নেতৃত্বের বিভিন্ন রহস্যভেদঃ আসলেই কি দরকার?

Leadership Concept

জীবন বাঁচাতে অক্সিজেন যতটা কার্যকরী, ঠিক তেমনটাই কাজ করে একটি পরতিষ্ঠানের নেতৃত্ব। ঠিক একারণেই ৯০ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের সিইও’রা নেতৃত্ব বিকাশে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করার কথা ভাবছেন। নেতৃত্বকেই তাঁরা একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান মানব বিনিয়োগ হিসেবে দেখেন। এর আগে McKinsey এর এক গবেষণায় দেখা গেছে যে ভালো নেতৃত্ব এমন একটি জটিল বিষয় যা শেয়ারহোল্ডার রিটার্নে বড় ভূমিকা পালন করে।

তবে এই ব্যাপারে একটি বিষয় এখনো পর্যন্ত অমীমাংসিত যে কোন ধরণের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠানের সবাইকে অনুপ্রানিত করবে। এটি এমন আপেক্ষিক বিষয় যে এর কোন নির্দিষ্ট সংজ্ঞা বা সঠিক পথ ধরা বেশ জটিল। এ নিয়ে নানা রকমের প্রশ্নও জাগে মনে।

সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা যায় যে, নেতৃত্বের বেশ কিছু শাখা প্রশাখা রয়েছে যার উপর ভিত্তি করে সাফল্য নির্শারন করা যায়। এছাড়াও নিজেদের ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা, প্রাতিষ্ঠানিক অভিজ্ঞতাও গুরুত্বপুর্ণ। ৮১টি বিভিন্ন রকমের প্রতিষ্ঠান থেকে ১৮৯০০০ জনকে নিয়ে এক গবেষণার ফলাফলেদেখা গেছে যে বিভিন্ন রকমের নেতৃত্ব বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে প্রতিষ্ঠানে কাজে লাগে।

এতে দেখা যায়, কোন প্রতিষ্ঠানে অধিক গুনমানসম্পন্ন নেতাদের মধ্যে সাধারণত ২০ রকমের ব্যবহার দেখা যায় যাকে চারটি প্রধান ভাগে বিভক্ত করা যায়। McKinsey এর ওই গবেষণার মতে, এসব গুণের উপর ভিত্তি করেই ৮৯ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব বিষয়ক সাফল্য বা ব্যররথতা নির্ভর করে।

  • কার্যকর সমাধান করাঃ

কোন নির্দিষ্ট বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষণের পর তা থেকে সঠিক সিদ্বান্ত নিতে হলে অবশ্যই কার্যকর সমাধান প্রয়োজনীয়।একেবার সম্পূর্ণ সঠিক হয়াটা হয়তো সবসময় হয়ে উঠেনা। তবে নিজের দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার মাধ্যমে সঠিক সিদ্বান্ত নেওয়াটা খুব গুরুত্বপুর্ন। তা কোন বড় বিষয়েই হোক, কিংবা সাধারণ প্রতিদিনের বিষয়েই হোক।

  • কাজের ফলাফল সম্পর্কে ধারণা এবং তা নিয়ে কাজ করাঃ

শুধুমাত্র একটি লক্ষ্য স্থির করা এবং তা নিয়ে কাজ করাই নেতৃত্ব নয়। বরংকাজের ফলাফল কি হতে পারে,কেমন হতে পারে, কোন দিকে বেশি ঝোঁক দেওয়া উচিৎ তা নিয়েই ভাবতে হবে। এই ভাবনার উপর ভিত্তি করেই কোন দিকটিতে বেশি মন দেওয়া প্রয়োজন এবং কিভাবে সবচেয়ে মূল্যবান কাজটি বের করা যাবে তাতে জোর দিতে হবে।

  • বিভিন্নদিক ভেবে কাজ করাঃ

এই বৈশিষ্ট্য প্রত্যেক নেতা এবং ব্যবস্থাপকের মধ্যেই থাকা প্রয়োজন। বিভিন্ন ট্রেন্ড সম্পর্কে ধারণা রাখা, পরিবেশের বিভিন্ন পরিবর্তনগুল সম্পর্কে ধারণা রাখা, কর্মীদের নিজেদের ভাবনা শেয়ার করা এমন সব বিষয়গুলো অনেক গুরুত্বপুর্ণ। একজন ভালো নেতা অবশ্যই সবদিক বিবেচনা করে সিদ্বান্ত নেবেন। একটু চুলচেরা বিশ্লেষনই এতে সবচেয়ে ভালো ফলাফল দিতে পারে।

  • অন্যদের সহযোগীতাঃ

যেসব নেতারা কাজের ব্যাপারে সহযোগী,অন্যেরা কি ভাবচেম কি মনে করছে এসব চিন্তা করে কাজ করেন তাঁরাই ভালো নেতা হতে পারেন। পারস্পরিক সহযোগীতা এবং কৌতুহল দেখানোর ফলে কর্মীরাও ভালোভাবে কাজ করতে উৎসাহ পেয়ে থাকেন। কাজের দক্ষতা অগতি বাড়াতে অনেক নেতা দলগত কাজকেও প্রাধান্য দিয়ে থাকেন।

মোদ্দাকথা, আগের সময়কার কোন ধরণের নেতৃত্ব প্রয়োজন, বা কোন ধরণের গুনাবলী প্রয়োজন সেগুলো যে গুরুত্বপূর্ণ নয় তা নয়। অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে যে, ভিন্ন ভিন্ন ব্যবসায়ের অবস্থায় ভিন্ন নেতৃত্বের প্রয়োজন হয়।তবু এসব গবেষণায় সব ধরণের প্রতিষ্ঠানের উপর ভিত্তি করে নেতৃত্ব এবং এর বৈশিষ্ট্যের ব্যখা দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *