পেশা হিসেবে ফটোগ্রাফি শুরু করার কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস

সৃজনশীল কাজ করতে কার না ভালো লাগে। কেউ কেউ এই ভালোলাগাকে প্রাধান্য দিয়ে পরিশ্রম করে যায় সফলতার পথে। এই মানুষগুলোই একদিন পৌঁছাতে সক্ষম হয় সফলতার শীর্ষে। ফটোগ্রাফিও সৃজনশীল পেশার মধ্যে অন্যতম। যদি আপনার এই পেশাতে আগ্রহ থাকে, তাহলে আপনিও বেছে নিতে পারেন এই শৈল্পিক পেশা। প্রতিভা, খ্যাতি, অর্থ  অর্জনের মধ্যদিয়ে গড়ে তুলতে পারেন এক সমৃদ্ধ জীবন।

Image source: iso.500px.com

সফলতার বিপরীতে থাকে ঝুঁকি গ্রহণ

ব্যর্থতা আমাদের জীবনের একটি অংশ মাত্র। ব্যর্থতার ভয়ে পিছিয়ে থাকলে চলবে না। এক্ষেত্রে আমাদের ভেবে দেখা উচিৎ, যদি আমি ব্যর্থ হই তাহলে কী কী সমস্যায় পড়তে পারি। এই সমস্যা থেকে কি ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব? যদি সম্ভব হয়, তবে সময় নষ্ট না করে ঝুঁকি গ্রহণ করা শ্রেয়।

Image source: blog.v-comply.com

কারণ এই ঝুঁকি গ্রহণের মাধ্যমেই পূরণ হতে পারে বহুদিনের লালিত স্বপ্ন। কিন্তু অধিকাংশ ফটোগ্রাফার জীবনের এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে ভয় পায় এবং তারা পিছিয়ে এসে মেরে ফেলে এক সৃষ্টিশীল প্রতিভাকে। আমি বলতে চাই নিজের প্রতিভার ওপর বিশ্বাস রাখুন, সৃষ্টিশীলতার দিকে নজর দিন আর ঝুঁকি গ্রহণ করুন। সফলতা আসবেই।

টাকা নয় প্রতিভা অর্জনের দিকে মনোযোগী হন

একটি ভালো ছবি একজন লেখকের মতো করে তার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করতে পারে। খুলে দিতে পারে ভাবনার দ্বার। আমরা যখন একটি ভালো ছবির দিকে তাকাই তখন কল্পনায় হারিয়ে যাই। সেই সাথে বলতে থাকি, অসাধারণ ছবি। কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছি এই হৃদয় ছোঁয়া ছবিটি কে ধারণ করেছে? কেই বা এমন প্রতিভার সমন্বয় ঘটিয়েছিল, কতোটাই বা কষ্ট করতে হয়েছে সেই ফটোগ্রাফারকে। এরকম করে কখনোই নিজেকে প্রশ্ন করি না। কিন্তু আসল ক্রেডিট কিন্তু ঐ ফটোগ্রাফারেই প্রাপ্য ছিল।

Image source: moneypebbles.com

একজন শিল্পীর প্রধান হাতিয়ার হচ্ছে তার প্রতিভা। প্রতিভার বিকাশ ঘটিয়েই শিল্পী বা ফটোগ্রাফার একটি ফ্রেমের মাঝে জমাট বদ্ধ করেন তার অসাধারণ সৃষ্টি। কোনো কিছুর প্রতি ভালোবাসা, কঠোর পরিশ্রম আর ধৈর্য এই তিন উপাদানের সমন্বয়ে তৈরি হয় প্রতিভা নামক এক অমৃত রেসিপি। কোনো একজন বলেছেন প্রতিভা মাধ্যমে আসে খ্যাতি আর খ্যাতি নিয়ে আসে টাকা”। তাই আমি বলব প্রতিভা অর্জন করুন বাকিটা এই অর্জিত প্রতিভাই পূরণ করবে। মনে রাখবেন “যাদুকরের দক্ষতা তার মন্ত্রে নয় তার হাতেই”।

সমসাময়িক বিষয় গুলোই ধারণ করুন

আজকের পৃথিবীতে ইন্টারনেটের কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই সহজ এবং দ্রুত থেকে দ্রুততর হচ্ছে। সেই সাথে বদলাচ্ছে মানুষের চাহিদা, আচার আচরণ। তাই মানুষের চাহিদার সাথে পাল্লা দিয়ে পরিবর্তন হচ্ছে ফটোগ্রাফির প্রেক্ষাপট। এজন্য প্রতিটি ফটোগ্রাফারের উচিৎ, সমসাময়িক বিষয় গুলো ধারণ করে নিজেকে এই পরিবর্তনের দৌড়ে এগিয়ে রাখা।

Image source: victorialeighphoto.com

যদিও ঐতিহ্যগত ফটোগ্রাফির মর্যাদা কম নয়, কিন্তু আমি বলতে চাই আজকের এই ডিজিটাল বিবর্তন হচ্ছে তার চেয়েও বেশি কার্যকর, বেশি দরকারি। তাই সমসাময়িক প্রেক্ষাপটগুলো ধারণ করার প্রতি মনোযোগ দিন, সেই সাথে সূক্ষ্ম প্রতিভার বিকাশ ঘটানোর চেষ্টা করুন। এরপর গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে নিজেকে আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুক্ত রাখুন। ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম সহ সকল প্রকার সোশ্যাল মিডিয়ায় যুক্ত থাকুন এবং নিজের প্রতিভাগুলো অন্যের নিকট প্রকাশ করুন। এতে করে জনপ্রিয়তা এবং টাকা আয়ের উৎস দুটোই মিলতে পারে।

নখদর্পণে রাখুন ক্যামেরার প্রতিটি অংশের ব্যবহার

প্রত্যেক শিল্পী জানেন তার প্রতিটি রং তুলির ব্যবহার। রং তুলির সাথে প্রতিভার মিশ্রণেই জমাটবদ্ধ করতে সক্ষম হন একটি অসাধারণ প্রেক্ষাপট, উপস্থাপন করতে সক্ষম হন তার শিল্পী নামক প্রতিভা। তাই প্রতিটি ফটোগ্রাফারের প্রথম কাজ হলো তার ক্যামেরার সকল অংশের সঠিক ব্যবহার জানা।

Image source: victorialeighphoto.com

কখনো কি ভেবে দেখেছেন, প্রতিটি ক্যামেরা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কেন তাদের পণ্যের ব্যবহার নির্দেশিকা বা ইউজার ম্যানুয়াল সরবরাহ করে থাকে? তারা এটি সরবরাহ করে থাকে, যেন আপনি জানতে পারেন তাদের ক্যামেরাটির সঠিক ব্যবহার। তাই সরবরাহকৃত ম্যানুয়ালটি পড়ে জেনে নিন পণ্যটির সঠিক ব্যবহার এবং ফ্রেমবন্দি করতে থাকুন অসাধারণ সব মুহূর্ত।

প্রয়োজনীয় প্রতিটি লেন্স সংগ্রহ করুন

প্রকৃতি সময়ের সাথে তার রূপ বদল করে। কখনো শীতকাল আবার কখনো গ্রীষ্মকাল। কখনো কখনো প্রকৃতি সূর্যের আলোয় চকচক করে, আবার কখনো কখনো কুয়াশার চাদরে আচ্ছন্ন থাকে। আমাদেরও প্রকৃতির এই পালা বদলের সাথে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়। তেমনি প্রয়োজন সাপেক্ষে সাথে একজন ফটোগ্রাফারকেও প্রয়োজনীয় লেন্স সহ বিভিন্ন সরঞ্জামের সমন্বয় করার দরকার হয়।

Image source: wolfcrow.com

অনেক সময় প্রয়োজনীয় লেন্সের অভাবে উপযুক্ত মানের ছবি ধারণ করা সম্ভব হয় না। ভিন্ন ভিন্ন লেন্স ব্যবহারের মাধ্যমেই একজন ফটোগ্রাফার অল্প পরিশ্রমেই ভালো মানের ছবি ধারণ করতে সক্ষম হন। যদি আপনিও ফটোগ্রাফিতে উন্নতি করতে চান তাহলে আপনাকেও ভিন্ন ভিন্ন লেন্স ব্যবহারের মাধ্যমে ছবি ধারণ করে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে।

সময় নিয়ে যত্নের সাথে প্রতিটি ছবি ধারণ করুন

বর্তমান সময়ে আধুনিক ক্যামেরা দিয়ে সহজেই অনেকটা ভালো মানের ছবি ধারণ করা সম্ভব হয়। এজন্য অনেক ফটোগ্রাফার খুব দ্রুত ছবি ধারণ করতে থাকে। এতে করে দিন দিন তাদের ছবি ধারণ করার মান কমতে থাকে। মনে রাখবেন ছবি ধারণ করা হচ্ছে একটি শিল্প।

Image source: jeffgrandyphotography.net

তাই যত্ন সহকারে সময় নিয়ে ছবি ধারণ করুন। প্রতিনিয়ত নিজের প্রতিভার বিকশিত করার চেষ্টা করুন।

ঘষামাজা নয় ভালো মানের ছবি ধারণ করতে শিখুন

কিছু কিছু প্রতিভাবান ফটোগ্রাফার রয়েছেন তাদের ধারণকৃত ছবিগুলো খুব বেশি এডিট বা ঘষামাজার প্রয়োজন হয় না। কারণ তারা জানেন ভালো মানের ছবি পেতে হলে ঠিক কতোটুকু আলোর প্রয়োজন হয়। তারা খুব সহজেই বুজতে সক্ষম হন কখন কোন এঙ্গেলে ছবিটি ধারণ করতে হবে।

Image source: iso.500px.com

বর্তমানে অনলাইনে অনেক সংস্থা রয়েছে যারা এই সকল বিষয়ে ট্রেনিং করিয়ে থাকেন। আপনিও এই সকল ট্রেনিং গ্রহণের মাধ্যমে সমস্যাগুলো দূর করতে পারেন।

Image source: victorialeighphoto.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *