পেশায় যখন ডগ ট্রেনার

ছোটবেলা থেকেই তাঁর কুকুর প্রীতি অসম্ভব।কুকুরদের হাবভাব বুঝতে অসুবিধা হয় না মোটেও।আর সেই ভাললাগার জায়গা থেকেই পেশাগতভাবে ডগ ট্রেনিং শুরু করেন শলাকা মুন্দাদা।

ডগ ট্রেনিংযের মত অন্য ধরনের পেশায় আসার প্রধান কারন কিন্তু আমার কুকুরের প্রতি ভালবাসা।আমার বিয়ে হয় একটি কুকুর পাগল পরিবারে।শ্বশুড়বাড়িতেই আলাপ হয় পোষ্য ব্রুনো আর শ্যাডোর সজ্ঞে।সেই শুরু!ওদের থেকে এত কিছু শিখেছি যে ওদের নিয়ে পেশাগতভাবে কাজ করার কথা ভেবে ফেলি।ছোটবেলায় বাড়িতে কুকুর পোষার অনুমতি ছিল না।তাই রাস্তার কুকুরদের যত্ন করতে শুরু করি।পড়াশোনা শেষ করে চাকরি করি।চাকরি ছাড়ার পর ব্রুনো হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়ে।ভেটেরিনারি ট্রিপ আরও বেড়ে যায়।একবার ভেটেরিনারি ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করি যে আমি ওঁর ক্লিনিকে ভলান্টিয়ারের কাজ করতে পারি না!আমার প্রস্তাবে উনি রাজি হয়ে গেলেন।শুরুটা করেছিলাম অফিস ম্যানেজমেন্ট দিয়ে।তবে ফার্স্ট এড থেকে কেস হিস্ট্রি লেখা,এমনকি কুকুরদের সামলানো শিখে গেলাম ধীরে ধীরে।

একদিন কেনেলে থাকার জন্য একটি খুবই অসুস্থ কুকুর এসেছিল।তখন বুজলাম ক্লিনিকে কেনেল স্পেস খুব কম।আমার সংস্থা পেট সিটারস-এর আইডিয়া তখনই মাথায় এল।২০০৮ এ শুরু করি।ছোট্ট একটি বাড়িতে ছ’টি কেনেল নিয়ে শুরু হয় পেট সিটারস।আট মাসের মাথায় এটি আকারে বড় হয়ে দ্বিগুন হয়ে যায়।পোষ্যদের মালিক আর ভেটেরিনারি ডাক্তারদের কাছ থেকে ভাল ফিডব্যাক পাচ্ছিলাম।আর পিছনে ফিরে তাকাইনি।এখন আমাদের প্রায় ৩৪ টি কেনেল,পোষ্যদের সুইমিং পুল,প্লে এরিয়া আছে।সংস্থা শুরু করার পরে পেট ট্রেনিংযে প্রথাগতশিক্ষা নিতে শুরু করি।কেনেল ম্যানেজমেন্টের প্রথম কোর্সের পরে পোষ্যদের বডি ল্যাজ্ঞোয়েজের ব্যাপারে কতকিছু জানতে পেরেছিলাম!আমার শিক্ষক শিরিন মার্চেন্ট আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছিল।এরপর ইংল্যান্ডে জন রজারসন-এর কাছে ‘ডগ ট্রেনিং অয়ান্ডারস্ট্যান্ডিং ডগ বিহেভিয়ার’-এর উপর কোর্স করি।মনে হবে কুকুর আপনার সজ্ঞে কথা বলছে।কী বলছে শুধু সেটা বুঝতে হবে!কর্পোরেট ইন্ড্যাস্ট্রির ছ’অজ্ঞের মাইনে ছেড়ে পেশাদার ডগ ট্রেনার হিসাবে কাজ করে আমি সত্যিই খুব খুশি।প্রায় ছ’বছর ধরে এই পেশায় আছি।বিভিন্ন জাতের প্রায় সাতশো কুকুর,তাদের নানারকম সমস্যা,তাদের মালিক-সবকিছু সামলেছি।আগের তুলনায় পোষ্যদের মালিকেরা এখন অনেক বেশি দায়িত্বশীল।

 

তারা বোঝেন তাদের পোষ্যদের কি কি প্রয়োজন।ডগ ট্রেনার ও ডগ বিহেভিয়ারিস্ট হিসাবে সবার আগে আমাকে বুঝতে হয় যে সমস্যাটি ট্রেনিং সম্পর্কিত নাকি আচরন সম্পর্কিত?ট্রেনার হিসাবে আমার কাজ হল কুকুরকে সমাজে গ্রহনযোগ্য করে তোলা।খুব কম বয়সে ট্রেনিং শুরু করা প্রয়োজন।কুকুরদের স্কুলিং বলা যেতে পারে ব্যাপারটিকে।লোকের উপর ঝাঁপিয়ে পড়া বা গলায় বাধা দড়িটিকে ক্রমাগত টানা ইত্যাদি কিন্তু ট্রেনিংযের অভাবে হয়।নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মেনে চললেই এ ধরনের সমস্যা কাটিয়ে উঠা সম্ভব।ট্রেনারের কাজ হল মালিককে তার পোষ্যের ব্যাপার সম্পর্কে শেখানো।কীভাবে তিনি পোষ্যের সজ্ঞে মিশবেন,ভাল আচরনের জন্যে পোষ্যকে কি দেবেন সবই মালিককে বলে দেওয়া হয়। বিহাভিয়ারিস্ট হিসাবে পোষ্যের আগ্রেশন,মালিক চলে গেলে কান্নাকাটি করা ইত্যাদি সমস্যা সমাধানে কাজ করতে হয়।আমার মনে হয় মহিলারা ভাল পেট ট্রেনার হন।

কারন একজন ট্রেনারের প্রধান শক্তিই হল ইমোশনাল রিসোর্স!

এই পেশায় আসতে হলে

# ভয়েস মডিউলেশন আর ডিসিপ্লিন এই পেশার মুলমন্ত্র।তবে ট্রেনিংযের সময় পোষ্যরা যেভাবে আপনাকে কৃতজ্ঞতা জানাদে তা এক কথায় অসাধারন।

#কেরিয়ার হিসাবে এটা এখন আর্থিক স্বচ্ছ্বলতা দেয়।তবে এটা কিন্তু পুরোদস্তর ফুলটাইম পেশা।

# পোষ্যদের ল্যাজ্ঞোয়েজ ইত্যাদির ব্যাপারে ফর্মাল ট্রেনিং থাকলে সুবিধা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *