প্রবেশনারি স্তরের সেরা ৫টি চাকরি

আপনি সদ্য স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি শেষ করে, চাকরি খোঁজ করছেন। কিন্তু পাচ্ছেন না। কারণ, অধিকাংশ চাকরিতেই নিয়োগ পেতে হলে, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয়। কিন্তু সদ্য স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করা ব্যক্তিটি অভিজ্ঞতা অর্জন করবে কীভাবে? তাকে তো কোনো চাকরিতে প্রবেশ করে, তবেই অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে। কিন্তু নিয়োগকর্তারা তো অভিজ্ঞতা ছাড়া চাকরি দেবে না, যা বিজ্ঞপ্তিতে পরিষ্কার ভাবে বলে দিয়েছে। তাহলে কি আপনার চাকরি করার মতো কোনো ফিল্ড নেই? এ প্রশ্নের উত্তর হবে, অবশ্যই আছে। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান আপনার মতো অনভিজ্ঞ ও সবেমাত্র পড়াশোনা শেষ করা ব্যক্তিকে চাকরি দেয়ার জন্য বসে আছে।

Source : Superscholar.org

আপনাকে শুধু তাদেরকে খুঁজে বের করতে হবে। তাদের সাথে সাক্ষাৎ করলেই, আপনি পেয়ে যেতে পারেন, আপনার পছন্দের চাকরি। এখন কীভাবে এসব নিয়োগকর্তাদের সাক্ষাৎ পাবেন? এজন্য আপনাকে জানতে হবে, এন্ট্রি পর্যায়ের চাকরি কোনগুলো এবং এসব পদের কাজ আছে কোন ধরনের প্রতিষ্ঠানে। ব্যাস,হয়ে গেলো! এখন আপনি আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী প্রবেশনারি পর্যায়ের চাকরিগুলোতে আবেদন করুন। চাকরি হয়ে গেলে, আপনি ক্রমশ অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন। আর যখন কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন হয়ে যাবে, তখন বিভিন্ন বড় বড় পদে চাকরি করার সুযোগ পাবেন।

Source: businessoffashion.com

এভাবে আপনি প্রবেশনারি পর্যায়ের চাকরি দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করে, একটি সফল ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে পারেন। সেরা ৫ টি প্রবেশনারি স্তরের চাকরি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এ আর্টিকেলটি পড়ুন।

১. হিসাব রক্ষক

একজন হিসাব রক্ষকের প্রধান কাজ হলো, কোনো প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক লেনদেনের হিসাব সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা এবং প্রতিষ্ঠানের মুনাফা ও ক্ষতির হিসাব রাখা। এছাড়াও প্রতিষ্ঠান কী পরিমাণ উপার্জন, উৎপাদন ও ব্যয় করে, সেগুলোরও হিসাব নিকাশ করে থাকেন একজন হিসাবরক্ষক। হিসাবরক্ষক হিসেবে ক্যারিয়ার গঠন করতে হলে, ভালো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাগত গ্রেড থাকতে হবে।বিশেষ করে গনিত ও ইংরেজিতে ভালো নম্বর পেতে হবে এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে দক্ষ হতে হবে।

Source: payscale.com

আপনার এসব দক্ষতা ও যোগ্যতা থাকলে হিসাবরক্ষক হিসেবে আপনার ক্যারিয়ার গড়ুন। একজন হিসাব রক্ষকের বার্ষিক গড় বেতন প্রায় ১৮ হাজার পাউন্ড; যা বাংলাদেশের হিসাবে প্রায় ১৯ লাখ টাকা। হিসাবরক্ষককে সাধারণত প্রতিষ্ঠানভেদে জুনিয়র হিসাবরক্ষক, হিসাব সহকারী ইত্যাদি সম্মানসূচক পরিভাষায় সম্বোধন করা হয়।

২. সহকারী শিক্ষক

একজন সহকারী শিক্ষক মূলত অন্যান্য শিক্ষকদের কাজের চাপকে হালকা করার এবং প্রয়োজনবোধে শিক্ষার্থীদেরকে অতিরিক্ত তত্বাবধান করার ও যত্ন নেওয়ার ভূমিকা পালন করে থাকে। একজন সহকারী শিক্ষককে অবশ্যই ভালো যোগাযোগের দক্ষতা ও অনুপ্রেরণাদায়ক ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন হতে হবে। সহকারী শিক্ষককে অনেক সময়ই দুষ্ট প্রকৃতির ও আত্মবিশ্বাসহীন স্টুডেন্টদের নিয়ে কাজ করার প্রয়োজন দেখা দিতে পারে। তাই একজন সহকারী শিক্ষককে প্রচুর ধৈর্যধারণ করার ক্ষমতা থাকতে হবে। একজন টিচিং অ্যাসিসট্যান্টের যতোটা না শিক্ষাগত যোগ্যতা দরকার হয়, বরং তার চেয়ে বেশি প্রয়োজন হয় শিশুদের নিয়ে কাজ করার মানসিকতা ও স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ করার অভিজ্ঞতা।

Source: ideas.ted.com

আপনার যদি এমন দক্ষতা ও যোগ্যতা থাকে বলে বিশ্বাস করেন, তবে সহকারী শিক্ষক হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করে দিতে পারেন। একজন সহকারী শিক্ষকের বার্ষিক গড় বেতন প্রায় ১২ হাজার পাউন্ড বা ১২ থেকে ১৩ লাখ টাকা।

৩. জুনিয়ার ওয়েব ডেভেলপার

জুনিয়ার ওয়েব ডেভেলপার হচ্ছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ক্ষেত্রের একটি চাকরি। একজন জুনিয়ার ওয়েব ডেভেলপার মূলত সফ্টওয়্যার ডেভেলপমেন্ট ও তৈরির কাজে সিনিয়ার ওয়েব ডেভেলপারদের সাহায্য করে থাকেন। আবার এ পদে কর্মরত ব্যক্তিরা প্রতিষ্ঠানের কাজের ধরনের উপর ভিত্তি করে, আইটি বিষয়ক বিভিন্ন টুকিটাকি কাজগুলো করতে করে থাকেন।

Source: monster. com

এ পদে চাকরি পাওয়ার জন্য আপনার তেমন কোনো পূর্ববর্তী কাজ করার অভিজ্ঞতা প্রয়োজন হবে না; শুধুমাত্র কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উচ্চতর পর্যায়ের দক্ষতা থাকলেই জুনিয়ার ওয়েব ডেভেলপার হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করতে পারেন। একজন জুনিয়ার ওয়েব ডেভেলপারের বার্ষিক বেতন গড়ে প্রায় ১৮ হাজার পাউন্ড বা ১৯ লক্ষ টাকা।

৪. ব্যবসা বিশ্লেষক

একটি প্রতিষ্ঠান কীভাবে ব্যবসা পরিচালনা ও উন্নয়ন করবে, তা নিয়ে দিকনির্দেশনা প্রদান করে থাকে একজন ব্যবসা বিশ্লেষক। এছাড়াও ব্যবসা ও প্রজেক্ট পরিচালনা করতে গিয়ে প্রতিষ্ঠান কোনো সমস্যার মুখোমুখি হলে, তার সমাধানও বের করার কাজ করে থাকে ব্যবসা বিশ্লেষকরা। এজন্য একজন ব্যবসা বিশ্লেষককে গভীর বিশ্লেষণাত্মক চিন্তা করার দক্ষতা থাকতে হয়। আপনার যদি একটি স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রির পাশাপাশি এ দক্ষতা থেকে থাকে, তবে খুবই সহজে ব্যবসা বিশ্লেষক হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে পারেন।

Source: roberthalf.com

আপনাকে প্রাথমিকভাবে জুনিয়ার কমার্শিয়াল বিশ্লেষক হিসেবে কাজ শুরু করতে হবে। এতে আপনি বেশ ভালো মানের বেতনও পাবেন। আপনার বার্ষিক গড় বেতন হবে প্রায় ২০ হাজার পাউন্ড, যা বাংলাদেশের হিসাব অনুযায়ী প্রায় ২১ লাখ টাকা।

৫. বিপণন সহকারী

একজন বিপণন সহকারীর প্রধান কাজ মূলত প্রতিষ্ঠান ও কাস্টমারদের মধ্যে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করা। উৎপাদিত পণ্যের কনটেন্ট তৈরি, ইমেইল কপিরাইটিং, জনসংযোগ রক্ষা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের হিসাব পরিচালনা ইত্যাদি কর্মকাণ্ডগুলো করার দ্বারা একজন বিপণন সহকারী কাস্টমার ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সেতুবন্ধনের সৃষ্টি করে থাকেন। আপনার একটি শিক্ষাগত ডিগ্রি ও এসব কাজ করার মতো সাহস ও দক্ষতা থেকে থাকলে কোনো প্রতিষ্ঠানে বিপণন সহকারী হিসেবে কাজ শুরু করে দিতে পারেন। একজন বিপণন সহকারীকে সাধারণ ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ ও সোশাল্যাল মিডিয়া ইন্টার্ন হিসেবে সম্বোধন ও অবিহিত করা হয়। একজন বিপণন সহকারীর বার্ষিক গড় বেতন প্রায় ১৮ হাজার পাউন্ড বা ১৯ লক্ষ টাকা।

Source: careerbuilder.com

একজন সদ্য প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাজীবন শেষ করা ব্যক্তির জন্য এ ধরনের এন্ট্রি লেভেল চাকরিগুলো বেশ মানসম্মত। তাই আপনি আপনার যোগ্যতা ও দক্ষতা অনুযায়ী, এসব চাকরির মধ্যে থেকে কোনো একটি চাকরি দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করে, সহজেই খুব দ্রুত একটি সফল ও কার্যকর ক্যারিয়ার গঠন করতে পারেন।

Featured Image:Businessinsider.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *