৮টি গুণাবলি যা পিএইচডি করার কঠিন সময়ে আপনাকে সাহায্য করবে

পিএইচডি সম্পন্ন করা একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ। এক্ষেত্রে আপনি নিঃসন্দেহে অনেক বাধার সম্মুখীন হবেন।তবে এমন কিছু গুণাবলি আছে, যা আপনার মধ্যে বিদ্যমান থাকলে আপনি যেকোনো কঠিন বাধাও অতিক্রম করতে পারবেন।আজ আমরা এমন ৮টি ব্যক্তিগত গুণাবলি সম্পর্কে আলোচনা করব, যা পিএইচডি কাজ করার সময় আপনি যে সব সমস্যার সম্মুখীন হবেন তা মোকাবেলা করতে সহায়তা করবে।

১. সৃজনশীল চিন্তাধারা

Image Source: depositphoto.com

পিএইচডির কাজ করার সময় আপনি যেসব সমস্যার সম্মুখীন হবেন, তার সৃজনশীল সমাধান খুজে বের করতে হবে। হতে পারে, আপনার তথ্য বিশ্লেষণ থেকে কোন অর্থপূর্ণ ফলাফল পাওয়া যায়নি,আপনার প্রাথমিক গবেষনা সফল হয়নি অথবা প্রয়োজনীয় কোন তথ্য খুঁজে বের করতে পারলেন না। তখন আপনাকে সাধারণ উপায় বাদ দিয়ে সৃজনশীল উপায়ে কীভাবে বিষয়গুলো সমাধান করা যায় সেদিকে নজর দিতে হবে।একজন পিএইচডি ছাত্র হিসেবে আপনার চিন্তাধারা সৃজনশীল হতে হবে।

২. উপযোগিকরণ

একজন পিএইচডি ছাত্র বলে যে আপনি সব ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ থাকবেন তা কিন্তু নয়। কিছু ক্ষেত্রে হয়ত আপনি অভিজ্ঞ আবার কিছু ক্ষেত্রে অনভিজ্ঞ। আপনাকে প্রয়োজন অনুযায়ী নতুন দক্ষতা অর্জন করতে হবে। “আমি পারব না” বা “আমার দ্বারা সম্ভব না” এসব কথা চিন্তা করার পরিবর্তে কিভাবে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য নিজেকে উপযোগী করে তুলতে পারবেন সেদিকে গুরুত্ব দিতে হবে।বর্তমানে আপনাকে দক্ষতা অর্জনের জন্য প্রচুর টাকা এবং অনেক সময় ব্যয় করার কোন প্রয়োজন নেই। অনলাইনে বিভিন্ন ধরণের কোর্স রয়েছে যা থেকে আপনি আপনার প্রয়োজন ও পছন্দ অনু্যায়ী কোর্স করতে পারবেন। আপনি যত দক্ষতা অর্জনে মনোযোগী হবেন, তত বেশি উপকৃত হবেন।

৩.সুস্পষ্টতা

Image Source: en.wikipedia.org

আপনাকে বিভিন্ন ধরনের পরিকল্পনা মাথায় রাখতে হবে এবং সেগুলো সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা রাখতে হবে। শুধুমাত্র একটি পরিকল্পনা পদ্ধতি, একই রকম চিন্তা ধারনা নিয়ে কাজ করলে হবে না। ধরুণ আপনি যে পদ্ধতি অনুসরন করে কাজ করছেন সেটি দ্বারা সঠিক ফলাফল আসলো না, কিন্তু হয়তো আরো অনেক পদ্ধতি আছে যেগুলো ব্যবহার করে আপনি সুফল পেতে পারতেন। সুতরাং কয়েকটি পদ্ধতি সম্পর্কে আপনার ধারণা থাকতে হবে যাতে করে একটি পদ্ধতিতে ব্যর্থ হলে অরেকটি পদ্ধতি প্রয়োগ করতে পারেন।

৪. সমালোচনা সহ্য করার ক্ষমতা

Image Source: eleamingindustry.com

সমালোচনা সহ্য করা আসলেই একটি কষ্টকর ব্যাপার,বিশেষ করে যখন আপনি ক্লান্ত,চিন্তিত এবং চাপের মধ্যে থাকেন।যখন আপনি কোন কাজ করবেন, তখন আপনার আশেপাশের মানুষের কাছ থেকে সমালোচনা শোনার  প্রয়োজন আছে। হতে পারে, আপনার কাজে যেসব ঘাটতি বা কমতি রয়েছে তা আপনি এতোটা গুরুত্বসহকারে খেয়াল করছেন না। বরং তাদের সমালোচনার কারণে আপনি সমস্যাগুলোর দিকে আরো বেশি নজর দিতে পারেন। সমালোচনার পাশাপাশি হতে পারে তারা আপনাকে বিভিন্ন তথ্য দিয়ে সহায়তা করতেও পারেন। আপনার কাছে যদি সমালোচনা সহ্য করা বেশি কঠিন হয়ে পড়ে, তাহলে সমালোচককে সরাসরি উত্তর না দিয়ে ২৪ ঘণ্টা সময় নিন। তাদের সমালোচনা  এবং প্রতিক্রিয়া লিখে রাখুন। এবং ভেবে দেখুন যে, তাদের সমালোচনা কতটা বৈধ। এভাবে আপনি সমালোচনাকে আস্তে আস্তে সহজভাবে নিতে পারবেন।

৫. সাপোর্ট নেটওয়ার্ক

Image Source: everplans.com

আপনি কখনো একা পিএইচডি কাজ শেষ করতে পারবেন না। এক পর্যায়ে এসে আপনার সাহায্যের প্রয়োজন পড়বেই।।পরামর্শগত,প্রযুক্তিগত যেকোন ধরনের সাহায্যের দরকার হতে পারে। যখন একা কাজ করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে, তখন আপনার সহকর্মী,জুনিয়র,সিনিয়র ও বন্ধুদের কাছ থেকে দ্বিধাবোধ না করে সাহায্য নেয়া উচিত।

৬. অধ্যবসায় ও সংকল্প

পিএইচডি করার সময় আপনি অবশ্যই অনেক রকমের বাধার সম্মুখীন হবেন। আপানার পেপার প্রত্যাখ্যাত হতে পারে,পরীক্ষণে পরিকল্পনা মোতাবেক ফলাফল না ও আসতে পারে,প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়া কঠিন হতে পারে। তবে এরকম পরিস্থিতিতে ব্যর্থতা স্বীকার না করে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। আপনার জন্য যদি বিষয়গুলো যদি বেশি কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে, তাহলে কয়েকদিনের বিরতি নিতে পারেন। তবে একেবারে হাল ছেড়ে দেয়া উচিত নয়। আপনাকে সংকল্প করতে হবে যে, আপনি যে কাজ হাতে নিয়েছেন তা যথাযথ ভাবে সম্পূর্ণ করবেন। সমস্যাগুলো পরাস্ত করা জন্য চেষ্টা চালিয়ে যান। দেখবেন, ধীরে ধীরে আপনি সকল বাধা অতিক্রম করতে পারবেন।

৭. চাপ মোকাবেলার দক্ষতা

Image Source: colorbox.com

যারা পিএইচডি কাজ করছেন, তারা সবাই কম বেশি চাপের মধ্যে থাকেন। এটি একটি স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু আপনি যদি কাজ নিয়ে প্রতিনিয়ত চাপ অনুভব করেন, তাহলে আপনার চাপ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কিছু কৌশল অবলম্বন করা দরকার।

যেমন, কেউ চাপ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য শরীরচর্চা করে থাকেন।  কেউবা মেডিটেশন করেন, গান শোনেন, খেলাধুলা, বই পড়া বা বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে থাকেন। আপনি আপনার চাপ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য পছন্দ এবং সুবিধা অনুযায়ী যেকোনো কৌশল অবলম্বন করতে পারেন।

৮. ইতিবাচক মনোভাব

Image Source: smallbriztrends.com

ইতিবাচক মনোভাব আপনাকে প্রাণোচ্ছল রাখতে সহায়তা করবে এবং যেকোন পরিস্থিতিতে মোকাবেলা করতে সাহায্য করবে।একজন পিএইচডি ছাত্রের মানসিক শক্তি থাকাটাও গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণায় দেখা গেছে যে, ইতিবাচক মনোভাব যেকোন নেতিবাচক পরিস্থিতি মোকাবেলার চাবিকাঠি। সুতরাং যেকোন বাধা আসুক না কেন,যদি নেতিবাচকতা পরিহার করতে পারেন, তাহলেই আপনি সফল হতে পারবেন।

উপরোক্ত গুণাবলি যদি আপনি নিজের মাঝে ধারণ করতে পারেন, তাহলে আশা করি, আপনি আপনার পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের কঠিন সময়গুলো সফলতার সাথে পার হতে পারবেন।

Featured Image Source: thozhil.paramprojects.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *