লক্ষ্য পূরণে যে ৪টি বিষয় খেয়াল রাখা জরুরী

স্বপ্ন দেখতে আমরা সবাই ভালোবাসি। ভাবুন তো, ছোটবেলা থেকে কত রকমের স্বপ্ন নিয়ে আমরা বড় হই! কিন্তু বাস্তবতা কত অদ্ভুত দেখুন, সময়ের সাথে সাথে স্বপ্নগুলো কথায় যেন হারিয়ে যায় অথবা ছোট হয়ে আসে। তবে একবার ভেবে দেখেছেন কি? কেন এরকম হলো বা কথায় হারিয়ে গেলো অসাধারণ সব রঙ্গিন স্বপ্নগুলো। মূলত স্বপ্ন পুরণে অথবা সফল হতে হলে জীবন ব্যবস্থাপনায় বেশকিছু পরিবর্তন আনা খুবই জরুরী। কারণ প্রতিযোগিতার এই সময়ে গোছালো জীবন ব্যবস্থাপনা ছাড়া সফল হওয়া খুবই কষ্টকর।

Photo Credit: images.google.com

এজন্যই আপনার লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য পূরণের যাত্রাটাকে সহজ করার জন্য নিচের ৪টি বৈশিষ্ট্য অনকেখানি সাহায্য করবে বলে মনে করি।

দায়িত্ববান হোন

একজন প্রকৃত মানুষ হিসাবে নিজেকে পরিচিত করার জন্য প্রত্যেকটি কাজে দায়িত্ববান হওয়া অত্যন্ত জরুরী। যেমন আপনি যদি আপনার বাবা-মায়ের প্রতি দায়িত্ববান না হন তাহলে কখনোই বাবা মায়ের ভালোবাসা কিংবা কষ্ট উপলব্ধি করতে পারবেন না। মজার বিষয় কি জানেন? ছোট এই গঠনমূলক উপলব্ধিটা জীবনের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে কাজে লাগে। সেটা হতে পারে আপনার ক্যারিয়ার বা সামাজিক যেকোনো কাজে। এজন্যই ক্যারিয়ার নির্বাচন থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি কাজে প্রথমেই আপনাকে দায়িত্ববান হতে হবে, তাহলে দেখবেন বাকি পথটুকু কষ্ট মনে হলেও সহজ হয়ে গেছে।

Photo Credit: images.google.com

শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে দায়িত্ববান হওয়া বিষয়টি খুবেই গুরুত্বপূর্ণ বিশেষ করে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট কোনো লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য থাকে না কেন জানেন কারণ তারা এখনো পরিবার, দেশ এমন কি নিজেকে নিয়েও সচেতন কিংবা দায়িত্ববান না।  এজন্যই শিক্ষার্থীদের যদি প্রশ্ন করেন, যে তোমার জীবনের লক্ষ্য কী? তাহলে, বেশির ভাগ উত্তর পাবেন এখনো ভাবা হয় নি অথবা জানি না।

যথাযথ পরিকল্পনা গ্রহন করুণ

দায়িত্ববান হওয়ার পরেই আপনার নির্দিষ্ট লক্ষ্য বা উদ্দেশ্যের জন্য লাগবে অভিনব এবং গোছালো সব পরিকল্পানা। এজন্যই কিছুকিছু মানুষ নিজেকে নিয়ে অনেক সিরিয়াস হওয়ার পরও সঠিক পরিকল্পনা না থাকার ফলে নির্ধারিত লক্ষ্যে পৌছাতে কষ্ট হয় বা পারেন না। তবে খেয়াল করলে দেখবেন বেশির ভাগ মানুষ এবং নতুন উদ্যোক্তাদের পূর্বনির্ধারিত কোনো পরিকল্পনা থাকে না যেমন তাঁরা কিভাবে সময়কে কাজে লাগাবেন বা কোন নির্দিষ্ট কাজটি কতদিনে শেষ করবেন ইত্যাদি। উদ্যোক্তাদের জন্য এরকম অগোছালো জীবন ব্যবস্থাপনা সত্যেই খুবই ভয়ংকর।

কারণ একজন সফল মানুষ হিসেবে নিজেকে পরিচিত করার জন্য আপনার প্রতিদিনের নির্দিষ্টি একটি পরিকল্পনার পাশাপাশা এর ধারাবাহিক আপডেট থাকা অত্যন্ত প্রয়োজন। এজন্য আপনার বাৎসরিক, মার্সিক এমনকি সাপ্তাহিক কিছু লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে। এছাড়াও প্রতিদিন ‍ঘুমানোর আগে অবশ্যই আপনার আগ্রগতি নিয়ে ভাবতে হবে এবং পরবর্তি দিনের একটি নির্দিষ্টি লক্ষ্য ঠিক করতে হবে। এভাবে গোছালো কিছু পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে গেলে আপনার লক্ষ্য পূরণের জটিল ও কঠিন পথটুকু অনেক সহজ হবে।

Photo Credit: images.google.com

তবে ভালো জিনিস হচ্ছে বর্তমানে প্রযুক্তি আপনাকে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ টুলস বা সফটওয়্যার উপহার দিচ্ছে যা ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি উপরের গোছালো চিন্তাশক্তিগুলোকে খুব সহজে কাজে লাগতে পারবেন। আর “একমাত্র গোছালো চিন্তাশক্তিই পারে সর্বোত্তম সফলতা নিশ্চিত করতে।”

সময়কে কয়েকটি অংশে ভাগ করুন

এটা খুবই স্বাভাবিক যে আপনি যখন অবসর সময় কাটান তখন আপনার গোছালো পরিকল্পনাগুলোকে এলোমেলো করার জন্য বেশকিছু অদ্ভুত বস্তু আপনার সামনে এসে হাজির হয়। যেমন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি, বলিউড, হলিউডে প্রকাশিত নতুন সব মুভি কিংবা বন্ধুদের সাথে আড্ডা নানাভাবে আপনাকে বাধা দিতে পারে।  এজন্য আপনাকে সময় ভাগ করে নিতে হবে যেমন হতে পারে সকল সোসাল মিডিয়ায় প্রতিদিন ১ ঘন্টা, সপ্তাহে অথবা মাসে একটা মুভি। এভাবে প্রতিটি কাজের জন্য সময় ভাগ করে নিবেন।

Photo Credit: images.google.com

সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে ১ ঘন্টা গভির মনোযোগের সাথে কোনো কাজ করার পর ১৫ মিনিট বিশ্রাম তারপর আবার ১ ঘন্টা এভাবে কাজ করলে আপনার কর্মদক্ষতা বাড়বে কয়েকগুন।

সময় নষ্টকারী কাজ বর্জন করুন

একজন দায়িত্ববান সফল মানুষের জন্য সময়কে নিয়ন্ত্রন করা খুব জরুরী। আপনি যদি সময়ের যথাযথ ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন হোন তাহলে দেখবেন প্রতিদিন আপনি এমন কিছু কাজ করেন যা শুধুই আপনার সময় নষ্ট করে কিন্তু আপনাকে প্রোডাকটিভ কিছু দেয় না। আপনার বুঝার সুবিধার জন্য বলতে চাই, সময় নষ্টকরী এই তালিকায় সবার প্রথমে থাকে আপনার মুঠোফোন অথবা আপনার প্রিয় কোন বন্ধু। তাই সবসময় চেষ্টা করবেন এরকম সময় নষ্টকারী সবকিছু আপনার জীবন থেকে দূরে রাখতে। তাহলেই একজন পরিপূর্ণ সফল মানুষ হিসাবে নিজেকে দাঁড় করাতে পারবেন খুব সহজে।

Photo Credit: images.google.com

একজন মানুষ বিভিন্ন উপায়ে সফল হতে পারেন। কারণ সফল হওয়ার নির্দিষ্ট কোনো মাপকাঠি নাই। তবে এমনটা ভাববেন না আপনি যে গতিতে আছেন সেটাই বুঝি ঠিক।

একটু ব্যাখ্যা করি, ধরুন আপনি ঢাকা থেকে রংপুর যাবেন। যেমন হেঁটে কয়েকদিনেও যেতে পারেন আবার আকাশ পথে কয়েক ঘন্টার মধ্যেও যেতে পারেন এটা সম্পূর্ণ আপনার ব্যাপার। এজন্যই সফল হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট কোনো মাপকাঠি না থাকলেও নির্দিষ্ট কিছু ধারাবাহিক নিয়মকানুন আছে যা উপরের বৈশিষ্ট্যগুলোর আলোকে মানিয়ে চললে আকাশ পথের মতো আপনার গন্তব্যে তথা লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবেন খুব সহজে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *