সফলতা মানে সময়ের উপযুক্ত ব্যবহার, অর্থের নয়!

White clock with words Time for Action on its face CLIPPING PATH

গড়পড়তা মানুষের ধারণা, সাফল্য পরিমাপ করার একমাত্র পন্থা হলো অর্থ। একজন মানুষের কত টাকা আছে, সে কত উপার্জন করতে পারছে সেটিই সাফল্যের একমাত্র পরিমাপক। তবে এই পরিমাপকে সাফল্য পরিমাপ করাটা ঠিক যুক্তিযুক্ত নয়।

বিল গেটস, ইকোনোমিক টাইমস এর মতে যার নেট প্রফিট ৮৬ বিলিয়ন ডলার, যিনি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ধনী হিসেবে পরিচিত তিনিই সবচেয়ে বেশি অর্থ উপার্জন করছেন তা হয়তো সম্পুর্ণ সঠিক নয়।

ফোর্বস এর মতে, এই খেতাব যেতে পারে একজন হেজ ফান্ড ম্যানেজার, রে ডালিও’র কাছে। যিনি ১২০ বিলিয়ন সমমূল্যের সম্পদ ব্যবস্থাপনা করছেন, এবং নিজের ব্যক্তিগত অ্যায় হচ্ছে ৩ বিলিয়ন ডলার।

তবে যদি সবচেয়ে বেশি লাভ এবং সবচেয়ে বেশি উপার্জন এই দুটিকেই সাফল্যের মাপকাঠিক ধরা হয়, তবে সেটস কিংবা ডালিও কেউই শীর্ষস্থানে নেই। তার কারণ, সবচেয়ে বেশি সম্পদ থাকা কিংবা সবচেয়ে বেশি আয় করা তখনই সফলতাকে নির্দেশ করবে যখন প্রতিবছরই একজন মানুষ সফল হতে থাকবে, জিততে থাকবে। তা নাহলে, হয় প্রতিনিয়তই একজন মানুষ চেষ্টা করতে থাকবে যে কি করে এক নম্বর পজিশনের যাওয়া যায়, অথবা নিজের অর্জন নিয়ে খুশি থাকবে। এসবের উপর ভিত্তি করেই সাফল্যকে অনেকভাবে দেখা যায়, ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করা যায়।

অনেকের কাছে আবার নিজের সময়টাকে সঠিকভাবে কাজে লাগানো, ঠিকভাবে নিয়ন্ত্রন করাই এক ধরণের সাফল্য। তাঁরা এইউপায়ের তাঁদের অর্জন করে নিতে পারবে।

অনেকেই অর্থনৈতিক সুরক্ষার স্তর এখনো অর্জন করতে পারেনি। তবে তার মানে এই নয় যে ৮০ বিলিয়ন মুনাফা অর্জনের মাধ্যমেই এই স্তর উর্জিত হতে পারে। বরং যতটা পেয়ে নিজের কাছে আত্নতৃপ্তি পাওয়া যায় এবং নিজের ইচ্ছামতো কিছু করা যায় সেটিই হতে পারে সফলতা।

তবী এই অবস্থানে পৌছুতে হলেও কাজ করে, নিজেকে যোগ্য প্রমাণ করেই পৌছুতে হবে। তবেই কখনো থেমে যাবার প্রয়োজন হবেনা, কি করছেন সে বিষয়ে দ্বিধান্বিত হতে হবেনা।

একটি গুরুত্বপুর্ণ উপদেশ এক্ষেত্রে দেওয়া যেতে পারে আর তা হলোঃ পূর্বে আপনি কি কাজ করতে পছন্দ করতেন, কোনটিতে আগ্রহী ছিলেন তা খুঁজে বের করুন। নিজেকে যাচাই করুন। এতে নিজেকে কিছু প্রশ্নও করতে পারেন। প্রশ্নগুল হতে পারে এমনঃ

  • আমি কি কাজটি করতে উৎসাহী?
  • এই কাজে আমি কি সর্বোতকৃষ্ট হতে পারি?
  • আমার কাজের জন্য সঠিক ভারসম্যমতো বাজার রয়েছে?

সাধারণত মানুষ বুঝতে পারেনা কি করবে, বাংকিং, না কনসাল্টিং, নাকি নিজের কোন ব্যবসায়। এক্ষেত্রে এই বিষয়ে অভিজ্ঞদের কথা শুনুন, জেনে নিন কি করলে আপনি সর্বোচ্চ সফলতা পাবেন? অভিজ্ঞদের কাছে জেনে নিতে পারেন নিন্মোক্ত কিছু প্রশ্নোত্তর।

  • আপনার প্রতিষ্ঠানেকি এমন কর্মচারর বা কর্মকর্তা রয়েছে যারা কাজের ব্যাপারে সত্যিই আন্তরিক এবং তাঁদের কার্যকলাপ কেমন থাকে?
  • এই পেশায় কাজ করতে হলে কোন কোন বিষয় অবশ্যই থাকতে হবে যা অন্যান্য পেশা থেকে আলাদা এবং স্বতন্ত্র?
  • নিজের তৃপ্ততা কিংবা বিষন্নতার জন্য কোন ধরণের ক্ষতিপূরণের কিংবা সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা রয়েছে কি?

এমন দশ থেকে পনেরটি সাক্ষাতকারের পর আপনি সঠিক নিতে পারবেন এবং সবকিছু তখন অনেক সহজ হবে। এবং খুব ভালো হবে যদি সাক্ষাতকার থেকে প্রাপ্ত তথ্য দিয়ে আপনি প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরো বেশি এগিয়ে যেতে সহযোগীতা করেন। এইভাবে আগ্রহী এবং উতসাহী হয়ে কাজ করলে সফলতা এবং ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি আসবেই। এবং সেইসাথে উপরি হিসেবে অর্থ কিংবা মুনাফা যাই বলা হোক, সেটি তো থাকছেই। বিল গেটস কিংবা ডালিও হয়তো নিজেদের সময়টাকে এভাবেই সবচেয়ে উপযুক্ত কাজে ব্যবহার করেন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *