সুতরাং সবার আগে নিশ্চিত করা দরকার যে, আপনি সাইটের এই প্রয়োজনীয়তা পূরণ করেছেন। সাথে সাথে এটাও নিশ্চিত করুন যে, আপনার কনটেন্ট মার্কেটিংয়ের কৌশল যেকোনো মুহূর্তে সাইটের সবধরনের পরিবর্তনকে আমলে নিয়ে কাজ করতে পারে। কার্যকর এসইও কনটেন্টের কপিরাইট, কী-ওয়ার্ড নির্ধারণ এবং আরো অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের সাথে জড়িত। সুতরাং মূলকথা হলো, আপনার পুরনো ধ্যান-ধারণার এসইও পদ্ধতির পরিবর্তন করে আধুনিক পদ্ধতি গ্রহণ করুন।

সাইট ব্যবহারকারীদের চাহিদার দিকে গুরুত্ব দিন

আপনি ব্যবহারকারীদের প্রত্যাশা অনুযায়ী কনটেন্ট দিতে পারছেন কিনা বা ব্যবহারকারীদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছেন কিনা এই বিষয়টি সার্চ ইঞ্জিনের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সার্চ ইঞ্জিনের অ্যালগরিদম এমনভাবে সাজানো যে আপনি না চাইলেও এই বিষয়টি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে সার্চ ইঞ্জিন বিশ্লেষণ করে আর তার ভিত্তিতেই আপনার সাইটকে র‌্যাংক করিয়ে থাকে।

photo: breakingviews

সুতরাং যদি আপনার কনটেন্ট ব্যবহারকারীর প্রত্যাশা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়, তবে এখনই আপনার মার্কেটিং কৌশল পরিবর্তন করুন। আপনি যদি বিপুল সংখ্যক দর্শক পেতে চান তবে সবার আগে আপনাকে ভাবতে হবে তারা আসলে কী চায়। তারা সহজেই সার্চ করে তাদের প্রত্যাশিত বিষয়টি যে সাইট থেকে পায় সেখান থেকেই গ্রহণ করতে পছন্দ করে।

মনে রাখবেন, আপনি ব্যবহারকারীদের কাছে ভালো কন্টেন্টের বাইরে বিশেষ কেউ না। সুতরাং তারা আপনাকে নামে চিনবে না, আপনাকে ভালো কনটেন্ট দিয়েই দর্শকের মন জয় করতে হবে। এর জন্য আপনার কনটেন্ট তৈরি এবং তা মার্কেটিংয়ের যাবতীয় পুরনো কৌশল পরিবর্তন করে সময়োপযোগী করতে হবে।

কনটেন্ট বা বিষয়বস্তু জুড়ে গুঞ্জন সৃষ্টি করুন

কনটেন্ট বা বিষয়বস্তু জুড়ে যথেষ্ট গুঞ্জন সৃষ্টি করা খুব বেশি প্রয়োজনীয়। এই বিষয়টিই নিশ্চিত করে যে, আপনার কনটেন্টের দৃশ্যমানতার উন্নতি হচ্ছে। অনলাইনে অসংখ্য মার্কেটিং টুলস আছে, আছে নানান ধরনের কৌশল। এইসব টুলস ও কৌশলের যথাযথ ব্যবহারই আপনার কনটেন্টের ভালো ভিউ নিশ্চিত করবে।

photo: marketingland

ভালোভাবে নিশ্চিত করুন যে, আপনার সাইটের কনটেন্ট বিপুলসংখ্যক মানুষের কাছে দৃশ্যমান করতে সম্ভাব্য সকল সৃজনশীল পদ্ধতি আপনি ব্যবহার করেছেন। যদি যথাযথভাবে সবধরনের সৃজনশীল পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন তবে নিশ্চয়ই আপনার ওয়েবসাইটে দর্শক স্থায়ী হবে। দর্শকের স্থায়িত্ব বা তাদের আপনার ওয়েবসাইট ব্যবহারের ব্যাপ্তি নিশ্চিত করে ওয়েবসাইটের ভালো র‌্যাংকিং। সুতরাং শুধু ওয়েবসাইটকে বিপুলসংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া নয়, বরং তাদের ওয়েবসাইটকে ধরে রাখাটাও সমান গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলা ভাষায় একটা প্রচলিত কথা আছে “স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা কঠিন”। এসইওর ক্ষেত্রেও ঠিক তেমন! দর্শক ডেকে আনার চেয়ে তাদের সংযুক্ত রাখা বেশি কঠিন।

photo: verticalresponse

কাজেই বিপুল সংখ্যক দর্শকের কাছে পৌঁছানোর মতো দর্শক ধরে রাখার দিকেও সমান জোর দিতে হবে।

সুতরাং তিনটি বিষয়- পুরনো ধ্যান-ধারণা পাল্টে এসইওর নতুন পদ্ধতি প্রয়োগ করুন, ভালো কনটেন্ট তৈরি করুন এবং সেই কন্টেন্টে শুধুবিপুলসংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া নয় তাদের ওয়েবসাইটে ধরে রাখার চেষ্টা করুন। আজ এই তিনটি পরামর্শ। এ বিষয়ে আমি আরও একটি নিবন্ধ আরো কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করার আশা রাখছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *