বিমানবন্দরে যে ১০টি কৌশল আপনার অনেক উপকারে আসবে

আগে থেকেই আপনার নিজের জন্য সবচেয়ে ভালো সিটটি নির্বাচন করে রাখুন; Image Source: brightside.com

প্রতিটি বিমানবন্দরেই রয়েছে বিশেষ কিছু নিয়ম। তাদের মধ্যে বেশিরভাগ নিয়মই শুধুমাত্র কর্মচারীরা জানেন। যেমন ধরুন আপনার ফ্লাইট এর  আগে কিছু সময় আছে এবং আপনি কিছু খেতে চাচ্ছেন। কিন্তু বেশীরভাগ দোকানেরই খাবারের দাম অনেক বেশী কিন্তু এয়ারপোর্টের ভিতরের কর্মচারীরা জানেন কোথায় কম দামে ভালো খাবার পাওয়া যাবে। আবার কিভাবে আপনি বিভিন্ন এয়ারলাইনস থেকে উপহার পেতে পারেন তাও কেবল কর্মচারীদেরই জানা। 

আপনার ভ্রমণকে আরো সুন্দর করার জন্য এইসব কৌশলগুলো জানা খুবই জরুরী। এসব ট্রিকস আপনার ভ্রমণযাত্রাকে আরো সুন্দর করে তুলবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক বিমানবন্দরে যেসব ছোটখাটো কৌশলগুলো আপনার অনেক উপকারে আসবে।

১. আপনার পোষা প্রাণীকেও আপনার সাথে নিয়ে ভ্রমণ করতে পারেন

আপনার ভ্রমণসঙ্গী হতে পারে আপনার পোষা প্রাণীটিও; Image Source: brightside.com

আপনি যদি ভ্রমণ করতে ভয় পান সেক্ষেত্রে আপনি আপনার পোষা প্রাণীটিকে আপনার ভ্রমণসঙ্গী হিসেবে নিতে পারবেন। তবে তার আগে আপনাকে আপনার চিকিৎসকের কাছ থেকে নিতে হবে অনুমতি পত্র। তিনি যদি বলেন যে, আপনি একা ভ্রমণে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না সেক্ষেত্রে আপনি আপনার সাথে পোষা প্রাণী নিয়ে যেতে পারবেন। কিন্তু তাও এর আগে আপনাকে বিমানবন্দরে এবং আপনি যে এয়ারলাইন্সে যাত্রা করবেন তার কাছ থেকে পারমিশন নিতে হবে।

২. আপনি চাইলেই আপনার পছন্দের শ্যাম্পু নিতে পারবেন এবং বিভিন্ন ট্রাভেল কিট ব্যবহারের মাধ্যমে কম জায়গায় অনেকগুলো জিনিস নিতে পারবেন।

চাইলেই সাথে নিতে পারেন আপনার পছন্দের শ্যাম্পু; Image Source: brightside.com

বিভিন্ন কসমেটিক্সের দোকানে গেলেই আপনার পছন্দের ট্রাভেল কিট পেয়ে যাবেন। বাজারে বিভিন্ন রকমের ছোট বোতল পাওয়া যায় যেগুলোর ভিতর খুব সহজেই আপনার প্রয়োজনীয় বিভিন্ন তরল দ্রব্যাদি বা জেল যেমনঃ শ্যাম্পু, ফাউন্ডেশন, টুথপেস্ট নিয়ে যেতে পারবেন সাথে করে।

৩. প্রতিবন্ধী, বয়স্ক কিংবা ছোট যাত্রীদের জন্য বিমানবন্দরে সাহায্য করার জন্য কর্মী থাকে।

৩ প্রতিবন্ধী, বয়স্ক কিংবা ছোট যাত্রীদের জন্য বিমানবন্দরে সাহায্য করার জন্য কর্মী থাকে; Image source: brightside.com

কিছু কিছু বিমানবন্দরে তাদের নিজস্ব কিছু সুবিধা  থাকে, এই সুবিধার মাঝে রয়েছে বয়স্ক, অক্ষম -অপ্রাপ্ত বয়স্ক যাত্রীদের জন্য সাহায্যকারী থাকে। তারা বিভিন্ন ধরণের জরুরী চিকিৎসা সাহায্য, নিরাপত্তা প্রভৃতি সাহায্য দিয়ে থাকে। আর এইসব সাহায্য প্রতিবন্ধী, অক্ষম, বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য বিনামূল্যে প্রদান করা হয়।

৪. সংযুক্ত ফ্লাইটের খরচ তুলনামূলক ভাবে কম এবং সাথে বোনাস হিসেবে কোন ভালো হোটেলে একরাত থাকতেও পারবেন।

Image Source: brightside.com

হ্যাঁ, যদিও সংযুক্ত ফ্লাইটে সময় অনেক লেগে যায় কেননা এমন ফ্লাইটে আপনার যাত্রাপথ অনেক গুণ বেড়ে যায়। তবে সব খারাপের মাঝে ভালো কিছু ্দিকও থাকে। যেমন ধরুন, আপনার সংযুক্ত ফ্লাইট যদি আট ঘন্টা বা তার বেশী সময়ের জন্য অন্য কোনো এয়ারপোর্টে থামে সেক্ষেত্রে আপনি এয়ারলাইন্স থেকেই রাতে থাকা কিংবা বিশ্রাম নেয়ার জন্য ভালো দামী হোটেলের রুম দেয়া হবে। আবার অনেক সময় এক্সট্রা হিসেবে সাথে ঐ শহর ঘুরে দেখার সুযোগও পেতে পারেন। আবার ডাইরেক্ট ফ্লাইটের চেয়ে সংযুক্ত ফ্লাইটের টিকেটের দামও অনেক কম হয়ে থাকে। তাহলে সংযুক্ত ফ্লাইটই তো ভালো, তাই না?

৫. আশেপাশের যাত্রীদের কথা শুনুন, অনেক সময় তাদের কথায় বিভিন্ন অজানা ব্যাপার উঠে আসে।

আশেপাশের যাত্রীদের কথা শুনুন, অনেক সময় তাদের কথায় বিভিন্ন অজানা ব্যাপার উঠে  আসে; Image Source: asiaone.com

কিছু বিমানবন্দর, যেমন সিঙ্গাপুরের চাঙ্গী বিমানবন্দর, সেখানে রয়েছে বিনোদনের ব্যবস্থা, বাচ্চাদের জন্য রয়েছে খেলার মাঠ। বড়দের জন্য রয়েছে রোলার কোস্টার সিহ বিভিন্ন রাইড।

৬. ক্ষুধার্ত? বিমানবন্দরের কর্মচারীরা যেখানে তাদের খাবার গ্রহণ করেন সেখানে খেতে পারেন।

ক্ষুধার্ত? বিমানবন্দরের কর্মচারীরা যেখানে তাদের খাবার গ্রহণ করেন সেখানে খেতে যান; Image Source: brightside.com

বিমানবন্দরে প্রায় সবগুলো দোকানেই খাবারের দাম থাকে আকাশচুম্বী। আপনি সেখানে এক বোতল পানি খেতে গেলেও আপনাকে গুণতে হবে সাধারণ দামের থেকে দ্বিগুন টাকা। আবার অনেক সময় ফ্লাইট বিলম্ব হওয়ার দরুন আপনাকে বাধ্য হয়ে বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ দোকান থেকে খাবার খেতে হতে পারে। কিন্তু বলে রাখা ভালো যে, এসব খাবারের দাম অনেক হলেও খেতে ভালো না একদমই (ক্ষেত্রবিশেষে আলাদা)। তাই নিজের সুবিধার জন্য আপনি খেয়াল করুন কর্মচারীরা কোন দোকান থেকে খায়। কেননা তারা জানে কোন দোকানে খাবারের মান ভালো এবং দাম কম। এতে করে আপনার টাকাও বেঁচে গেলো আর খাবারের মানটাও ভালো হলো।

৭. সব জায়গায়তেই ফ্রি ওয়াইফাই রয়েছে।

সব জায়গায়ই ফ্রি ওয়াইফাই রয়েছে; Image Source: brightside.com

পুরো বিমানবন্দরেই রয়েছে ফ্রি ওয়াইফাই। তবে সব জায়গায় ওয়াইফাই ভালো সিগন্যাল পায় না। কিছু বিশেষ বিশেষ জায়গায় সবসময় ওয়াইফাই অনেক ভালো সিগন্যাল থাকে। সেই জায়গাগুলো হলঃ

  • ওয়েটিং রুম
  • লাউঞ্জ এবং তার আশেপাশের এলাকা
  • ক্যাফে এবং তার আশেপাশের এলাকা
  • ক্যাপসুল হোটেল

৮. হেডফোন বা চার্জার ফেলে রেখে এসেছেন?

আপনি আপনার হেডফোন বা চার্জার ফেলে রেখে এসেছেন? ; Image Source: brightside.com

প্রতিটি বিমানবন্দরেই রয়েছে একটি ‘লস্ট এন্ড ফাউন্ড’ কর্ণার। বিভিন্ন যাত্রী তাদের অনেক জিনিস ভুলে ফেলে রেখে চলে যায়। এগুলো সব লস্ট এন্ড ফাউন্ডে জমা থাকে। আপনি যদি আপনার হেডফোন বা চার্জার বাসায় ভুলে রেখে চলে যান, তবে ‘লস্ট এন্ড ফাউন্ড’ কর্ণারে যান। সেখান থেকে আপনি বিনামূল্যে হেডফোন কিংবা চার্জার নিতে পারবেন।

৯. আগে থেকেই নিজের জন্য সবচেয়ে ভালো সিটটি নির্বাচন করে রাখুন।

আগে থেকেই আপনার নিজের জন্য সবচেয়ে ভালো সিটটি নির্বাচন করে রাখুন; Image Source: brightside.com

বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইট আছে যেখানে আপনি আগে থেকেই নিজের পছন্দের সিট নির্বাচন করতে পারেন। আপনি অবশ্যই চাইবেন না যে দুইজন ব্যক্তির মাঝে একা বসতে। কিংবা আপনার বাইরে তাকাতে ভয় লাগে, আপনি জানালার পাশের সিটে বসতে চাইবেন না। তাই আপনার পছন্দের সিটটি আগে থেকেই বুকিং দিয়ে রাখুন।

১০. সবার শেষে যারা মালপত্র চেকইন করেন তারাই সাধারণত আগে আগে মালপত্র পায়।

বলা হয় যে সবার শেষে যে লাগেজ চেকিন করে তারাই সাধারণত আগে আগে লাগেজ পায়; Image Source: brightside.com

ফ্লাইট থেকে নামার পর আপনার অনেকটা সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হতে পারে মালপত্রের জন্য। একটি বিমানে সাধারণত ১০০-৩০০ পর্যন্ত যাত্রী থাকতে পারে। এতগুলো যাত্রীর ব্যাগ আসতে সময় লাগা স্বাভাবিক। বিমানবন্দরের কর্মচারীদের মতে, যারা সাধারণত সবার শেষে চেকইন করে তারাই শুরুর দিকে মালপত্রে পেয়ে থাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *