305611_10151335657798408_193836567_n

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব

পেশাঃ প্রকৌশলী, টেকনিক্যাল আর্কিটেক্ট, ভোডাফোন, নেদারল্যান্ডস।

ইংরেজিতে শিক্ষা দিবার জন্য ইনফাস্ট্রাকচার গঠনের ভুলভাল চেষ্টা ২০০ বছরের বেশি সময় ধরে চললেও সেটা তৃণ মূল পর্জায়ে ব্যাপক সাফল্য পায়নি, স্থানীয় আচার ব্যবহার এবং সংস্কৃতি, মানুষের জীবনধারা কম্ফোর্ট জোনে রেখেই নিজের শিক্ষণ ব্যবস্থা ডেভেলপ করতে হবে। অন্য কোন কপি পেস্ট মডেল যে ফল আনছে না তা দৃশ্যমান।আধুনিক শিক্ষার উৎসস্থল ইউরোপের প্রায় প্রতিটি ছোট বড় জাতি মাতৃ ভাষায় শিক্ষা লাভ করে। আপনি অবাক হবেন মাত্র ১৫ মিলিয়ন মানুষের ডাচ জাতির ভাষার গল্প শুনে, গণিত পদার্থ রসায়ন চিকিৎসা জীববিজ্ঞান আর্কিটেকচার ব্যবসা এবং শিল্প কলার হেন কোন বিভাগ নেই যার পাঠ্য বই ডাচে রচিত, অনুদিত বা প্রকাশিত হয়নি এবং যা লোকাল ভাষায় স্কুলে পড়ান হয় না। মাত্র ৫ মিলিয়নের ছোট্ট দেশ নরওয়ের শিক্ষার সবকিছু নরওয়েজিয়ান ভাষায়।একই চিত্র জাপানেরও।কিন্তু মাধ্যমিক পর্যায় থেকে ২য় বা ৩য় ভাষা শিক্ষার অপশনাল থাকায় এই নেশনগুলোর কোনটই আন্তর্জিক ভাষা ইংরেজিতে পিছিয়ে পড়েনি।

যে ছেলে-মেয়ে স্কুলের পাশাপাশি পিতা মাতার কৃষি কাজে এবং ঘরের কাজে সহায়তা করে, তাকে আপনি বিদেশি ভাষায় বিজ্ঞান শিক্ষা দিতে বাধ্য করতে পারেন না, এটা একটা মনোগত বাঁধা দাঁড়া করিয়ে দেয়। তাঁর ব্রেইন বাংলা টু ইংরেজি এবং ইংরেজি টু বাংলা ডুয়াল কনভার্শ্নেই ব্যস্ত থাকে। দেশের সাইকোলজিস্টগণ বেশি ভালো ব্যাখ্যা দিতে পারবেন। প্রতিটি বাক্যই যদি কনভার্শন প্রসেসে আসে তাইলে ইন্নোভেশন আর ক্রিয়েটিভিট আশা করা যায় না বরং শিক্ষা ভীতি আসে।এই সমস্যা বিশ্ববিদ্যালয়েও আছে, প্রচুর বিদেশী ভাষার রেফারেন্স পড়ার চর্চা আমাদের হয়ে উঠেনি একারনেই।ফলে কন্সেপচুয়াল ডেভেলপমেন্ট বড্ড দেরিতে আসে, আমরা দেখছি আন্ডার গ্যাজুয়েশনে তেমন মানসম্পন্ন গবেষণা কাজ হয়ই না। তাই হয় আপনাকে স্ট্রং ইংরেজি শিক্ষার স্ট্রাকচার ডেভেলপ করতে হবে যা ২০০ বছরের প্রচেষ্টায়ও পুরোপুরি সফল হতে পারেনি, অন্যথায় আপনাকে বাংলা ভিত্তিক বিকল্প সহ কার্যকর সমন্বয়ের কথা ভাবতে হবে। এর বাইরে বাংলা ভাষা সমৃদ্ধ করার তাগিদ এবং দায়বদ্ধতাও রয়েছে।

এখানে দুটি বিষয়-এক,উচ্চ স্তর পর্যন্ত মাতৃভাষাকে পরিপুর্ন ভাবে সমৃদ্ধ করে বিকল্প তৈরি করা যা গবেষণা এবং আবিষ্কারকে উৎসাহিত করবে। যা শিক্ষাকে সহজ, ভীতি মূক্ত এবং কোম্ফোর্ট জোনে নিয়ে আসবে।এর সাথে দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে স্কুলে ইংরেজি শিখানোর সংঘর্ষ নেই একেবারেই যা কর্মমূখী শিক্ষার অবাশ্যকীয় উপাদান।অর্থাৎ শিক্ষাকে সহজতর, বোধগম্য এবং শিক্ষণ পদ্ধতি দ্রুত করতে মাতৃভাষার ব্যাপ্তি বিশালাকায় থাকবে, একই সাথে কর্মসংস্থানের বিকাশে বিদেশী ভাষা হিসেবে ইংরেজির সহাবস্থান থাকবে একটি কার্যকর সমন্বয়ের মাধ্যমে। ২য় বিষয় হোল- মাতৃভাষার বাইরে ২য় ভাষাতে উচ্চ শিক্ষার এন্ড টু এন্ড মডেল। বাংলাদেশের গ্রামীণ পরিবেশে এই মডেল ব্যর্থ হয়েছে গত ২০০ বছরের প্রচেষ্টার পরেও, উপরন্তু বিদেশী ভাষায় শিক্ষাদান শিক্ষার মৌলিক ডেভেলপমেন্ট নিয়ে আসে না। সুতরাং এটা টেকসই ডেভেলপমেন্ট এর কন্টেক্সট এ চূড়ান্ত সমাধান হয়ে উঠবে না।