এন্ড্রয়েড রম এর খুঁটিনাটিঃ (পর্বঃ ১)

আমরা বর্তমান তরুণ সমাজের বেরভাগ অংশই স্মার্ট ফোন ব্যবহার করে থাকি। আর এই স্মার্ট ফোন মার্কেটের একটি বড় আংশ জুড়ে রয়েছে এন্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম। সংক্ষেপে এভাবেও বলা যায় যে, এন্ড্রয়েড এর নাম শোনেনি এরকম মানুষ পাওয়া বর্তমানে দুষ্কর। কিন্ত কথা হলো যে এই এন্ড্রয়েড সম্পরকে আমরা কতটুকু জানি?

এন্ড্রয়েড বলতেই আমাদের চোখের সামনে ফুটে ওঠে গুগল এর চিরপরিচিত হোম স্ক্রীন এর কথা। কিন্ত আমাদের অনেকেরই একথা অজানা যে, গুগল এন্ড্রয়েড এর মুল মালিক ঠিকই তবে একে ডেভেলপ করার জন্য আরো অনেক প্রতিষ্ঠান প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। এসকল প্রতিষ্ঠান মুলত এন্ড্রয়েডের কার্নেল ব্যবহার করে থাকে।

রম (ROM):
রম কথাটির সাথে আমরা কেউ পরিচিত আবার অনেকে অপরিচিত। শব্দটি পূর্বে শুনে না থাকলেও সমস্যা নেই। এক কথায় বলতে গেলে এন্ড্রয়েড মোবাইল এর অপারেটিং সিস্টেম কেই মূলত রম বলা হয়।

প্রকারভেদঃ
রম কে মূলত দুই ভাগে ভাগ করা হয়ঃ

১। স্টক রম (STOCK ROM);
২। কাস্টম রম (CUSTOM ROM)

 

স্টক রমঃ
প্রতিটা এন্ড্রয়েড মোবাইল নির্মাতা কোম্পানি সমূহ তাদের ডিভাইস এ তেমন কোনও পরিবর্তন ব্যতীত শুধুমাত্র ডিভাইস এর জন্য উপযোগী করে রম প্রদান করে থাকে। অর্থাৎ, আমাদের এন্ড্রয়েড ডিভাইস সমূহে প্রথম অবস্থায় যে রম বা ওএস ইন্সটল করা থাকে তাই স্টক রম।

কাস্টম রমঃ
কাস্টম রম শব্দটির সাথে আমরা বেশির ভাগ মানুষই অপরিচিত। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এডভান্স ইউজার বা এন্ড্রয়েড ডেভলপার রাই এই শব্দটি ব্যবহার করে থাকেন। অনেকসময় আমরা দেখি যে উইন্ডোজের স্পেশাল কাস্টমাইজ করা কিছু অপারেটিং সিস্টেম পাওয়া যায়। যেমনঃ গেমার এডিশন, ফায়ার এডিশন প্রভৃতি। এগুলোতে ভিজুয়াল গত ভাবেও কিছু পরিবর্তন আনা হয়। কাস্টম রম এর বেলায়ও ঠিক একই ঘটনা ঘটে।

আমরা জানি যে এন্ড্রয়েড একটি ওপেন সোর্স প্রোজেক্ট। তাই যে কেও এর উন্নয়ন বা ডেভেলপ এ অংশ নিতে পারে। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান আছে যারা গুগলের পাশাপাশি এন্ড্রয়েড এর উন্নয়নে অবিরত কাজ করে যাচ্ছে।

কাস্টম রম এর কিছু প্রতিষ্ঠান ও টিম এর তালিকাঃ

  1. Cyanogenmod
  2. Lewa
  3. Miui
  4. Colour OS
  5. Slim OS
  6. Paranoid android

এছাড়াও অফিসিয়ালি বা আন-অফিসিয়ালি অনেক কাস্টম রম রয়েছে।

কাস্টম রম কেন ব্যবহার করবেনঃ
আমরা সবসময়ই নতুন কিছু খুজি। একটা এন্ড্রয়েড স্মার্টফোন এর ইন্টারফেস অনেকদিন ব্যবহার করতে করতে অনেকসময় একঘেয়েমি লেগে যায়। যা থেকে আমাদের বিরক্তির সৃষ্টি হয়। এজন্য আমরা অনেক সময় বিভিন্ন লাঞ্চার বা আইকন ব্যবহার করে থাকি। অনেকটা দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর মত। কিন্ত এতে আপনার সেটের পারফর্মেন্স এ খারাপ প্রভাব পড়ে। কিন্ত কাস্টম রম বলতে গেলে অনেকটা নতুন ওএস এর মতই বলা যায়। এটা আপনার সেটকে আপনার ইচ্ছামত সাজানোর সুযোগ দেয়।

কাস্টম রম এর সুবিধা সমূহঃ

  • অন্যরকম এক নতুন অভিগ্যতা দেয়।
  • সেটের পারফর্মেন্স বৃদ্ধি পায়।
  • অনেকক্ষেত্রে নতুন কিছু সুবিধা পাওয়া যায়।

 

কাস্টম রম এর অসুবিধা সমূহঃ

  • ঠিক ভাবে রম সেটআপ করতে না পারলে ডিভাইস ব্রিক হয়ে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
  • সেট এর ওয়ারেন্টি নষ্ট হয়।
  • কোনো কোনো ক্ষেত্রে কিছু ফাংশন কাজ নাও করতে পারে অর্থাৎ, রম এ বাগ থাকতে পারে।

এই অসুবিধা দেখে খুব বেশি ভয় পাওয়ার দরকার নেই। কারন আপনি যদি কাস্টম রম ইউজ করেন তবে এর মর্ম বুঝতে পারবেন। শুধু দরকার হবে একটু ধৈর্য আর একটু সাহস এর।

আজ এ পর্যন্তই। আগামী পোস্ট এ কাস্টম রম সম্পর্কে আরো ডিটেইলস আলোচনা করব। আপনার যদি এবিষয়ে কোনো প্রশ্ন থেকে থাকে তবে নিচে কমেন্ট বক্স এ করতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *