বর্তমান সময়কার জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়ার মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে ইন্সটাগ্রাম। ছবি শেয়ারিংয়ের সামাজিক মাধ্যমের এই প্লাটফর্মটি ব্যবহার করছেন প্রায় ১ বিলিয়ন মানুষ। যার কারণে বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য অথবা সেবার ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য ফেসবুকের পাশাপাশি ইন্সটাগ্রামকেও ব্যবহার করছে। আর এজন্য তারা বেছে নিচ্ছেন জনপ্রিয় একাউন্ট ব্যবহারকারীদের।

Source: Stack Overflow Blog

বর্তমানে ইন্সটাগ্রাম মার্কেটিং করে প্রতি ঘণ্টায় ১৫ থেকে ২৫ ডলার পর্যন্ত আয় করা সম্ভব। তবে এই মার্কেটিংয়ে নিজের অবস্থান তৈরি করা সহজ কাজ নয়। নিম্নের ১৫টি টিপস মেনে চললে আপনি যেমন নিজের ব্র্যান্ডিং করতে পারবেন, তেমনি ক্লায়েন্ট সংগ্রহ করা আপনার জন্য সহজ হয়ে উঠবে।

১. নিজেকে ব্র্যান্ড হিসাবে উপস্থাপন করুন

আপনি যদি বিভিন্ন ধরনের ছবি দিয়ে আপনার একাউন্টটিকে জনপ্রিয় করার কথা ভেবে থাকেন তাহলে সেটা হবে ভুল। আপনার একাউন্টে হরেক রকমের ছবি শেয়ার না করে, নির্দিষ্ট কয়েকটি বিষয়ের উপর গুরুত্ব প্রদান করুন। যেমন আপনি যদি শেফ হয়ে থাকেন, তাহলে নিজের রান্না করা খাবারের ছবি শেয়ার করতে পারেন। সরাসরি কোন প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ডিং করার আগে  নিজেকে ব্র্যান্ড হিসেবে উপস্থাপন করুন।

২. আগে নিজে ফলোয়ার হন

আপনি যেসব অর্গানাইজেশনের সাথে কাজ করতে আগ্রহী, তাদের ফলো করুন। তাদের সাথে সম্পৃক্ত থাকার ফলে আপনি যেমন তাদের কাজের আপডেট পাবেন, তেমনি নিজের কাজের অগ্রগতি ঘটাতে পারবেন। তাই নিজের ফলোয়ার বাড়ানোর আগে অন্যের ফলোয়ার হন।

৩. হ্যাশট্যাগ

দ্রুত সবার কাছে ছবিটি পৌঁছে দেওয়ার সবচেয়ে সেরা পদ্ধতি হচ্ছে হ্যাশট্যাগ। আপনি যখন কোন ছবি শেয়ার করবেন, তখন প্রয়োজনীয় হ্যাশট্যাগ যুক্ত করুন। এর ফলে কোন অর্গানাইজেশন যখন সেই হ্যাশট্যাগে কিছু খুঁজবে, তখন আপনার পণ্য বা সেবাটি দেখবে।

Source: Medium

৪. ট্যাগ

নিজেকে প্রমোট করার অন্যতম একটি উপায় হচ্ছে ট্যাগিং। আপনি যখন কোন ছবি শেয়ার করবেন, তখন ছবির বিষয়বস্তুর সাথে সম্পর্কিত জনপ্রিয় ইন্সটাগ্রাম একাউন্টগুলোকে ট্যাগ করুন। আপনি যখন জনপ্রিয় একাউন্টগুলোকে ট্যাগ করবেন, তখন আপনার ছবিটি অধিক মানুষের কাছে পৌঁছাবে।

৫. কোম্পানির সাথে কানেকশন তৈরি করুন

ধরা যাক, হ্যাশট্যাগ আর ট্যাগের মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছেন। কিন্তু এভাবে আপনার পরিচিতি বাড়বে না। তাই তাদের বিভিন্ন কার্যক্রম, যেমন, কোন জিজ্ঞাসা অথবা কোন সমস্যা সমাধান সংক্রান্ত পোস্ট ও বিভিন্ন কনটেস্টে অংশগ্রহণ করুন।

Source: Medium

৬. মন্তব্য প্রদান

কোন অর্গানাইজেশনের সাথে সংযোগ বাড়ানোর সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে কমেন্ট করা। তাই নিজের ব্র্যান্ডের সাথে সম্পর্কিত কোনো পোস্ট দেখলে সেখানে কমেন্ট করুন।

৭. নিজের প্রতিষ্ঠান এবং কর্মীদের দেখানো

আপনি যদি নিজের প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ডিং করতে ইন্সটাগ্রাম ব্যবহার করে থাকেন, সেক্ষেত্রে আপনার প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত ভিডিও ও ছবি শেয়ার করুন।

Source: Stack Overflow Blog

যেমন, আপনার প্রতিষ্ঠান যদি ফ্যাশন ডিজাইন সম্পর্কিত হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে আপনাদের ডিজাইন ও কাজের ধারা সম্পর্কে ছবি অথবা ভিডিও পোস্ট করতে পারেন।

৮. লোকেশন

ইন্সটাগ্রাম ভৌগলিক অবস্থান ভিত্তিতে ছবি সার্চ করার ব্যবস্থা রেখেছে। তাই আপনি যখন কোন ছবি শেয়ার করবেন, তখন তার অবস্থান যুক্ত করুন। এছাড়া চাকরি খোঁজার জন্য লোকেশন ভিত্তিক সার্চ অপশনটি ব্যবহার করতে পারেন।

৯. অ্যাকটিভিটি

 আন্তর্জাতিক অথবা লোকাল জব মার্কেটিং, যে উদ্দেশ্যেই একাউন্ট খুলুন না কেন, ছবি ও ভিডিও শেয়ারিংয়ের পাশাপাশি নিজের অ্যাকটিভিটি বাড়াতে হবে। আপনি যদি ইন্সটাগ্রামে সর্বদা একটিভ থাকেন, সেক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রোগ্রাম, ইভেন্ট অথবা প্রতিযোগিতার খবরাখবর সাথে সাথে পাবেন। এভাবে আপনার মার্কেটিংও বাড়বে।

১০. একাউন্টের বায়ো সম্পূর্ণ করুন

আপনি যে ধরনের পণ্য অথবা সেবার ব্রান্ডিং করুন না কেন, সে বিষয়ে পোস্ট দেখার পূর্বে সবাই আপনার বায়ো পড়বেন।

Source: Medium

তাই ছবি শেয়ারের পূর্বে নিজের বায়ো পূরণ করুন। আর কিছুদিন পর পর প্রয়োজন অনুসারে বায়ো আপডেট করুন।

১১. প্রফেশনাল প্রোফাইল ফটো

নিজের ব্র্যান্ডিংয়ের ক্ষেত্রে প্রোফাইলের ছবি বেশ প্রভাব ফেলে। আপনি যে ধরনের প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ডিং করুন না কেন, আপনার কার্যক্রমের সাথে একাউন্টের প্রোফাইল পিকচার কতটুকু সামঞ্জস্যপূর্ণ, তা ভেবে দেখুন। ব্র্যান্ডিংয়ের সাথে সম্পর্কিত কোনো ছবি প্রোফাইলে ব্যবহার করুন। আর প্রয়োজন অনুসারী কিছুদিন পরপর তা পরিবর্তন করুন।

১২. অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ার সাথে যুক্ত করা

যেহেতু ইন্সটাগ্রাম শুধুমাত্র জব মার্কেটিংয়ের একমাত্র স্থান নয়। তাই আপনার ক্লায়েন্ট ইন্সটাগ্রামের পাশাপাশি অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমগুলোতে তাদের মার্কেটিং করতে চাইবেন।

Source: Medium

তাই সেসব স্থানে নিজের শক্তিশালী প্রচারণার জন্য ইন্সটাগ্রাম একাউন্টের পাশাপাশি ফেসবুক, টুইটার, লিংকডইন আর পিন্টারেস্টে সংযুক্ত থাকুন।

১৩. প্রতিদিন পোস্ট করা

আপনার ফলোয়ার বাড়ানো এবং তাদের ভিজিট ধরে রাখতে আপনাকে প্রতিদিন একাধিক ছবি অথবা ভিডিও পোস্ট করতে হবে। তবে ছবি এবং ভিডিও শেয়ারের পূর্বে সেগুলো আপনার ব্র্যান্ডিংয়ের সাথে সম্পর্কিত কিনা, বিষয়টি লক্ষ্য রাখুন। যেমন, আপনি যদি কফির ব্র্যান্ডিং করেন,সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র কফি সংক্রান্ত ছবি শেয়ার করবেন। কিন্তু চায়ের সাথে সম্পর্কিত এমন ছবি শেয়ার করা যাবেনা।

১৪. প্রতিযোগিতার আয়োজন

জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করা আর  ভিজিট বাড়াতে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা আয়োজন করতে পারেন। এইসব অনলাইন ভিত্তিক প্রতিযোগিতা যেমন আপনার ব্র্যান্ডিংয়ের কাজ করবে, তেমনি বিভিন্ন অর্গানাইজেশন তাদের পণ্যের প্রচারণার জন্য এসব প্রতিযোগিতার স্পন্সর হতে আগ্রহী হবে।

১৫. কমেন্টের রিপ্লাই প্রদান

Source: pinterest.com

সাধারণ ব্যবহারকারীদের মতামতের গুরুত্ব দিন। আর আপনার পোস্টের প্রতিটি মন্তব্যের রিপ্লাই দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন। পাশাপাশি কোন অর্গানাইজেশন মন্তব্য করলে তাদের চাহিদা সঠিকভাবে পূরণ করা হচ্ছে কিনা,  সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখুন।