যদি আপনার একইসাথে ইঞ্জিনিয়ারিং ও অ্যাগ্রিকালচারাল সায়েন্সের উপর যথেষ্ট আগ্রহ থেকে থাকে তাহলে আপনি একজন অ্যাগ্রিকালচার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে পারেন। একজন অ্যাগ্রিকালচার ইঞ্জিনিয়ার মূলত বিভিন্ন অ্যাগ্রিকালচারাল সিস্টেম, সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার ডেভেলপ ও মেইন্টেনেন্সে সাহায্য করে থাকেন। একজন অ্যাগ্রিকালচার ইঞ্জিনিয়ার ডেভেলপমেন্টের পাশাপাশি অ্যাগ্রিকালচার ইঞ্জিনিয়ারিং ট্রান্সপোর্টেশন, ইলেক্ট্রিক্যাল পাওয়ার, সিস্টেম সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, ডিফেন্স ম্যানিউপুলেশন এবং কমিউনিকেশন সিস্টেমের কাজ করে থাকেন।
![](https://youthcarnival.org/bn/wp-content/uploads/2019/01/72412424-pretty-chinese-woman-agriculture-engineer-in-golden-cereal-field-1024x682.jpg)
Source: pentasia.com
প্রায় প্রতিটি অ্যাগ্রিকালচার কোম্পানিতেই অ্যাগ্রিকালচার ইঞ্জিনিয়ারের প্রয়োজন হয়ে থাকে। বড় বড় অ্যাগ্রিকালচারাল কোম্পানিতে দক্ষ ও ক্রিয়েটিভ অ্যাগ্রিকালচার ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়োগ দেয়া হয়। চলুন তাহলে দেখে আসি, কীভাবে একজন অ্যাগ্রিকালচার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়া সম্ভব।
![](https://youthcarnival.org/bn/wp-content/uploads/2019/01/agricultural-engineer-in-the-field-4_n0jhf-gkg__F0012-1024x576.png)
Source: gadgetsnow.com
একজন অ্যাগ্রিকালচার ইঞ্জিনিয়ার কী কী কাজ করে থাকেন?
অ্যাগ্রিকালচারাল কোম্পানিভেদে একজন অ্যাগ্রিকালচার ইঞ্জিনিয়ারের কাজ ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। যদিও বেশিরভাগ অরগানাইজেশন বা কোম্পানিতে, একজন অ্যাগ্রিকালচার ইঞ্জিনিয়ারকে যেসব কাজ করতে হয়, সেগুলো দেখে নিন।
১. অ্যাগ্রিকালচারাল সিস্টেম ও সফটওয়্যারের ইনফরমেশন ডেভেলপ করা।
২. অ্যাগ্রিকালচারাল ইনফরমেশন প্রটেকশন স্ট্র্যাটেজি অনুসারে কাজ করা।
৩. অ্যাগ্রিকালচার সফটওয়্যার ও এর রিস্ক ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রাম নিয়ে কাজ করা।
৪. অ্যাগ্রিকালচারের সাথে সংযুক্ত অপারেটিং সিস্টেমগুলোকে টেস্ট করে দেখা।
৫. অ্যাগ্রিকালচার সফটওয়্যার ও সিস্টেমের বাগ সম্পর্কে ডেভেলপারদের জানানো।
৬. বিভিন্ন ধরণের অ্যাগ্রিকালচার ইক্যুইপমেন্ট ও হার্ডওয়্যার ডিজাইন ও ডেভেলপ করা।
৭. সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার ও সিস্টেমের ইমপ্লিমেন্টেশন স্পিড, পারফর্ম্যান্স ও ফাংশনালিটি বৃদ্ধি করা।
৮. সিস্টেমের মধ্যে আপগ্রেডেড সফটওয়্যার ইন্সটল করা ও এর ফাংশনালিটি টেস্ট করা।
৯. বিভিন্ন ডিভাইসের জন্য সিস্টেম ট্রাবলশ্যুট করা ও কম্প্যাটিবিলিটি টেস্ট করা।
১০. বিভিন্ন এনভায়রনমেন্টাল ফ্যাক্টর নিয়ে কাজ করা।
১১. বিভিন্ন অ্যাগ্রিকচারাল সিস্টেম ও সফটওয়্যার অ্যাসেট তৈরি করা।
১২. বিভিন্ন অ্যাগ্রিকালচার সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যারের দক্ষতা ও সেইফটি নিয়ে কাজ করা।
১৩. অ্যাগ্রিকালচারাল পণ্যের ফরেনসিক অ্যানালাইসিস করা।
১৪. ওভারসি কন্সট্রাকশন ও প্রোডাকশন অপারেশন নিয়ে কাজ করা।
১৫. ক্লায়েন্ট, কনট্রাকটর, কন্সালটেন্ট এবং ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে একত্রে টেকনিক্যাল এক্সপ্লোয়েশনে কাজ করা।
১৬. গ্রাম্য বিদ্যুৎ ডিস্ট্রিবিউশন ও প্ল্যানিং করা।
১৭. বিভিন্ন ধরণের শস্য সংরক্ষণের জন্য স্ট্রাকচার ও স্টোর ডিজাইন ও ডেভেলপ করা।
১৮. পানির গুনগতমান, দূষণ হ্রাস ও নদীর স্রোত নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কাজ করা।
১৯. পশুপাখির স্বাস্থ্য ও প্রজনন ক্ষমতার দিকে খেয়াল রাখা।
২০. প্রাকৃতিক ও ভূমি রিক্লেইমেশন প্রজেক্টের দিকে খেয়াল রাখা।
![](https://youthcarnival.org/bn/wp-content/uploads/2019/01/agricultural-engineer-confidence_ng_umjwte__F0010-1024x576.png)
Source: programming.com.au
একজন অ্যাগ্রিকালচার ইঞ্জিনিয়ারের ক্যারিয়ার কেমন হতে পারে?
একজন অ্যাগ্রিকালচার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার পূর্বে আপনি, কনট্রাকটর, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, হার্ডওয়্যার ডেভেলপার, কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার অথবা সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের চাকরি দ্বারা ক্যারিয়ার শুরু করতে পারেন। উপরোক্ত পদগুলো থেকে অভিজ্ঞতা অর্জন করে অ্যাগ্রিকালচার ইঞ্জিনিয়ার, ফুড সায়েন্স ম্যানেজার অথবা সিস্টেমস ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে পারবেন।
![](https://youthcarnival.org/bn/wp-content/uploads/2019/01/farmer-880567_1280-1160x650-1024x574.jpg)
Source: mybroadband.co.za
একজন সিনিয়র লেভেলের অ্যাগ্রিকালচার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার পূর্বে আপনার অভিজ্ঞতার ঝুলিতে, হার্ডওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং, সিস্টেমস অ্যাপ্লিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার আর্কিটেকচার, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের মতো কিছু পেশার দক্ষতা ও যোগ্যতা থাকলে, অ্যাগ্রিকালচার ইঞ্জিনিয়ার হওয়াটা অনেক সহজ হয়ে যাবে আপনার জন্য।
![](https://youthcarnival.org/bn/wp-content/uploads/2019/01/agri-eng.jpg)
Source: youtube.com
একজন অ্যাগ্রিকালচার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে, আপনাকে যে সকল বিষয়ে পারদর্শী হতে হবে তা হচ্ছে,
১. টেকনিক্যাল ও নন-টেকনিক্যাল বিষয় সম্পর্কে অভিজ্ঞ হতে হবে।
২. ডেটা অ্যানালাইসিসের উপর দক্ষতা থাকতে হবে।
৩. এক্সটার্নাল স্টেকহোল্ডারদের জন্য রিপোর্ট ও পেপারওয়ার্ক তৈরি সম্পর্কে অভিজ্ঞ হতে হবে।
৪. মাইক্রোসফট অফিসসহ অন্যান্য অফিস অ্যাপ্লিকেশনের উপর যথেষ্ট অভিজ্ঞ হতে হবে।
৫. বিভিন্ন ধরণের সফটওয়্যার ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ্লিকেশন ও হার্ডওয়্যারের উপর দক্ষ হতে হবে।
৬. ড্রাফটিং ও কন্সট্রাকশন ইমপ্লিমেন্টেশনের উপর দক্ষ হতে হবে।
৭. প্ল্যান ম্যানেজমেন্ট ও প্রজেক্ট প্ল্যানিং সম্পর্কে জানতে হবে।
৮. অ্যাডমিনিস্টেরিং ও বাজেট ম্যানেজমেন্টের উপর দক্ষ হতে হবে।
৯. লং টার্ম সেইফটি অ্যানালাইসিস করার দক্ষতা থাকতে হবে।
১০. ক্লায়েন্ট ম্যানেজমেন্ট, স্টেকহোল্ডার ও সরকারি কোম্পানিগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করার দক্ষতা থাকতে হবে।
১১. বিভিন্ন কেইস স্টাডি সংগ্রহ করে সেগুলো নিয়ে রিসার্চ করার দক্ষতা থাকা লাগবে।
১২. বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ে কন্সট্রাকশন প্ল্যানিং ও সুপারভাইজ করার দক্ষতা থাকতে হবে।
![](https://youthcarnival.org/bn/wp-content/uploads/2019/01/Emphasis_Soil_Water_Resources.jpg)
Source: engineering.unl.edu
একজন অ্যাগ্রিকালচার ইঞ্জিনিয়ারের কী ধরনের শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে?
একজন অ্যাগ্রিকালচার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করার পূর্বে এ বি ই টি (অ্যাক্রিডিটেড ইঞ্জিনিয়ারিং প্রোগ্রাম), কম্পিউটার সায়েন্স, এফ ই (ফান্ডামেন্টালস অফ ইঞ্জিনিয়ারিং), সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার ডেভেলপমেন্ট অথবা পি ইর (প্রফেশনাল ইঞ্জিনিয়ারিং) উপর ডিগ্রি অর্জন করা যায়। তারপর জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম, ল্যান্ড প্ল্যানিং অথবা অ্যাগ্রিকালচার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের উপর কোর্স করলেই একজন প্রফেশনাল অ্যাগ্রিকালচার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়া যায়।
![](https://youthcarnival.org/bn/wp-content/uploads/2019/01/petroleum-engineering-college.jpg)
Source: collegedekho.co
একজন অ্যাগ্রিকালচার ইঞ্জিনিয়ারের বেতন কেমন হতে পারে?
যদি আপনি একজন অ্যাগ্রিকালচার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চান, তাহলে আপনার বাৎসরিক বেতন এন্ট্রি লেভেল ও সিনিয়র লেভেলে ভিন্ন ভিন্ন হবে। এন্ট্রি লেভেলের একজন অ্যাগ্রিকালচার ইঞ্জিনিয়ারের বাৎসরিক বেতন হয় সর্বনিম্ন ২০ লক্ষ টাকা থেকে ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। সিনিয়র লেভেলের একজন অ্যাগ্রিকালচার ইঞ্জিনিয়ারের বাৎসরিক বেতন হয় সর্বনিম্ন ৫০ লক্ষ টাকা থেকে থেকে ৮০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত।
![](https://youthcarnival.org/bn/wp-content/uploads/2019/01/fcbb08a3-9926-e158-1ad2-251d4da119d8_1000.jpg)
Source: pinterest.com
২০১২ সালের একটি পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে, অ্যাগ্রিকালচার ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য প্রায় ২৬০০ চাকরি সহজলভ্য। তাদের মাঝে আর্কিটেকচারাল ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ১৭ শতাংশ, সরকারি চাকরিতে ১৬ শতাংশ, ফুড ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে ১৪ শতাংশ, অ্যাগ্রিকালচার ও মাইনিংয়ে ১৩ শতাংশ এবং শিক্ষামূলক সার্ভিসে ৬ শতাংশ চাকরি রয়েছে। একজন অ্যাগ্রিকালচার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়াটা আপনার জন্য অনেক সহজ হয়ে যাবে, যদি আপনি কৃষি, ন্যাচারাল সায়েন্স, ম্যানেজমেন্ট, আইটি অথবা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের উপর বেশ কিছু সার্টিফিকেট অর্জন করতে পারেন।
Featured Image: theverge.com