দৈনন্দিন জীবনের সাধারণ কিছু রোগের অসাধারণ সমাধান!

মাথাব্যথা,ছবিসূত্রঃdhakatimes.com

স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। এই মূল নষ্ট হয় নানা রোগে, নানা সময়ে। আজ জানবো সচরাচর যেসব রোগ আমাদের খুব যন্ত্রণা দেয় তার সমাধান সম্পর্কে। তবে চলুন জেনে নেয়া যাক।

মাথা ব্যথা

শুরুতেই একটি মজার কথা দিয়ে শুরু করি। আপনার মাথা ব্যথা হচ্ছে, তো স্যারকে বললেন,” স্যার মাথায় প্রচণ্ড ব্যথা”। স্যার উত্তর দিলেন, “মাথা থাকলে ব্যথা তো হবেই”। শুনে আপনি চটে খেলেন খুব। আসলে মাথা ব্যথা এমন একটি রোগ যা প্রায়শই ভাবিয়ে তোলে আমাদের। মাইগ্রেন জনিত সমস্যা থেকে মাথা ব্যথা হয়ে থাকলে এর কোনো উপশম নেই। তবে সাধারণ কিছু পদ্ধতি আছে, যা করলে সহজেই কমতে পারে আপনার মাথা ব্যথা। তার মধ্যে অন্যতম পদ্ধতি নিচে দেয়া হল-

মাথাব্যথা,ছবিসূত্রঃdhakatimes.com

১। আদা এমন একটি মহৌষধ যাতে আছে প্রোস্টাগ্লাডিন সিনথেথিস। কুচি কুচি করে আদা চিবুলে মাথা ব্যথা অনেকটাই কমে যেতে পারে।

২। কুসুম গরম পানিতে আদা কুচি দিয়ে মধু মিশিয়ে পান করুন। এতে খুবই ভালো কাজ হবে।

৩। পিপারমিন্ট অয়েল নামে একটি তেল বাজারে বেশ চলছে। তেলটি কপালে মাখিয়ে দেখুন।

৪। মাথা ব্যথা নিরসনে হুট করেই ঔষুধ খাবেন না। কারণ এসব ঔষধ খুবই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যুক্ত। এর চাইতে কাঠবাদাম খেয়ে দেখতে পারেন। কাঠবাদামে রয়েছে স্যালিসিন যা ব্যথা কমাতে খুবই সাহায্য করে।

পা ব্যথা

সচরাচর রোগের মধ্যে পা ব্যথাটাও খুবই যন্ত্রণাদায়ক। ব্যথা থেকে বাঁচতে প্রাথমিকভাবে যা করণীয় তার মধ্যে ভিনেগার একটি। কুসুম গরম পানিতে ২-৩ চামচ ভিনেগার মিশিয়ে পা চুবিয়ে রাখলে ভালো আরাম পাওয়া যায়। ভিনেগার সম্ভব না হলে লবণ দিয়েও কাজ সেরে নেয়া সম্ভব।

কোমর ব্যথা

আমাদের অনেকেরই কোমর ব্যথা রয়েছে। তার সমাধান চলুন জেনে নেয়া যাক-

  • কোমর ভাজ করে কিংবা ঝুঁকে কিছু তুলতে যাবেন না। হাঁটুকে ভাঁজ করে তুলতে চেষ্টা করুন।
  • ঘাড়ের উপর কখনোই ভারী কিছু তুলতে যাবেন না। ভারী জিনিস হাতের পাশে রাখুন।
  • কখনোই বেশি সময় দাঁড়িয়ে থাকবেন না। যদি লম্বাপথ হাঁটতে হয়। তবে অবশ্যই উঁচু জুতা পরে হাঁটবেন না।
  • বসে কাজ করার ক্ষেত্রে টেবিল থেকে চেয়ারের দুরত্ব কম রাখুন। স্প্রিংযুক্ত চেয়ারে বসবেন না।
  • ঘুমানোর ক্ষেত্রে কখনোই উপুড় হয়ে ঘুমাবেন না। শক্ত বিছানা ব্যবহার করুন, বিছানার সর্বত্র সমান করে রাখুন। উল্লেখ্য পাতলা কম্বল বিছিয়ে ঘুমালে কোমর ব্যথা অনেকটাই কমে যায়।

তৈলাক্ত খাবার ত্যাগ করে বেশি বেশি শাকসবজি খান, দুপুরে কখনোই শুতে যাবেন না। প্রয়োজনে রাতে জলদি করে ঘুমালে ব্যথা অনেকটাই কমতে পারে।

দাঁতে ব্যথা

আরেক যন্ত্রণাদায়ক রোগ হচ্ছে দাঁতে ব্যথা। ব্যথায় অনেক সময় নিজেকে সামলে উঠতেই হিমশিম খেতে হয়। প্রাথমিক কিছু পদ্ধতি আছে যা অনুসরণ করলে অবশ্যই ব্যথা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। আবারো আদা নিয়েই শুরু করতে হয়। কেননা আদা খুবই উপকারী একটি উপাদান, যা মহৌষধের মতোই কাজ করে। যা করবেন দাতের ব্যথায়-

  • এক টুকরো আদাকে কুচিকুচি করে চিবাতে শুরু করুন। বেশি ব্যথা হলে আদার রস মুখে ধরে রাখুন খানিকটা সময়। জাদুর মতোই কমে যাবে আপনার দাঁতে ব্যথা।
  • আরেক উপকারী বন্ধুর নাম রসুন। দাঁত ব্যথা নিরসণেও রসুনের ভূমিকা মূখ্য। এক কোয়া রসুন নরম করে কেটে দাঁতের উপর লাগিয়ে রাখুন। খুব ভালো কাজ হয় এতে।
  • পেয়াজের রস বেশ উপকারী। একটি আস্ত পেয়াজের রস বাটিতে নিয়ে মুখ কুলি করে দেখতে পারেন, খুব দারুণ কাজ হয়।
  • মরিচ দিয়ে পেস্ট তৈরি করে, দাঁতে লাগিয়ে দেখুন। এতে মরিচে থাকা ঝাঁঝ আপনার ব্যথাকে অবশ করে, বেশ আরাম দিতে সক্ষম।
  • শশা কেটে দাঁতের মাড়িতে ধরে রাখুন। কিন্তু যদি ঠান্ডার সমস্যা থাকে তবে অবশ্যই এই কাজটি করবেন না। শশা খুব ভালো কাজে দেয়।
পেয়াজ, ছবিসূত্রঃমুঞ্জিগঞ্জ টাইমস
  • পুদিনা পাতা নিশ্চয়ই সবাই চিনে থাকবেন? কয়েকটা পুদিনা পাতা মুখে পুরে রাখলে দাঁতের ব্যথা অনেক সময় কমে যায়।
  • আলু বাঙ্গালির মৌলিক খাদ্য। এই আলু আবার রোগেও উপকারী। আলু কুচি কুচি করে কেটে লবণ মাখিয়ে দাঁতে ধরুন, বেশ উপকারে আসবে।
  • লেবুর এক অংশ কেটে মাড়িতে আস্তে আস্তে ঘষে দেখুন, খুব ভালো কাজ দেয়।
মধু,ছবিসূত্রঃজাগরনিয়া ডট কম

কানে ব্যথা

দীর্ঘদিন যাবত ধরে অনেকেরই কানে ব্যথার সমস্যা । একদিন কমে যায় তো অন্যদিন বাড়ে। কি করবেন কানের ব্যথায়? জেনে নিন কয়েকটি সহজ সমাধান:

  • রসুন এমন একটি উপাদান তা কানে ব্যথায় ও খুব উপকারী। রসুনে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ। যার ফলে ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন অনেকাংশেই কমিয়ে দিতে সক্ষম।
  • বাসায় অলিভ অয়েল থাকলে গরম করে ৩-৪ ফোঁটা কুসুম গরম পানি থাকতেই কানে দিন। খুব আরাম পেতে পারেন।
  • আমরা সবাই জানি পেঁয়াজ অনেকটাই অ্যান্টিসেপ্টিক। পেয়াজ ছোটো করে কেটে এর রস পরিষ্কার একটি পাত্রে নিন। অত:পর কানে ড্রপার দিয়ে এর রস ঢালুন। চমৎকার কাজ হবে।
  • একটি কড়াইয়ে লবণ দিয়ে অনেক সময় নিয়ে ভাজতে থাকুন। বাদামী বর্ণ নেবার আগ অবধি ভাজতে থাকুন। তারপর নামিয়ে, পরিষ্কার কাপড়ে পেঁচিয়ে লবণের যে ভাপটা পাওয়া যায় তা কানের সামনে ধরুন। খুব দারুণ কাজ হবে।

আপনাদের সুস্থতাই আমাদের একমাত্র কাম্য। সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *